যখন কারণ ছাড়াই কোনো কিছু ভালো লাগে না
শেয়ার করুন
ফলো করুন

মাঝেমধ্যে এমন হয় যে সকাল থেকেই কেন যেন কিছুই ভালো লাগছে না। এমন দিনগুলোতে আমরা নিজেদের বারবার প্রশ্ন করি, কেন আমার এমন মনে হচ্ছে? কিন্তু সহজে এই ভালো না লাগার কারণ খুঁজে পাই না আমরা। আসলে এই উত্তর খুঁজতে হলে কিছু দিক আগে ভাবতে হবে।

প্রথমেই সত্যের মোকাবিলা করতে হবে। যেটা আদতে কঠিন। আমাদের সামনে থাকা সমস্যাগুলো সম্পর্কে সচেতন হতে হবে। উদাহরণস্বরূপ বলা যেতে পারে, সঙ্গীর সঙ্গে বাদানুবাদ, পরিবারের কোনো সদস্যের সঙ্গে ঝগড়া, অসময়ে অস্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ, ধূমপান, অপরিমিত ঘুম, অপর্যাপ্ত শরীরচর্চা, কর্মজীবনের স্ট্রেস, প্রিয়জন দূরে সরে যাওয়ার বেদনা, পরিবারের কোনো সদস্যের মৃত্যুসহ অগণিত ছোট-বড় কারণ। এই সবকিছু আমাদেরকে রোজ মোকাবিলা করে এগিয়ে যেতে হয়।

এমন এক বা একাধিক কারণ আমাদের ভালো না থাকার অনুভূতিকে ট্রিগার করে। ফলে এই নেতিবাচক অনুভূতি তীব্র হয়। আসলে কোনো কারণ ছাড়া কিছুই ঘটে না। হয়তো আমাদের মন সব সময় এই কারণগুলো সঠিকভাবে সামনে আনতে পারে না। আপাতদৃষ্টে অকারণ ভালো না লাগার পাল্লায় পড়ে নিজের মানসিক অবস্থা নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়ি আমরা। যখন সমস্যাগুলো সুস্পষ্ট হয়, যখন প্রশ্নটির উত্তর সহজেই এবং তাৎক্ষণিকভাবে শনাক্ত করা যায়, তখন বিষয়টিকে নিয়ে কাজ করাও সহজ হয়ে যায়। কিন্তু ধরুন আপনি খুঁজেই পাচ্ছেন না যে কেন মন খারাপ বা উদ্বিগ্ন, দুঃখিত বোধ করছেন। বারবার নিজেকে প্রশ্ন করতে থাকি আমরা এ রকম হলে। হয়তো আপনি ভাবেন, ‘সমস্যা কি আমারই!’ এভাবে সারা দিন নেতিবাচকতা ঘিরে থাকে আপনাকে।

সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই ভালো না লাগার অনুভূতি বাড়তে থাকে চক্রবৃদ্ধি হারে। তাই গা ঝাড়া দিয়ে উঠে নিজেকে এই অনুভূতির বেড়াজাল কেটে বের করে নিয়ে আসতে হবে। এ জন্য বিশেষজ্ঞরা কিছু নিয়মতান্ত্রিক কিন্তু সহজ ধাপের কথা বলেন। এবারে এগুলো দেখে নেওয়া যাক।

বিজ্ঞাপন

১. অন্য কোনো কাজ মন দিয়ে করুন

এসব চিন্তাভাবনা থেকে মুক্ত হতে অর্থপূর্ণ, জীবনঘনিষ্ঠ কাজ করা শুরু করে এতে আপনার পূর্ণ মনোযোগ দিন। আপনি যা করছেন, তাতে ডুবে থাকুন। এভাবে বারবার নিজেকে ‘কেন আমি এমন অনুভব করি, কোনো কারণ ছাড়াই কেন কিছু ভালো লাগে না?’ চিন্তা থেকে সরিয়ে রাখুন। বারবার ভালো লাগে না মনে হলেও নিজের কাজে ফোকাস করুন।

২. ছোট ছোট ভালো লাগার জিনিস খুঁজে বের করুন

অনেক সময় ভালো লাগার অনুভূতি তৈরি হতে খুব বেশি কিছু লাগে না। প্রকৃতির সংস্পর্শ, প্রিয় কোনো গান বা এক কাপ চা মন ভালো করে দেয়। সে রকম কিছু খোঁজার চেষ্টা করতে হবে। কিন্তু মন খারাপের অনুভূতি বিশ্লেষণ করার চেষ্টা বন্ধ করুন। মনে রাখবেন, আবহাওয়ার মতোই মনের অবস্থার পরিবর্তন হয়। এই ভালো না লাগার অনুভূতি যতই অপ্রীতিকর হোক না কেন, কেটে যাবে। ভালো না লাগার চেয়ে ভালো লাগায় মন দিলে দিনটি আস্তে আস্তে সুন্দর হয়ে যাবে।

৩. মন খারাপের ট্রিগার খুঁজে বের করুন

দিনের পর দিন প্রায়ই যদি এমন ব্যাখ্যাতীত রকমের মন খারাপের অনুভূতি ভর করে ভেতরে, তাহলে একসময় ক্রনিক ডিপ্রেশন দেখা দিতে পারে। তাই এমন ক্ষেত্রে এড়ানোর চেয়ে সঠিক কারণগুলো খুঁজে বের করাই শ্রেয়। জার্নাল বা ডায়েরিতে খারাপ লাগার বিষয়গুলো লিখে রাখলে একসঙ্গে সেগুলো পর্যবেক্ষণ করলে ফল ভালো মিলতে পারে। আর পরিস্থিতির উন্নতি না হলে অবশ্যই বিশেষজ্ঞ মনোবিদের শরণাপন্ন হতে হবে।

তথ্যসূত্র: নাইস গাইডলাইনস-ইউকে, মাইন্ডফুলনেস ডট অর্গ

মডেল: সুষ্মিতা মণ্ডল

ছবি: বৈচিত্র্য

বিজ্ঞাপন
প্রকাশ: ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০২: ৫২
বিজ্ঞাপন