সকালের রুটিনে স্বাস্থ্যকর কিছু যোগ করতে পারেন। হয়তো দুধ–চিনি দেওয়া চা-কফির মতো সুস্বাদু হবে না, তবে সুস্বাস্থ্য রক্ষায় এদের জুড়ি নেই।
১. মেথি ভেজানো পানি
মেথিবীজ পুষ্টির পাওয়ার হাউস বলে খ্যাত। বিভিন্ন স্বাস্থ্যসুবিধার জন্য শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে ওষুধ হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে এই উপাদান। মেথি সারা রাত ভিজিয়ে রেখে সকালে ওই পানি পান করুন। মেথিতে দ্রবণীয় ফাইবার রয়েছে, যা রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে এবং পেট ভরার অনুভূতি দেয়। এতে সারা দিনের ক্যালরি গ্রহণের পরিমাণ কমে যাওয়ায় ওজন হ্রাস পায়। উপরন্তু মেথি বিপাককে উদ্দীপিত করে বলে বিশ্বাস করা হয়, যা মেদ কমাতে সাহায্য করে।
২. গ্রিন টি
টেলিভিশনের বাহারি বিজ্ঞাপনের বদৌলতে গ্রিন টি আমরা সবাই কমবেশি চিনি। গ্রিন টি ক্যাটেচিন নামের অ্যান্টি–অক্সিডেন্টে ভরপুর। গ্রিন টি বিপাক ও চর্বির জারণ বাড়ায়। সকালে এক কাপ গ্রিন টি পান করলে দেহে কোনো ধরনের অস্বস্তি ছাড়াই মৃদু পরিমাণে ক্যাফেইন বৃদ্ধি পায়, যা এটিকে কফির একটি নিখুঁত বিকল্প করে তোলে। উপরন্তু গ্রিন টিতে ক্যাফেইন ও অ্যান্টি–অক্সিডেন্টের সংমিশ্রণ মনোযোগ বৃদ্ধি করে আপনাকে একটি উত্পাদনশীল দিনের জন্য শক্তি জোগাতে পারে।
৩. আদা আর হলুদের চা
সর্দি–কাশি উপশমের জন্য ভারতবর্ষের ঘরে ঘরে আদা ও হলুদ দেওয়া চা পান করা হয়। আদা ও হলুদ বিপাকক্রিয়া বৃদ্ধি করে এবং প্রদাহ কমায়। আদা ও হলুদ মিশ্রিত এক কাপ গরম চা শুধু স্বাদেই অনন্য নয়, পুষ্টিগুণেও অনন্য। এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এবং বায়োঅ্যাকটিভ যৌগ। আদা হজমে সহায়তা করে এবং প্রদাহ কমায়, অন্যদিকে হলুদ চর্বির বিপাক বাড়ায় এবং লিভারের স্বাস্থ্যকে উন্নত করে। তাই সামগ্রিক সুস্থতা বজায় রাখতে এক কাপ আদা ও হলুদ চা দিয়ে আপনার সকাল শুরু করুন।
৪. অ্যাপেল সাইডার ভিনেগার
ওজন কমাতে সাহায্য করে বলে ইদানীং বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে অ্যাপেল সাইডার ভিনেগার। এতে রয়েছে অ্যাসিটিক অ্যাসিড, যা রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে এবং ক্ষুধা কমাতে সাহায্য করে। এক কাপ পানির সঙ্গে এক-দুই টেবিল চামচ অ্যাপেল সাইডার ভিনেগার মিশিয়ে পান করুন। চাইলে এর সঙ্গে সামান্য মধুও যোগ করা যেতে পারে। সকালে এই মিশ্রণ পান করার মাধ্যমে আপনার সারা দিনের মেদ কমানোর যাত্রা শুরু করতে পারেন।
৫. প্রোটিনসমৃদ্ধ স্মুদি
দিনের শুরুতে প্রোটিনজাতীয় খাবার গ্রহণ করার মাধ্যমে রক্তে চিনির পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। সকালে খালি পেটে প্রথমেই শর্করাজাতীয় খাবার গ্রহণ করলে রক্তে চিনির পরিমাণ বেড়ে যায়। একই সঙ্গে সারা দিন চিনিজাতীয় বা মিষ্টি খাবার খাওয়ার ইচ্ছা বাড়তে থাকে। ফলে ওজন বৃদ্ধি পায়। নাশতায় প্রোটিনের পরিমাণ বাড়ানোর ভালো উপায় হচ্ছে প্রোটিন স্মুদি যোগ করা। পালংশাক, বেরি, প্রোটিন পাউডার, দুধ ও এক টেবিল চামচ তিসির বীজ বা চিয়া সিডের মতো উপাদানগুলোকে ব্লেন্ডারে মিশিয়ে নিন। ফলমূলে থাকা ফাইবার একদিকে হজমে সাহায্য করবে, অপর দিকে প্রোটিন আপনার ক্ষুধাকে সন্তুষ্ট করে অতিভোজন থেকে রক্ষা করবে।
সূত্র: ভেরি ওয়েল ফিট
ছবি: পেকজেলস ডট কম