
অনশন মানেই হচ্ছে যেকোনো দাবী আদায়ের জন্য করা টানা উপবাস। খাবার গ্রহণ করা হয় না এসময়। রাজনৈতিক কারণে হোক আর প্রেমিকার বাড়ির সামনে বিয়ের দাবীতে, অনশনের ঘটনা তো ঘটেই চলেছে যুগযুগ ধরে। প্রায় সময়ই কার্যকর হয় এই পদক্ষেপ। আবার বিফলও হতে হয়। আমরা সংবাদে দেখি, অনশন ভাঙাতে জুস নিয়ে এসেছেন কেউ, আবার ডাবের পানি পান করিয়েও অনশন ভাঙানো হয়। এখন কথা হচ্ছে, দিনের পর দিন এভাবে না খেয়ে থাকার পর অনশন ভাঙার সময় আসলে কী খাওয়া বা পান করা উচিত? আর কী কী একেবারেই খাবেন না বা পান করবেন না সেটাও জানা প্রয়োজন।


সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া যে অনশনের সময় না খেয়ে থাকা শরীর কী অবস্থায় আছে। হয়তো যেকোনো জরুরি পদক্ষেপ নেওয়ার প্রয়োজন পড়তে পারে এক্ষেত্রে। তবে সাধারণভাবে কিছু উপকারী পানীয় দিয়েই অনশন ভাঙানো হয়। আর সেই সঙ্গে থাকা উচিত তরল ও সহজে হজমযোগ্য খাদ্য। ধীরে ধীরে এবং বারে বারে কিছু খাওয়া ও পান করা উচিত। শুরুতে যেসব পানীয় সাধারণভাবে একজন সুস্থ মানুষকে অনশন ভাঙার সময় দেওয়া উচিত সেগুলো দেখে নিই এবারে।
পানি ও ইলেকট্রোলাইট পানীয়: হাইড্রেটেড থাকা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। খাওয়ার স্যালাইন ও ইলেকট্রোলাইট ড্রিংক খনিজ ভারসাম্য ফিরিয়ে আনতে শরীরকে সাহায্য করে। এজন্য প্রায়ই আমরা দেখি, অনশন ভাঙার সময় ডাবের পানি পান করানো হয়। এতে পানি তো আছেই, সেই সঙ্গে ডাবের পানির পটাসিয়ামসহ প্রাকৃতিক খনিজ লবণ খুবই কার্যকর এসময়।

পাতলা স্যুপ: হজমে সহজ এবং প্রয়োজনীয় তরল ও কিছু পুষ্টি দেয়।
ফল ও সবজির জুস বা স্মুদি: ব্লেন্ড করা ফলের পানীয় সহজে হজম হয়।
সহজে হজমযোগ্য ফল: কলা এজন্য ভালো। এতে শক্তিও মেলে।
প্রাথমিক তরল পর্যায়ের পরে অল্প পরিমাণে শক্ত খাবার যোগ করা যেতে পারে, যেমন রান্না করা সবজি, ডিম, মাছ বা ও ডালজাতীয় উদ্ভিজ্জ প্রোটিন। ওটমিল, ভাত বা হোল-গ্রেইন ক্র্যাকার ধীরে ধীরে যোগ করা যায়।এসময় যে খাবার ও পানীয় একেবারেই গ্রহণ করবেন না।

চর্বিযুক্ত বা ঝাল খাবার: এগুলো হজমে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
ভারি মিল: খুব দ্রুত বা বেশি খেলে পরিপাকতন্ত্র ওভারলোড হয়ে বিপদ হতে পারে।
অতিরিক্ত চিনিবিশিষ্ট পানীয়: এগুলো রক্তে শর্করা ও ইলেকট্রোলাইটে বিপজ্জনক পরিবর্তন ঘটাতে পারে। তাই বাজারে কিনতে পাওয়া যায় এমন কার্টন বা বোতলের জুস পরিহার করুন।

সাধারণভাবে স্বাভাবিক ডায়েটে ফেরার পুরো প্রক্রিয়াটি কয়েক দিন বা এমনকি সপ্তাহ পর্যন্ত সময় নিতে পারে — এটা ক্ষুধা বা অনশনের দৈর্ঘ্যের ওপর নির্ভর করে। এসময় অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
সূত্র: লাইভ সায়েন্স
ছবি: ইন্সটাগ্রাম, গুগল জেমিনাই