দ্রুত খাবার খেলে তা স্বাস্থ্যের ওপর বেশ কিছু ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে। যেমন ক্ষুধা বেড়ে যাওয়া, এমনকি রক্তে শর্করার পরিমাণও বেড়ে যেতে পারে। যা স্থূলতা, হৃদ্রোগসহ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে। ধীরে খাবার খেলে এসব ঝামেলা তো থাকেই না, বরং পাওয়া যায় বেশ কিছু স্বাস্থ্য উপকারিতা। সাহরিতে প্রায়ই আমরা শেষ সময়ে অতিরিক্ত দ্রুত খাবার খাই। তবে খাবার থেকে উপকার পেতে একটু সময় নিয়ে ধীরে–সুস্থে খাওয়াই ভালো। চলুন জেনে নেওয়া যাক, খাবার ধীরে খেলে মিলবে যেসব উপকারিতা।
শরীর ঠিক রাখতে খাবার ভালোভাবে হজম হওয়া অত্যন্ত জরুরি। এর জন্য খাবার ধীরে–সুস্থে সময় নিয়ে চিবিয়ে খেতে হবে। এভাবে খাবার খেলে খাবার মুখে থাকা লালার সঙ্গে ভালোভাবে মিশ্রিত হয়। লালায় উপস্থিত এনজাইম হজম প্রক্রিয়াকে উন্নত করে। খাবার সঠিকভাবে হজম হলে পুষ্টির শোষণও ভালো হয়। এ ছাড়া হজমজনিত অন্য সমস্যাগুলো দেখা যায় না বললেই চলে।
খাবার ধীরে খাওয়ার সবচেয়ে বড় উপকারিতা হলো এটি আপনাকে মানসিক চাপ থেকে মুক্তি দেবে। একসঙ্গে অনেক কাজ করতে করতে কিংবা দ্রুত না খেয়ে যখন আপনি শুধু খাবারের দিকে মনোযোগ দেন, তখন আপনার দুশ্চিন্তা কমে আসে। খাবারের স্বাদ ও ঘ্রাণ আপনাকে একধরনের আনন্দ ও তৃপ্তি দেয়। যার ফলে মানসিক প্রশান্তি বেড়ে যায়।
খাবার খাওয়ার ওপরেই অনেকটা ওজন বৃদ্ধি ও হ্রাসের হাত থাকে। প্রয়োজনের অতিরিক্ত খেলে ওজন বেড়ে যায়। আর অনেক দ্রুত খাবার খেলে অনেক সময় আমরা প্রয়োজনের চেয়ে বেশি খেয়ে ফেলি। যার ফলে ওজন বেড়ে যায়। কিন্তু ধীরে খাবার খেলে আপনার মস্তিষ্কে তৃপ্তির সংকেত যায়। তাই অতিরিক্ত খাওয়ার আকাঙ্ক্ষা সৃষ্টি হয় না। ঘন ঘন ক্ষুধাও পায় না।
ধীরে খাবার খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে। কারণ, দ্রুত খাবার খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা হঠাৎ বেড়ে যেতে পারে। যা ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ায়। ধীরে খাবার খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা ধীরগতিতে বাড়ে এবং শরীর সহজেই এটি নিয়ন্ত্রণ করতে পারে।
ধীরে ধীরে খাওয়ার অভ্যাস হৃদ্রোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। দ্রুত খাবার খেলে রক্তে চর্বির পরিমাণ বেড়ে যেতে পারে, যা উচ্চ রক্তচাপ এবং কোলেস্টেরলের ঝুঁকি বাড়ায়। ধীরে খাবার খেলে এই ঝুঁকি অনেকটাই কমে আসে।
খাবার ধীরে খেলে তা সঠিকভাবে হজম হয় এবং পুষ্টির শোষণও ভালো হয়। বিশেষভাবে ফলমূল, সবজি বা প্রোটিন–সমৃদ্ধ খাবার ধীরে ভালোভাবে চিবিয়ে খাওয়াই ভালো। এভাবে খেলে সকল পুষ্টি উপাদান দেহে ভালোভাবে শোষিত হতে পারে।
খাবার ধীরে খেলে খাবারের আসল স্বাদ ও ঘ্রাণ উপভোগ করা সম্ভব হয়, যা খাবারকে আরও উপভোগ্য করে তোলে। এতে মনোযোগ বাড়ে এবং খাবার খাওয়ার প্রতি আগ্রহও জন্মায়। যা মানসিক প্রশান্তি বাড়াতেও সাহায্য করে।
সূত্র: হেলথলাইন
ছবি: পেকজেলসডটকম