বর্তমান বিশ্বে মানসিক অবসাদ একটি ক্রমবর্ধমান সমস্যা। বিশ্বজুড়ে ৩০ কোটিরও বেশি মানুষ এ সমস্যায় ভুগছেন। কারও ক্ষেত্রে এটি প্রকাশ পায় মানসিক দুশ্চিন্তা বা আতঙ্ক হিসেবে। শারীরিক উপসর্গ হিসেবে দেখা দেয় শ্বাসকষ্ট, হৃৎস্পন্দন বেড়ে যাওয়া বা অতিরিক্ত ঘাম ইত্যাদি।
থেরাপি, কাউন্সেলিং ও ওষুধ কার্যকর হলেও, অনেক সময় লাইফস্টাইল মডিফিকেশন দারুণ ফল দেয়। এর মধ্যে সবচেয়ে সহজ ও কার্যকর একটি অভ্যাস হলো নিয়মিত হাঁটা।
হাঁটার সময় শরীরে এন্ড্রোফিন নামে একধরনের ‘ফিল গুড’ বা মন ভালো করা হরমোন নিঃসৃত হয়। যা স্ট্রেস কমাতে সাহায্য করে। প্রাকৃতিক পরিবেশে হাঁটলে এই উপকারিতা দ্বিগুণ হয়ে যায়। হাঁটার সময় মস্তিষ্কে অক্সিজেন প্রবাহ বাড়ে। ফলে চিন্তা পরিষ্কার হয়, সমস্যা সমাধানের দক্ষতা বাড়ে। অনেক বিখ্যাত মানুষ যেমন স্টিভ জবস হাঁটার সময় সিদ্ধান্ত নিতেন।
বিভিন্ন বয়সী ১০০০ মানুষের ওপর গবেষণায় দেখা যায়, প্রতিদিন ২০ মিনিট হাঁটলে ঘুম ভালো হয়। মানসিক চাপ কমে, শরীরকে শিথিল করে এবং ঘুমানোর সময় শরীর প্রস্তুত থাকে। নিয়মিত হাঁটার ফলে মস্তিষ্কে নতুন কোষ গঠিত হয়, যা স্মৃতিশক্তি উন্নয়ন ও মনোযোগ ধরে রাখায় সহায়ক। হাঁটা একটি প্রাকৃতিক থেরাপির মতো। যারা হালকা বিষণ্নতা বা মন খারাপের ভেতর দিয়ে যাচ্ছেন, তাদের জন্য এটি এক প্রকার ‘মুড বুস্টার’ হিসেবে কাজ করে।
হাঁটার জন্য প্রকৃতির সান্নিধ্য সবচেয়ে কার্যকর। আপনার বাসা বা কর্মস্থলের কাছে কোনো পার্ক, লেক বা নদীর ধার কিংবা বাসার ছাদে ও আশপাশের খোলা রাস্তায় হাঁটতে পারেন। হাটরা সময় আপনার মুঠো ফোনটি পকেটে রেখে প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগ করতে করতে হাঁটুন। নিজেকে কিছুটা সময় দিন।
২০ মিনিট হাঁটা। দিনের এই একটি মাত্র অভ্যাস দেবে আপনাকে মানসিক শান্তি, সুস্থির চিন্তা, যা সামগ্রিক জীবনের গুণগত মান বাড়াতে পারে। তবে রোজ ২০ মিনিট হাঁটার চর্চা হোক। মন ভালো থাকলে পৃথিবীর সবকিছুই সুন্দর।
তথ্য সূত্র: ফিট অন
ছবি: এআই দিয়ে তৈরি