হৃদ্রোগ বিশেষজ্ঞ এবং দীর্ঘায়ু গবেষক ড. এরিক টোপল সম্প্রতি এক পডকাস্টে জানিয়েছেন, বয়স থামানোর ও শরীরকে ভেতর থেকে তরুণ রাখার সবচেয়ে কার্যকর ও বৈজ্ঞানিক একটি উপায় আছে। আর উপায়টি হচ্ছে প্রতিদিন ব্যায়াম করা।
বাজারে হাজারো অ্যান্টি-এজিং পণ্য, কোলাজেন পাউডার, সুপার ফুড আর ট্রেন্ডি বায়োহ্যাক দেখা গেলেও বাস্তব সত্য হলো। বয়স কমাতে বা ধরে রাখতে শরীরচর্চা বা ব্যায়ামের কোন বিকল্প নেই। যা সত্যিই সহজ ও প্রাকৃতিক ভাবে বয়স কমাতে পারে।
দ্য মেল রবিন্স পডকাস্ট-এ ড. এরিক টোপল বলেন, ‘বয়স শুধু ক্যালেন্ডারের হিসাব নয়। শরীরের কোষীয় বয়স বা ‘বায়োলজিক্যাল এজ’-ই বলে দেয় আপনি কতটা স্বাস্থ্যবান।’
বয়সকে দুই ভাবে বিবেচনা করেন ড. এরিক টোপল।
১. ক্রোনোলজিক্যাল এজ: জন্মসাল অনুযায়ী বয়স
২. বায়োলজিক্যাল এজ: শরীরের ভেতরের বয়স, যা নির্ধারিত হয় কোষ, অঙ্গপ্রত্যঙ্গ ও সামগ্রিক স্বাস্থ্য বিবেচনায়।
যদি আপনার বায়োলজিক্যাল এজ বাস্তব বয়সের চেয়ে কম হয়, তাহলে বুঝতে হবে আপনি শারীরিকভাবে অনেকটা তরুণ এবং বার্ধক্যকে ধীর গতিতে এগোতে দিচ্ছেন।
ড. টোপল বলেন, ‘এখন আমরা এপিজেনেটিক ক্লক-এর মতো আধুনিক বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি দিয়ে বায়োলজিক্যাল এজ নির্ধারণ করতে পারি। আর সবচেয়ে কার্যকর উপায় যা এই বয়স কমাতে সাহায্য করে তা হলো ব্যায়াম।’
ব্যায়াম শরীরের কোষের কার্যকারিতা বাড়ায়, ইনফ্লামেশন কমায়, হরমোন ব্যালেন্স রাখে এবং মানসিক স্বাস্থ্য উন্নত করে-সব মিলিয়ে এটি বার্ধক্যকে ধীর করে তোলে।
ড. টোপলের মতে:
• সপ্তাহে কমপক্ষে ৫ দিন, দিনে ৩০ মিনিটের অ্যারোবিকস এক্সারসাইজ করুন: হাঁটা, সাইক্লিং, ট্রেডমিল বা এলিপটিকাল মেশিনে।
• রেজিস্টেন্স ট্রেনিং বা শক্তি বাড়ানোর ব্যায়াম: ব্যান্ড ব্যবহার, বডিওয়েট এক্সারসাইজ, ব্যালান্স ও পশ্চার সংশোধন করা।
• সময় যেটাই হোক, প্রতিদিন চেষ্টা করুন কিছু না কিছু শারীরিক ব্যায়াম।
এই ব্যায়ামগুলো শুধু ক্যালরি ঝরানো নয়, বরং কোষীয় স্তরে বয়সের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে। গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত শরীরচর্চা বা ব্যায়াম করা ব্যক্তিদের বায়োলজিক্যাল এজ প্রায় ১০ বছর পর্যন্ত কম হতে পারে।
বয়স কমানোর কোনো জাদু নেই। তবে নিজেকে দীর্ঘদিন তরুণ রাখতে চাইলে সবচেয়ে কার্যকর ও বিজ্ঞানসম্মত উপায় হলো—নিয়মিত শরীরচর্চা। এটা আপনার শরীর ও মনের জন্য একটি অমূল্য উপহার।
ছবি: পেকজেলসডটকম