দেশে আবহাওয়া অফিস তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি করেছে। এমন সময়ে হঠাৎ হিটস্ট্রোক হলে তা শনাক্ত করা ও প্রয়োজনীয় প্রাথমিক চিকিৎসার বিষয়ে আমাদের সবার জানা থাকতে হবে। রোদে বেরোলে শরীরের তাপমাত্রা অতিরিক্ত বৃদ্ধি পায়। এর ফলে কোনো কোনো সময় চরম অবস্থার সৃষ্টি হতে পারে। মানবদেহের স্বাভাবিক তাপমাত্রা ৯৮ ডিগ্রি ফারেনহাইট। দীর্ঘ সময় গরমে ও রোদে থাকলে এটি বাড়তে বাড়তে ১০৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট পেরিয়ে গেলেই হিটস্ট্রোক হতে পারে। এ অবস্থায় কয়েক মিনিটের মধ্যে তাপমাত্রা বেড়ে মানুষ জ্ঞান হারায়। একে একটি জরুরি পরিস্থিতি হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
হিটস্ট্রোকের লক্ষণ
মাথা ঝিমঝিম করা, বমি, অবসাদ ও দুর্বলতা, মাথাব্যথা, মাংসপেশির খিঁচুনি, চোখে ঝাপসা দেখা ইত্যাদি। হিটস্ট্রোকের রোগীর ত্বকে ঘাম থাকে না, ত্বক খসখসে, শুষ্ক ও লাল দেখায়, পাশাপাশি হৃৎস্পন্দন বেড়ে যায়। শ্বাসকষ্টও হতে পারে। শিশু, বয়োবৃদ্ধ, লম্বা সময় ধরে রোদ ও গরমে কাজ করা ব্যক্তিদের হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেশি। গরমে রাস্তায় বাসে বা অন্যান্য যানবাহনে গাদাগাদি করে ভ্রমণের সময়ও এরূপ ঘটনা ঘটে অহরহ।
প্রাথমিক চিকিৎসা
প্রচণ্ড গরমে বাইরে কেউ হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত বলে সন্দেহ হলে প্রথমেই তাঁকে দ্রুত ছায়ায় বা শীতল জায়গায় নিয়ে যেতে হবে। ভারী জামাকাপড় খুলে দিতে হবে। গায়ে ঠান্ডা পানি ঢালতে হবে বা স্পঞ্জ করে দিতে হবে। বগল ও ঊরুর ভাঁজে বরফ বা ঠান্ডা পানিতে ভেজানো কাপড় দিলে ভালো। থার্মোমিটার দিয়ে শরীরের তাপমাত্রা মেপে দেখতে হবে এবং ১০১ থেকে ১০২ ডিগ্রি ফারেনহাইটে নেমে আসার আগপর্যন্ত প্রাথমিক চিকিৎসার পর যত দ্রুত সম্ভব নিকটস্থ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া উচিত।
প্রতিরোধে করণীয়
পানিশূন্যতা যেন না হয়, সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে। গরমে ও রোদে প্রচুর পরিমাণ পানি, ডাবের পানি, স্যালাইন পান করতে হবে। দুপুরের প্রচণ্ড রোদে ভারী কাজ বা শারীরিক ব্যায়াম করা থেকে বিরত থাকতে হবে। প্রয়োজন ছাড়া বাইরে দীর্ঘ সময় অবস্থান করা যাবে না। গরমে বাইরে বের হলে সাদা বা হালকা রঙের কাপড় পরতে হবে। আর ছাতা ব্যবহার করতে হবে। এ ছাড়া পানি সঙ্গে রাখতে হবে।
অনুলিখন: আজমেরী সুলতানা
ছবি: পেকজেলসডটকম