ঋতু পরিবর্তনের সময় সুস্থ থাকতে যা  প্রয়োজন
শেয়ার করুন
ফলো করুন

ঘনঘন আবহাওয়ার বদল হচ্ছে এখন। কখনো রোদ, কখনো বৃষ্টি, আবার কখনো হালকা শীত। প্রকৃতি জানান দিচ্ছে যে ঋতুতে পরিবর্তন আসছে। কড়া রোদ আর ভ্যাপসা গরমকে বিদায় জানিয়ে মৃদু হিমেল হাওয়ায় প্রকৃতিতে আগমন ঘটতে চলেছে হেমন্তের। এদিকে এমন ঋতু বদলের দিনে সর্দিকাশি, পেট খারাপ আর অ্যালার্জির মতো সমস্যা বেড়ে যায়৷ বিশেষ করে যাঁদের অ্যালার্জির সমস্যা আছে, নতুন ঋতু তাঁদের জন্য কিছুটা বিভীষিকাই বটে। তাই পরিবর্তিত আবহাওয়া উপভোগ করার বদলে রোগশোকে নাজেহাল হয়ে পড়েন অনেকেই। নিত্যদিনের জীবনে কিছু সাধারণ অভ্যাস গড়ে তুললেই কিন্তু এই ঝক্কি থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে।

১. মৌসুমি ফল ও শাকসবজি খান বেশি বেশি

ঋতু পরিবর্তনের দিনে সবার আগে যে বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে, তা হচ্ছে দৈনিক খাদ্যাভ্যাসে মৌসুমি ফল ও শাকসবজির পরিমাণ বাড়িয়ে দেওয়া। প্রতিটি ঋতুতে আমাদের শরীরকে সুস্থ রাখার জন্য যেসব পুষ্টিগুণ দরকার, তা আমাদের মৌসুমি খাবারগুলোতেই প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায়। ভিটামিন সি শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বৃদ্ধি করে৷ তাই ভিটামিন সি–সমৃদ্ধ খাবার বেশি পরিমাণে খেতে হবে। এটি সর্দিকাশি এড়ানোর ভালো উপায়। এখন যেমন আনারস, পেয়ারা, আমলকি, আমড়া আর ড্রাগন ফল মিলছে প্রচুর।

বিজ্ঞাপন

২. প্রচুর পরিমাণে পানি পান করুন

হেমন্তের শুরু থেকেই মোটামুটি শুষ্ক মৌসুম শুরু হয়ে যায়। শরীরের পানির ভারসাম্য রক্ষা করতে তাই বেশি বেশি পানি পান করা উচিত৷ অথচ এ সময় সবচেয়ে কম পানি পান করার প্রবণতা লক্ষ করা যায়। পানি আমাদের শরীরের বিষাক্ত পদার্থগুলোকে বের করে দিতে সাহায্য করে। খাবার থেকে পাওয়া পুষ্টি উপাদানও পানির মাধ্যমে বাহিত হয়ে শরীরের সব জায়গায় পৌঁছে যায়। তাই পানি পান করার বিষয়ে অবহেলা থাকলে রোগব্যাধি পিছু ছাড়ানো বেশ মুশকিল ব্যাপার হয়ে দাঁড়াবে। শীত আসার আগেই এই টুকটাক জিনিসগুলো মাথায় রাখলে এক ঋতু থেকে আরেক ঋতুতে যাওয়ার সময়টা নিশ্চিন্তে উপভোগ করতে পারবেন।

৩. কর্মঠ থাকার চেষ্টা করুন

প্রযুক্তি আমাদের জীবন এতটাই সহজ করে দিয়েছে যে শারীরিক খাটুনি ইদানীং খুব একটা না করলেও চলে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে অফিসের কাজও বসে বসেই করা হয়। আর হেমন্ত-শীতের সময়টায় এই আলস্যটাই যেন আরও পেয়ে বসে। এতে করে শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে। আমরা অনেকেই ভাবি যে সুস্থ থাকার জন্য যথেষ্ট পরিমাণ আরাম দরকার। কিন্তু আসলে শারীরিক পরিশ্রম সুস্থ থাকার জন্য আবশ্যক। প্রতিদিনের বাজার কিংবা স্কুল, কলেজ, অফিসে যাওয়ার সময় হেঁটে যেতে পারেন। আবার সচল থাকতে ঘর পরিষ্কার করতে পারেন, ব্যায়াম কিংবা জগিং করতে পারেন। যেকোনো কাজ যা আপনাকে শারীরিকভাবে পরিশ্রম করাবে, সেগুলো আপনার দৈনিক অভ্যাসে পরিণত করে নিন। বাড়তি পাওনা হিসেবে শরীরচর্চা আপনার চেহারায় বয়সের ছাপ পড়ার গতি কমিয়ে আনবে৷ এভাবে সুস্থ শরীরের সঙ্গে সুন্দর ত্বকও পাবেন উপহার হিসেবে।

বিজ্ঞাপন

৪. নিজের পরিচ্ছন্নতার দিকে খেয়াল রাখুন

শুষ্ক মৌসুমে আশপাশে ধুলাবালু বেড়ে যায়। আবার ঘাম না হওয়ায় অনেকে নিয়মিত গোসলের ব্যাপারে আলসেমি করেন। এতেই ঘটে বিপত্তি। সর্দিকাশি, অ্যালার্জির মতো রোগবালাই বাসা বাঁধতে শুরু করে। তাই ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতার ব্যাপারে কোনো ধরনের গড়িমসি করা যাবে না। বাইরে থেকে এসে হাত মুখ ভালো করে ধুয়ে নিতে হবে। ব্যাগে একটি স্যানিটাইজার রাখতে পারেন। বাইরে মাস্ক পরে যাওয়াটাই শ্রেয় এ সময়। বিশেষ করে যাঁদের ডাস্ট অ্যালার্জি আছে। টুকটাক এই অভ্যাসগুলো ভোগান্তি অনেকটাই কমিয়ে আনবে।

৫. ত্বকের যত্ন নিন

শরীরের সুস্থতার দিকে খেয়াল রাখতে গিয়ে ত্বকের কথা ভুলে গেলে চলবে না। যদিও শরীরের যত্ন নিলে ত্বক ভেতর থেকে স্বাস্থ্যোজ্বল হয়ে ওঠে। তবুও শুষ্ক মৌসুমে ত্বকের দরকার পড়ে বাড়তি যত্ন। বিশেষ করে যাঁদের ত্বকের ধরনই শুষ্ক। তাই এখন থেকে হালকা একটি ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে শুরু করুন। গ্রীষ্মের কড়কড়ে রোদ নেই বলে সানস্ক্রিনকে দূরে সরিয়ে দেবেন না। সব ঋতুতেই সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন। প্রতিবার মুখ ধোওয়ার পর মুখে ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে নিন। এতে ত্বক শুষ্ক হয়ে যাওয়ার ঝুঁকি থাকবে না।

ছবি: পেকজেলসডটকম

প্রকাশ: ২১ অক্টোবর ২০২৪, ১৬: ০০
বিজ্ঞাপন