বিজ্ঞাপন
ভালো ঘুমের জন্য

ফ্লোরিডা শুভ্রা রোজারিও

ভালো ঘুমের জন্য

এমন কিছু খাবার ও পানীয় রয়েছে, যা রাতে দুর্দান্ত ঘুমের জন্য সহায়ক হতে পারে। পুষ্টিবিদ ও ঘুমবিশেষজ্ঞরা বিভিন্ন ধরনের গবেষণার মাধ্যমে বের করেছেন কোন খাবারে ঘুম ভালো হবে। তবে শুধু খাবার গ্রহণেই নয়, প্রয়োজন ঘুমের জন্য স্বাস্থ্যকর কিছু ডায়েট ও অভ্যাস।

বিজ্ঞাপন

চর্বিযুক্ত মাছ

ভালো ঘুমের জন্য

ভালো ঘুমের জন্য চর্বিযুক্ত মাছ বেশ উপকারী। কয়েক মাস ধরে চলা একটি গবেষণায় দেখা গেছে, যাঁরা সপ্তাহে তিনবার স্যামন মাছ খেয়েছেন, তাঁদের সামগ্রিক ঘুমের পাশাপাশি দিনের বেলায় কাজকর্মও ভালো হয়েছে। গবেষকেরা বিশ্বাস করেন, চর্বিযুক্ত মাছে থাকা ভিটামিন ডি ও ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড ঘুমাতে সাহায্য করতে পারে।

বিজ্ঞাপন

বাদাম

ভালো ঘুমের জন্য

পেস্তা, কাজুর মতো বাদামে মেলাটোনিনের পাশাপাশি ম্যাগনেশিয়াম ও জিংকের মতো প্রয়োজনীয় খনিজ পদার্থ রয়েছে। একটি ক্লিনিক্যাল সমীক্ষায় পাওয়া গেছে, মেলাটোনিন, ম্যাগনেশিয়াম ও জিংকের সংমিশ্রণ অনিদ্রাসহ প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তিদের ভালো ঘুম পেতে সহায়তা করে।

টার্ট চেরি

ভালো ঘুমের জন্য

মিষ্টি চেরি থেকে টার্ট চেরির একটি আলাদা স্বাদ রয়েছে। কখনো কখনো একে টক চেরিও বলা হয়। এর মধ্যে রয়েছে রিচমন্ড, মন্টমোরেন্সি ও ইংলিশ মোরেলোর মতো জাত। যাঁরা টার্ট চেরির জুস পান করেন, তাঁদের জন্য বেশ কিছু গবেষণায় ঘুমের উপকারিতা পাওয়া গেছে। একটি গবেষণায় দেখা গেছে, যাঁরা প্রতিদিন এক থেকে দুই কাপ টার্ট চেরির জুস পান করেন, তাঁদের মোট ঘুমের সময় ও ঘুমের দক্ষতাও বেশি। টার্ট চেরিতে মেলাটোনিনের গড় ঘনত্ব বেশি থাকায় এই হরমোন ঘুমের জন্য উপকারী। অন্যদিকে অ্যান্টি–অক্সিডেন্টের প্রভাব বেশি থাকায় ঘুমের জন্য সহায়কও হয়।

মল্টেড দুধ

ভালো ঘুমের জন্য

বিশেষভাবে পাউডারের সমন্বয়ে তৈরি করা হয় মল্টেড দুধ। প্রাথমিকভাবে এতে রয়েছে গমের আটা, গম, বার্লি, চিনি ও ভিটামিনের ভান্ডার। যেমন হরলিকস একটি জনপ্রিয় ব্র্যান্ডের মল্টেড মিল্ক পাউডারের নাম। গবেষণায় দেখা গেছে, মল্টেড দুধ ঘুমের ব্যাঘাত হ্রাস করে। দুধে থাকা মেলাটোনিন ঘুমের জন্য সহায়ক। তাই ঘুমাতে যাওয়ার পূর্বপ্রস্ততি নিতে এটা খাওয়া যেতেই পারে।

ভাত

ভালো ঘুমের জন্য

বাঙালির ভাত খাওয়ার পর একটা ‘ভাতঘুম’ লাগেই। ভাত খেলে যে শরীরটা একটু এলিয়ে ঘুমিয়ে পড়তে ইচ্ছা হয়, এটা সত্য। জাপানে প্রাপ্তবয়স্কদের ওপর করা একটি গবেষণায় দেখা গেছে, যাঁরা রুটি বা নুডলস খেয়েছেন, তাঁদের তুলনায় যাঁরা নিয়মিত ভাত খান, তাঁদের ঘুম ভালো হয়েছে।

কিউই

ভালো ঘুমের জন্য

ডিম্বাকৃতি কিউই ফল নিউজিল্যান্ডের হলেও পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে জন্মায়। সবুজ ও সোনালি উভয় প্রকারই রয়েছে এই ফল, তবে সবুজ কিউই বেশি সংখ্যায় উত্পাদিত হয়। এতে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন ও খনিজ। বিশেষ করে ভিটামিন সি, ই, পটাশিয়াম ফোলেটও রয়েছে কিউইতে। কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, এই ফল ঘুমের উন্নতি করতে পারে। একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, যাঁরা ঘুমানোর এক ঘণ্টা আগে দুটি কিউই খেয়েছিলেন, তাঁরা দ্রুত ঘুমিয়ে পড়েছেন এবং তাঁদের ঘুমের গুণমানও ভালো ছিল। কেন কিউই ঘুমের ক্ষেত্রে সাহায্য করতে পারে, তা নিশ্চিতভাবে জানা যায়নি, তবে গবেষকেরা বিশ্বাস করেন, এটা তার অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্য, ফোলেটের ঘাটতি পূরণ করার ক্ষমতার সঙ্গে সম্পর্কিত হতে পারে।

ঘুমের জন্য স্বাস্থ্যকর ডায়েট

ঘুম এমন একটি প্রক্রিয়া, যা মানসিক স্বাস্থ্য ও শারীরিক নানা সমস্যা দ্বারাও প্রভাবিত হয়। ঘুম যে শুধু খাবারের সঙ্গেই সম্পর্কিত, তা কিন্তু নয়। উন্নত লাইফস্টাইল পেতে প্রয়োজন সঠিক ডায়েট মেনে চলা। বিভিন্ন খাদ্যের প্রতি ব্যক্তির স্বতন্ত্র প্রতিক্রিয়া থাকতে পারে। স্বাস্থ্যকর ঘুম ও খাদ্যাভ্যাসের ওপর তাই নজর দিতে হবে। পুষ্টিবিদেরা সুষম ও সামঞ্জস্যপূর্ণ খাবার গ্রহণের পরামর্শ দেন। এই তালিকায় শাকসবজি ও ফল রয়েছে।

ভালো ঘুমের জন্য

তবে ঘুমে ব্যাঘাত ঘটাবে, এমন কিছু খাবার ও পানীয় থেকে দূরে থাকাই ভালো। তাই ক্যাফেইন গ্রহণ সীমিত করতে হবে। বিশেষ করে ঘুমাতে যাওয়ার আগে কফিকে একেবারেই না বলে দিন। কারণ, এর উত্তেজক প্রভাব রাতে জাগিয়ে রাখতে পারে। এ ছাড়া যাঁদের অ্যালকোহল সেবনের অভ্যাস আছে, তাঁদের পরিমিত হতে হবে। অ্যালকোহল প্রথমে ঘুমাতে সাহায্য করলেও পরবর্তী সময়ে ঘুমের চক্র বন্ধ করে দিতে পারে।

ঘুমের স্বাস্থ্যবিধি

ভালো ঘুমের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে ঘুমের পরিবেশ ও ব্যক্তির দৈনন্দিন রুটিন। ঘুমের পরিবেশ এমনভাবে তৈরি করা উচিত যেন সেখানে অনেক শব্দ না আসে। বরং একটি সুগন্ধি মোমবাতি জালিয়ে হালকা কোনো মিউজিক চালাতে পারেন। ঘুমানোর জন্য বিছানার চাদর ও বালিশ থাকতে হবে পরিষ্কার–পরিচ্ছন্ন।

ভালো ঘুমের জন্য

হয়তো কিছু খাবার সাধারণভাবে ঘুমের জন্য সাহায্য করতে পারে, তবে আপনার ঘুমের স্বাস্থ্যবিধি সঠিক না হলে খাবার গ্রহণ কার্যকর হওয়ার সম্ভাবনা কম। উদাহরণস্বরূপ, যদি শোবার ঘর কোলাহলপূর্ণ হয়, উজ্জ্বল আলো থাকে এবং বিছানায় ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার করেন, তাহলে আপনার শরীরের মেলাটোনিন উত্পাদন না–ও হতে পারে। তাই ভালো ঘুমের ক্ষেত্রে এসব বিষয় অবশ্যই লাইফস্টাইলে যোগ করতে হবে।

তথ্যসূত্র: স্লিপ ফাউন্ডেশন

প্রকাশ: ১৮ মার্চ ২০২৩, ১৩: ৪০
বিজ্ঞাপন
হাল ফ্যাশন