কফিতে যে ৪টি জিনিস মেশালে কমবে ওজন
শেয়ার করুন
ফলো করুন

ওজন কমাতে কত পন্থাই তো অবলম্বন করা হচ্ছে সারা বিশ্বে। কেউ সুপার ফুড খাচ্ছেন, কেউ প্রোটিন রিচ খাবার। কেউ কেউ একেবারে শাকাহারী হয়ে গেছেন আর কেউবা করছেন কিটো ডায়েট। চিকিৎসাবিজ্ঞান বলে, একেক জনের মেটাবলিজম এবং জীনগত বৈশিষ্ট্য একেক রকম। তাই যে ডায়েট বা ওজন নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি একজনের জন্য দ্রুত কাজ করছে, আরেকজনের ক্ষেত্রে তা কাজ করছেনা। তাই পুষ্টিবিদের পরামর্শ নিয়েই ডায়েট অনুসরণ করা শ্রেয়।

বেশ আগে থেকেই ওজন হ্রাসে কফির ভূমিকা নিয়ে ব্যাপক চর্চা হচ্ছে। কফিতে এমন কিছু উপাদান রয়েছে, যা শুধু ওজন হ্রাস নয়, বরং স্বাস্থ্যের ওপরও রাখে ইতিবাচক প্রভাব। কফি মানুষের ক্লান্তি দূর করতে এবং শক্তির মাত্রা বাড়াতে সাহায্য করতে পারে। এর কারণ, কফিতে ক্যাফেইন নামক একটি উদ্দীপক রয়েছে। কফি পান করার পরে ক্যাফেইন আপনার রক্তে প্রবাহিত হয় এবং সেখান থেকে এটি মস্তিষ্কে পৌঁছে যায়।

বিজ্ঞাপন

গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে কফি মস্তিষ্কের ক্রিয়াকলাপের বিভিন্ন দিকগুলোর উন্নতি করে। স্মৃতি, মেজাজ নিয়ন্ত্রণ, সচেতন থাকা, শক্তিমত্তা , আবেগ আর সাধারণভাবে মানসিক স্থিতিশীলতার ওপর ইতিবাচক প্রভাব রাখে এই পানীয়।

১. ফ্যাট সহযোগে বুলেট কফি

কফিকে বলা হয়ে থাকে ফ্যাট কাটার বা ফ্যাট বার্নার। এর মধ্যে প্রথমেই চলে আসে বুলেট কফি বা কিটো কফির নাম। বিশ্বের বহু জায়গাতেই ক্রমাগত বাড়ছে বুলেট কফির চাহিদা।এই কফিতে মস্তিষ্কের ক্ষমতা বাড়ে। ফলে মনোযোগ দেওয়ার ক্ষমতাও বৃদ্ধি পায়। পেট ভরা থাকার অনুভূতি দেয় বলে এর সঙ্গে যোগ হয়েছে ওজন কমানোর মতো উপকারিতা।

এই কফিতে এমনসব উপকরণ রয়েছে, যা মেদ বার্ন করে দেয়। ফলে সহজে ওজন কমতে থাকে । নারকেল তেল জাতীয় সহজপাচ্য ফ্যাট এই কফিতে মেশালে তা লক্ষ্যনীয়ভাবে ওজন কমাতে সহায়তা করে। এই কফি পান করার বেশ কিছু সুবিধাও রয়েছে। অ্যাজমা, হৃদপেশী সংক্রান্ত রোগ কমাতে এমনকি ক্যান্সার নিরাময়েও এই কফি অত্যন্ত উপকারী।

দেখা গিয়েছে,মাখন, ঘি বা নারকেল তেল মিশিয়ে এই কফি খেলে পেট অনেকক্ষণ পর্যন্ত ভরা থাকে। এ ক্ষেত্রে প্রধান ভূমিকা রাখে ক্লোরোজিনিক অ্যাসিড নামের ফাইটোকেমিক্যাল। শরীরচর্চার আগে এই কফি খেলে কর্মদক্ষতা বাড়ে। বিশেষ করে যাঁরা কিটো ডায়েট বা লো কার্ব ডায়েট করেন তাঁদের জন্য বেশ উপকারী এই বুলেট কফি। চিনি ছাড়া কফি খান যারা, তাদের জন্য বুলেট কফি ভালো বিকল্প হতে পারে। এই কফির মধ্যে পর্যাপ্ত ক্যাফেইন থাকে বলে এটি দিনভর আপনাকে চাঙ্গা রাখে। ফলে এনার্জিতে ভরপুর থাকা যায়। যার ফলে পরিশ্রম ও ছোটাছুটি করতে সমস্যা হয় না দিনভর। যারা নিয়মিত সকালে জিমে যান বা সারাদিন দৌঁড়ঝাপ করেন, তাদের জন্য দিনের শুরুতে এই কফি টনিকের মওত কাজ করে। তবে ব্যায়াম না করলে নিয়মিত এই কফি পান করা ঠিক হবেনা। এছাড়া, যাদের অ্যাসিডিটির সমস্যা রয়েছে, তাদের ক্ষেত্রে এই কফি সবসময় পান করা মোটেই ঠিক নয়।

বিজ্ঞাপন

২. ডার্ক চকলেট কফি

খাঁটি ডার্ক চকলেটে বিভিন্ন ধরনের অ্যান্টি অক্সিডেন্ট আর প্রচুর পরিমাণে মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে। এই দুই পদার্থ কফির সঙ্গে মিশলে বিপাক বা মেটাবোলিজমের হার বাড়ে। এই কফি খেলে অনেকক্ষণ পেট ভরা থাকে, খিদের অনু‌ভূতি কমায়। সব মিলিয়ে ওজন কমার প্রক্রিয়া গতি পায়। সকালে এই কফি দিয়ে দিন শুরু করলে ওজন ঝরার প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত হবে।

৩. দারুচিনি কফি

দারুচিনিতে ভরপুর অ্যান্টি অক্সিডেন্ট থাকে। ক্যাফেইনের সঙ্গে সেসব অ্যান্টি অক্সিডেন্ট মিশলে ওজন কমার প্রক্রিয়া আরও দ্রুত হতে পারে ও হজমশক্তি বাড়ে।তাই রোজকার কফিতে এক চিমটি দারুচিনি গুঁড়া মিশিয়ে সকাল শুরু করে দেখতে পারেন। সুফল পাবেন নিশ্চয়ই।

৪. লেবু দিয়ে কফি

হার্ভার্ড টিএইচ চান স্কুল অফ পাবলিক হেলথ রিসার্চারদের এক গবেষণার ফলাফল বলছে, কফি মেটাবলিজম বাড়াতে কার্যকরভাবে সাহায্য করে। এটি আপনার শরীরের ক্যালরি খরচ করার ক্ষমতাও বাড়িয়ে তোলে। এদিকে দ্য জার্নাল অফ নিউট্রিশনের এক নিবন্ধ বলছে, যারা রোজ ২-৩ কাপ কফি খায় তাঁদের শরীর ও পেটের মেদ কফি থেকে দূরে থাকা মানুষের চেয়ে ২.৮ শতাংশ কম হয়। আবার, লেবুতে থাকা অ্যান্টি অক্সিডেন্ট রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।

লেবুর আরেক বড় উপকার হল এটি হজমে সাহায্য করে। লেবুতে থাকা মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট পলিফেনলস শরীরে ফ্যাট জমতে দেয় না। জাপানের এক গবেষণায় দেখা গিয়েছে, লেবু শরীরের ইনসুলিন ও গ্লুকোজের মাত্রা ঠিক রাখে আর মাত্রাতিরিক্ত স্থুলতা আটকায়। লেবুর রসে থাকে ভিটামিন সি ও সাইট্রিক অ্যাসিড, যা ক্যাফিনের সঙ্গে মিশে বিপাক হার বাড়িয়ে দেয়। এর প্রভাবে মেদও ঝরতে থাকে। ভালো ফল পেতে এক কাপ কালো কফিতে অর্ধেক লেবুর রস মিশিয়ে নিতে হবে।

তথ্যসূত্র: ভেরি ওয়েল ফিট

ছবি: পেকজেলস ডট কম

প্রকাশ: ১১ জানুয়ারি ২০২৪, ০১: ০৫
বিজ্ঞাপন