প্রায়ই এরকম শোনা যায়, শখের নারী বা আদরের জীবনসঙ্গীটি কান্নাকাটি করলেই রাগ পড়ে যায় পুরুষের। আসলে যে কেউ যদি সামনে এসে কেঁদে ফেলে, তার সঙ্গে কঠিন আচরণ করাটাই কঠিন হয়ে দাঁড়ায় যদি না ক্রোধের পরিমাণটা খুব বেশি হয় বা আপনি একেবারেই অসংবেদনশীল হন। তবে এই প্রথম চোখের পানি দেখলে গলে যাওয়ার বৈজ্ঞানিক কারণ বের করা গেল।
বিখ্যাত পিএলওএস বায়োলজি নামের জার্নালে প্রকাশিত এক প্রবন্ধে বলা হয়েছে, নিউরোবায়োলজির নিরিখে অশ্রু কেমিক্যাল সিগনাল দেওয়ার মাধ্যমে এক ধরনের রিয়্যাকশন বা প্রতিক্রিয়া করে যাতে সামনের মানুষটির রাগ কমে যায়, আচরণ হয়ে আসে সংযত।
এ সংক্রান্ত প্রথম গবেষণাটি প্রকাশিত হয় ২০১১ সালে। সে স্টাডিরই পথ ধরে এবার দেখানো হয়েছে, নারীর অশ্রুপাত পুরুষের টেস্টোস্টেরন লেভেল কমিয়ে আনে৷ আচরণের মারমুখী ভাব হ্রাস করে। তবে এই গবেষণায় চোখের পানির রাসায়নিক প্রতিক্রিয়া পরিমাপ করার পথে সবচেয়ে বড় বাধা ছিল অন্তত এক মিলিলিটার অশ্রু সংগ্রহ করা। এজন্য নারী স্বেচ্ছাসেবকদের সাহায্য নেওয়া হয়েছে, যারা ইচ্ছা করলেই কাঁদতে পারেন। এবার সেই অশ্রু সংগ্রহ করে অ্যাগ্রেসিভ ধরণের গেম খেলতে দেওয়া হয়েছে পুরুষ স্বেচ্ছাসেবকদেরকে।
যখন এ সকল গেম খেলতে গিয়ে তারা রেগে যাচ্ছিলেন, তখন জারে করে অশ্রু শুঁকতে দেওয়া হচ্ছিল তাঁদেরকে। যদিও এমনিতে আমরা চোখের পানির গন্ধ পাইনা, এভাবে শোঁকার ফলে তাঁদের ক্রোধ কমে এসেছে ৪৪ শতাংশ পর্যন্ত। গেম খেলার সময় রিসেপটরের মাধ্যমে তাঁদের মস্তিষ্কের গতিপ্রকৃতি পরিমাপ করার ব্যবস্থা রাখা হয়েছিল এই স্টাডিতে৷ তাই এখন আসলে বিজ্ঞানের বরাত দিয়েই বলা যায়, চোখের পানিতে পুরুষ সঙ্গীকে ঘায়েল করার ক্ষমতা রাখেন নারীরা।
সূত্র: পিএলওএস, সায়েন্সডেইলি, নিউরোসায়েন্স নিউজ
ছবি: পেকজেলস ডট কম