আদা, হলুদ, রসুন, লবঙ্গ, তেজপাতা ইত্যাদি মসলা এমনিতে খুব স্বাস্থ্যকর হলেও অতিরিক্ত ব্যবহারে কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। এসব মসলা আমাদের প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় স্বাদ ও সুগন্ধ যোগ করে। সেই সঙ্গে এগুলোর ঔষধি গুণাবলিও রয়েছে। তবে আদা, হলুদ, রসুন, লবঙ্গ, তেজপাতা ইত্যাদি মসলা এমনিতে খুব স্বাস্থ্যকর হলেও অতিরিক্ত সেবনে কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। এ কারণে সঠিক মাত্রায় মসলা খাওয়া এবং বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া অত্যন্ত জরুরি।
আদা ঔষধি গুণাগুণের জন্য পরিচিত। এটি পেটের গ্যাস ও বমি ভাব কমাতে এবং হজমে সহায়ক। আদায় থাকা জিনজেরল নামের উপাদান প্রদাহ কমায় এবং পেটে আরাম দেয়। তবে অতিরিক্ত আদা খাওয়ার কারণে হালকা হার্টবার্ন, ডায়রিয়া ও মুখের অস্বস্তি দেখা দিতে পারে। বিশেষ করে রক্তপাতের ঝুঁকি বাড়তে পারে বলে অস্ত্রপোচারের আগে বেশি আদা খাওয়া থেকে বিরত থাকা উচিত।
আদর্শ মাত্রা: দৈনিক ৩–৪ গ্রাম আদা খাওয়া নিরাপদ। ৬ গ্রাম বা তার বেশি খাওয়া উচিত নয়।
হলুদ তার কারকিউমিন যৌগের জন্য সুপরিচিত, যা প্রদাহ প্রতিরোধে সহায়ক। এটি সংক্রমণ কমায়, ইনসুলিন সংবেদনশীলতা বাড়ায় ও ক্যানসার প্রতিরোধে বেশ কার্যকর বলে গবেষণায় উঠে এসেছে। তবে অতিরিক্ত হলুদ খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য, ডায়রিয়া, অম্ল ভাব, গ্যাস ও ক্ষেত্রবিশেষে রক্তপাতের ঝুঁকি বেড়ে যায়। হলুদের দীর্ঘমেয়াদি অতিরিক্ত ব্যবহার লিভারের ক্ষতি করতে পারে এবং রক্তে শর্করার মাত্রা লক্ষ্যণীয় মাত্রায় হ্রাস করতে পারে।
আদর্শ মাত্রা: দৈনিক ৩ গ্রাম হলুদ গ্রহণ করা নিরাপদ।
লবঙ্গ শক্তিশালী অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, যা শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ায় এবং সব ধরনের সংক্রমণ রোধ করে। এটি রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। দাঁতের ব্যথা কমাতে ব্যবহৃত হয়। তবে অতিরিক্ত লবঙ্গ খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা অত্যধিক কমে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে, যা জীবনহানির ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।
আদর্শ মাত্রা: দৈনিক ২-৪টি লবঙ্গ খাওয়া নিরাপদ।
রসুনে থাকা অ্যালিসিন যৌগ শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ায় এবং সংক্রমণ প্রতিরোধ করে। এটি রক্তচাপ ও রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। এমনকি কোলন ও পাকস্থলীর ক্যানসার প্রতিরোধে সহায়ক। তবে অতিরিক্ত রসুন খেলে পেটের গ্যাস, ডায়রিয়া আর রক্তপাতের ঝুঁকি বেড়ে যায়।
আদর্শ মাত্রা: দৈনিক ৪-৫ কোয়া রসুন খাওয়া নিরাপদ।
তেজপাতা রান্নায় বহুল ব্যবহৃত মসলা হলেও এটি অতিরিক্ত খাওয়া বিপজ্জনক হতে পারে। তেজপাতা পরিপাকতন্ত্রে আটকে যেতে পারে এবং পেটে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। তেজপাতার নির্যাসের কারণে রক্তে শর্করার মাত্রা কমে যেতে পারে, যা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ।
আদর্শ মাত্রা: প্রতিদিন ১-২টি তেজপাতা ব্যবহার করা নিরাপদ।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া, হেলথলাইন
ছবি: পেকজেলসডটকম ও উইকিপিডিয়া