পানিশূন্যতা টের পেলে দ্রুত যা যা করতে হবে
শেয়ার করুন
ফলো করুন

এমন গরম ও আর্দ্র আবহাওয়ার অন্যতম সমস্যা ডিহাইড্রেশন বা পানিশূন্যতা। কমবেশি সবাই তো ঘেমে পানি হারাচ্ছি শরীর থেকে। কিন্তু দেহের পানিশূন্যতা আসলে কোন অবস্থাকে বলা হয়, তা জানতে হবে সঠিকভাবে। আমরা দৈনিক যতটুকু পানি গ্রহণ করি, তার চেয়ে বেশি পরিমাণ পানি যদি বেরিয়ে যায়, তখনই শরীর পানিশূন্যতার শিকার হয়। অতিরিক্ত আর্দ্রতা ও গরমে আমাদের শরীর প্রচুর ঘামে। এ কারণে শরীরের প্রয়োজনীয় পানি, খনিজ পদার্থ বা মিনারেলস ও ইলেকট্রোলাইট ঘামের মাধ্যমে বেরিয়ে যায়। এর ফলে শরীরে ডিহাইড্রেশন হয়। এর বিপৎসংকেত বুঝতে হলে খেয়াল রাখতে হবে কিছু ওয়ার্নিং সাইন বা লক্ষণের প্রতি। এই লক্ষণগুলো দেখলেই যত দ্রুত সম্ভব, যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে।

অতিরিক্ত আর্দ্রতা ও গরমে আমাদের শরীর প্রচুর ঘামে
অতিরিক্ত আর্দ্রতা ও গরমে আমাদের শরীর প্রচুর ঘামে

পানিশূন্যতার প্রধান লক্ষণগুলো

—হৃৎস্পন্দন বেড়ে যাওয়া

—তৃষ্ণার্ত অনুভব করা

—শরীর ও মুখের ভেতর শুষ্ক অনুভূত হওয়া

—প্রস্রাব কমে যাওয়া

—তীব্র মাথাব্যথা

বিজ্ঞাপন

এই লক্ষণগুলো দেখলে বা অনুভূত হলে যা করতে হবে

—তৎক্ষণাৎ প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে হবে

—ঠান্ডা কোনো স্থানে অবস্থান করতে হবে

—ঢিলেঢালা পোশাক পরিধান করতে হবে

—শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করা যেতে পারে

—প্রয়োজনমতো বিশ্রাম নিতে হবে

দিনে কমপক্ষে তিন লিটার পানি একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষের পান করা প্রয়োজন
দিনে কমপক্ষে তিন লিটার পানি একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষের পান করা প্রয়োজন

গরমে যাতে শরীর ডিহাইড্রেটেড বা পানিশূন্য না হয়ে পড়ে, সে জন্য কিছু প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা আগে থেকে নেওয়া যেতে পারে। যেমন প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে হবে। দিনে কমপক্ষে তিন লিটার পানি একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষের পান করা প্রয়োজন।

বিজ্ঞাপন

মৌসুমি ফল ও সবুজ শাকসবজি খেলে শরীরে মিনারেল ও ইলেকট্রোলাইটের ঘাটতি অনেকটাই কমানো সম্ভব।এ ক্ষেত্রে ডাব, ফলের রস, কাঁচা সবজি ও ফলের সালাদ, ডিটক্সওয়াটার অনেকটা উপকারে আসবে। তবে সচেতন থাকতে হবে ডাবের ক্ষেত্রে। অতিরিক্ত ডাব খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। তা না হলে ইলেক্ট্রোলাইটের ভারসাম্য উল্টো নষ্ট হয়ে যেতে পারে। দিনে একটি থেকে দুটি ডাব যথেষ্ট একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষের জন্য।

দিনে একটি থেকে দুটি ডাব যথেষ্ট
দিনে একটি থেকে দুটি ডাব যথেষ্ট

এই তীব্র গরমে চা ও কফি পান করা কমানো উচিত। কারণ, চা ও কফি শরীরকে ডিহাইড্রেটেড করে ও প্রস্রাব কমিয়ে দেয়। তাই যতটা সম্ভব, এই গরমে চা ও কফি পান কম করা উচিত। সেই সঙ্গে বাড়ানো উচিত ভিটামিন সি–জাতীয় খাবার খাওয়া। ভিটামিন সি-এর জন্য লেবু, কমলা, আমলকী, মাল্টা, টমেটো ও ক্যাপসিকাম বেশ ভালো উৎস! এগুলো এই গরমে খেলে উপকার পাওয়া যাবে। জলীয় অংশ বেশি আছে, এমন ফল ও সবজি দিনের খাদ্যতালিকায় রাখতে হবে। যেমন বাঙ্গি, তরমুজ, আনারস, শসা, লাউ, ঝিঙা, পটোল, চিচিঙ্গা ইত্যাদি।

জলীয় অংশ বেশি আছে, এমন ফল খেতে হবে
জলীয় অংশ বেশি আছে, এমন ফল খেতে হবে

পরিশেষে এটাই বলতে হয়, এই গরমে বাইরে বের হতে হলেও সতর্ক থাকুন।শরীর হাইড্রেটেড রাখুন ও সুস্থ থাকুন।

লেখক: মেডিকেল অফিসার, জয়নুল হক সিকদার উইমেন্স মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হসপিটাল

ছবি: পেকজেলস ডট কম

প্রকাশ: ১৮ জুলাই ২০২৪, ০১: ০৬
বিজ্ঞাপন