কাঠবাদামের দুধের সঙ্গে মধু
শেয়ার করুন
ফলো করুন

বাদামের স্বাদ ছাড়াও বাদামের দুধে গরুর দুধের মতো ক্রিমযুক্ত টেক্সচার রয়েছে। এ কারণে নিরামিষাশীদের ডায়েট হতে পারে এই দুধ। বিশেষ করে যাঁরা দুধের অ্যালার্জি আছে, ল্যাকটোজে অসহিষ্ণুতা আছে, দুধ খেলেই নানান সমস্যা তৈরি হয়, পেট ফুলে যায়, তাঁরা ক্যালসিয়াম–সমৃদ্ধ এই দুধ খেয়ে উপকৃত হতে পারেন। তাঁদের জন্য এই বাদাম দুধ হতে পারে সেরা পছন্দ।

বাদাম দুধের উপকার

বাদাম দুধে ভিটামিন ডি, ক্যালসিয়াম ও প্রোটিন থাকে—গরুর দুধের মতোই উপকারী। শরীর বাদামের দুধে কিছু খনিজ শোষণ করে না, যা গরুর দুধে করে। বাদামে ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে। এ ছাড়া একটি অ্যান্টিনিউট্রিয়েন্ট যা আয়রন, দস্তা এবং ম্যাগনেশিয়ামের শোষণকে হ্রাস করে।

বাদামের দুধে থাকে ৫০ শতাংশ ফ্যাট ও কম ক্যালরি। এর অর্থ হলো ওজন বাড়ানোর ভয়ে যাঁরা দুধ খেতে পারেন না, তাঁরা এটা পান করতে পারেন। এক কাপ বাদাম দুধে কেবল ৩৯ ক্যালরি থাকে, যা এক কাপ স্কিমড দুধের অর্ধেক পরিমাণে ক্যালরি থাকে।
এটি কম শর্করাযুক্ত পানীয়, এক কাপে থাকে ২ শতাংশ অর্থাৎ ৩.৩৪ গ্রাম শর্করা। সেই তুলনায় গরুর দুধে ১২ গ্রাম শর্করা থাকে। বাদামের দুধের শর্করার তুলনায় ফ্যাট ও প্রোটিন বেশি। এটি ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য উপযুক্ত পানীয়; পাশাপাশি যাঁরা কম শর্করার ডায়েট অনুসরণ করেন, যাঁদের রক্তে শর্করার মাত্রা বেশি, তাঁরা বাদাম দুধ খেতে পারেন।

যাঁরা ল্যাকটোজ–অসহিষ্ণু বা দুধে অ্যালার্জি আছে, তাঁদের জন্য এটি দুর্দান্ত বিকল্প হতে পারে। অনেকে দুধের চিনির (ল্যাকটোজ) প্রতি অসহিষ্ণু এবং হজম করতে অক্ষম। তাঁদের জন্য এই বাদাম দুধ।  দুধ মূলত অবিচ্ছিন্ন ল্যাকটোজ কোলনে চলে যায়, যেখানে বসত করা ব্যাকটিরিয়া থাকে; দুধ খেলেই তারা উত্তেজিত হয় পড়ে। সে কারণে অতিরিক্ত গ্যাস, ফোলা ভাব, ডায়রিয়া ও অস্বস্তি হতে থাকে। তাদের জন্য উপযুক্ত বাদাম দুধ।

বিজ্ঞাপন

বাদামের দুধ আপনার হাড়কে শক্তিশালী করতে পারে। কারণ, এটা ক্যালসিয়ামের সবচেয়ে ভালো উৎস। এক কাপ গরুর দুধে যে পরিমাণে ক্যালসিয়াম থাকে, যা আপনার প্রতিদিনের প্রয়োজনের প্রায় ২৩ শতাংশ পেতে পারেন, সেটা এই বাদাম দুধ থেকেও পাওয়া যায়। বাদামের দুধ হলো দুর্দান্ত ক্যালসিয়ামের উৎস, যা গরুর দুধ দিতে পারেন না। হাড় রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ক্যালসিয়াম প্রয়োজনীয়। এ কারণে পর্যাপ্ত ক্যালসিয়াম গ্রহণের পরিমাণ অস্টিওপোরোসিসের ঝুঁকি হ্রাস করে, দুর্বল হাড় এবং ফ্র্যাকচার হতে দেয় না; যার কারণে বাদাম দুধ অস্টিওপোরোসিসের ঝুঁকি হ্রাস করতে পারে।

বাদাম দুধ নিয়মিত খেলে হৃদ্‌রোগের ঝুঁকি হ্রাস করে। একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে যে ৬ সপ্তাহের জন্য প্রতিদিন ৬০ গ্রাম বাদাম দুধ খেলে শরীরের লাইপোপ্রোটিনের মাত্রা বা ‘খারাপ কোলেস্টেরল ৬ শতাংশ ও ট্রাইগ্লিসারাইড ১৪ শতাংশ হ্রাস করে। আবার উচ্চ ঘনত্বের লাইপোপ্রোটিন বা ভালো কোলেস্টেরল ৬ শতাংশ বৃদ্ধি করে।

বিজ্ঞাপন

প্রণালি

এক কাপ পানিতে ২০টি কাঠবাদাম বা আমন্ড সকালে ভিজিয়ে রাখতে হবে। সেই বাদাম বিকেলে কাপের পানি ফেলে বাদামের খোসা ছাড়িয়ে এক গ্লাস পানি দিয়ে ব্লেন্ড করতে হবে। বাদাম ব্লেন্ড করার সময় দেখা যাবে দুধের মতো রং হয়ে গেছে। এই বাদাম দুধে মধু মিশিয়ে খেতে হবে। এই দুধ নিয়মিত পান করা যেতে পারে।

প্রকাশ: ৩০ মার্চ ২০২৩, ১২: ২১
বিজ্ঞাপন