রমজানে হৃদরোগীর রোজা রাখার নিয়ম ও করণীয়
শেয়ার করুন
ফলো করুন

রোজা রাখার স্বাস্থ্য উপকারিতা অনেক। এনসিবিআই এর গবেষণা দেখায়, রোজা ওজন কমাতেও ইতিবাচক প্রভাব রাখে। ইনসুলিন প্রতিরোধ ও করোনারি ধমনির রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। তবে হার্টের রোগী যারা আছেন, তাদের উচিত চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে তবেই রোজা রাখা। যদি কেউ দীর্ঘস্থায়ী অবস্থা যেমন হার্ট-স্বাস্থ্য সমস্যা, উচ্চ রক্তচাপ বা ডায়াবেটিসে ভোগেন তাহলে রমজানে স্বাস্থ্যের বিশেষ যত্ন নিতে হবে।

যাঁরা রোজা রাখতে পারবেন না

যখন আন-কন্ট্রোল্ড অ্যানজাইনা বা নিয়মিত বুকের ব্যথা থাকে ও যেকোনো সময় অ্যাটাক হতে পারে—এমন অবস্থায় তিনবেলা ওষুধ খেতে হয়। তখন রোজা রাখা অবশ্য উচিত নয়। চিকিৎসার পর একটু সুস্থ হলে তবেই রোজা রাখা যাবে। যাঁদের সম্প্রতি হার্ট ফেইলিওর হয়েছে এবং যে কোন সময় আবার হতে পারে তাঁদের রোজা রাখা উচিত নয়। তাঁদের ক্ষেত্রে হার্ট ফেইলিওর কন্ট্রোল হয়ে গেলে তখন দুবেলা ওষুধ খেয়ে রোজা রাখা যাবে। তবে রোজা রাখা অবস্থায় যদি দেখা যায় শরীর খুব খারাপ লাগছে, তখন রোজা ভেঙে আগে ওষুধ খেয়ে নিতে হবে। আবার যাঁরা অ্যাকুইট হার্ট ফেইলিওরের রোগী, যাঁদের অনেক ইনজেকশন নিতে হচ্ছে তাঁদের রোজা রাখা অবশ্যই উচিত না।

রোজা রাখার ঝুঁকি এড়াতে ও রমজানে হার্টের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে হৃদরোগীদের বেশ কয়েকটি নিয়ম অনুসরণ করা জরুরি, চলুন জেনে নেওয়া যাক-

১। ইফতারে অতিরিক্ত খাওয়া যাবে না

দুটি প্রধান হরমোন ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণকে প্রভাবিত করে- একটি হচ্ছে ঘেরলিন, যা ক্ষুধাকে উদ্দীপিত করে। অপরটি হচ্ছে লেপটিন, যা ক্ষুধাকে দমন করে। যখন কেউ না খেয়ে থাকে তখন ঘেরলিনের মাত্রা বৃদ্ধি পায়। আর খাওয়ার পরে, লেপটিনের মাত্রা শরীরকে বলে যে এটি পূর্ণ। তবে অত্যধিক খাওয়া এই ভারসাম্যকে ব্যাহত করতে পারে। এবং ওজন বাড়াতে ভূমিকা রাখে। তাই ইফতারে প্রচুর পরিমাণে খাবার  খাওয়া উচিত না।

২। তরলের ভারসাম্য বজায় রাখুন

হাইপোভোলেমিয়া (পানিশূন্যতা) প্রতিরোধে রমজানে প্রচুর পরিমাণে পানি ও তরল খাবার গ্রহণ করতে হবে হৃদরোগীদের। হাইড্রেটেড থাকার জন্য কমপক্ষে 8 গ্লাস তরল পান করার পরামর্শ দেওয়া হয়।

বিজ্ঞাপন

৩। ক্যাফেইন এড়িয়ে চলুন

কফি, চা ও কোমল পানীয়ের মতো ক্যাফেইন গ্রহণ সীমিত করতে হবে। কারণ এটি আয়রন শোষণকে বাধা দিতে পারে ও প্রস্রাবের প্রবাহকে বাড়িয়ে তুলতে পারে, যা ডিহাইড্রেশনের অন্যতম কারণ হতে পারে।

৪। মেটাবলিক সিনড্রোমের জন্য সতর্ক থাকুন

রমজানে ইফতারে বেশিরভাগ মানুষ ভাজা ও চিনিযুক্ত খাবার খান। এটি স্থূলতা ও ইনসুলিন প্রতিরোধকে উন্নীত করতে পারে। যা বিপাকীয় সিনড্রোমের জন্য দুটি প্রধান ঝুঁকির কারণ। এর থেকে হৃদ্‌রোগ, স্ট্রোক ও ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বেড়ে যায়। এসবের বদলে খাদ্যতালিকায় রাখুন ফল, শাকসবজি, গোটা শস্য ও চর্বিহীন প্রোটিন।

৫। খাবারের পরপরই পানি পান করবেন না

একসঙ্গে প্রচুর পরিমাণে পানীয় ও খাবার খেলে শ্বাসকষ্ট হতে পারে। এজন্য ইফতার থেকে সাহরি পর্যন্ত ছোট ছোট ভাগে খাবার ও পানীয় গ্রহণ করুন।

৬। শারীরিকভাবে সক্রিয় থাকুন

রমজানে হৃদরোগীরা খুব বেশি পরিশ্রম না করে ইফতারের ১ থেকে ২ ঘণ্টা আগে হাঁটা, যোগব্যায়াম বা স্ট্রেচিংয়ের মতো হালকা থেকে মাঝারি ক্রিয়াকলাপ বেছে নিন। ভুল সময়ে শরীরচর্চা করলে হৃৎপিণ্ডে আরও চাপ পড়ে এমনকি রোগী অজ্ঞান বা স্ট্রোক পর্যন্ত করতে পারেন।

ছবি: পেকজেলসডটকম

বিজ্ঞাপন
প্রকাশ: ০৬ মার্চ ২০২৫, ০১: ০০
বিজ্ঞাপন