
সাদা চিনির মতো ক্ষতিকর খাদ্য উপকরণ খুব কমই আছে৷ ফাঁপা ক্যালরির বোঝা বলা যায় একে। এতে শরীরে কোনোই পুষ্টি ঢোকে না। শুধু ব্লাড সুগারটা বেড়ে যায় আর পরে তা চর্বি হয়ে জমতে থাকে। এছাড়াও সাদা চিনির আছে আরো অনেক ভয়ংকর ক্ষতি। এসব জেনেও অনেকেই চিনি ছাড়া চা কিংবা কফি খেতে পারেন না। বিভিন্ন ডেজার্ট বা কোমল পানীয়ও সাদা চিনিতে পরিপূর্ণ। অনেকে আবার বাণিজ্যিকভাবে বিপণন করা ব্রাউন সুগার ব্যবহারকে যৌক্তিক মনে করেন। কিন্তু বাজারের এই ব্রাউন সুগার আর হোয়াইট সুগারের মধ্যে কার্যকারিতার তেমন কোনো পার্থক্য নেই। সাদা চিনিতে মোলাসেস যুক্ত করে এসব ব্রাউন সুগার তৈরি করা হয়। চিনি আমাদের জন্য কতটা ক্ষতিকর তা খুবই সংক্ষেপে তুলে ধরা হলো।

১. চিনি শরীরের অতিরিক্ত ওজন বাড়ায়।
২. হৃদযন্ত্রে সমস্যা দেখা দেয় বেশি চিনি খেলে
৩. মুখে অতিরিক্ত ব্রণ হতে পারে
৪. ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। টাইপ টু ডায়াবেটিস হওয়ার অন্যতম বড় কারণ এই চিনি
৫. গবেষণায় জানা গেছে, চিনি ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়
৬. ডিপ্রেশন বাড়াতে সাহায্য করে চিনি
৭. বয়স বেড়ে যায় চামড়া দ্রুত কুঁচকে যায় ডায়েটে বেশি চিনি থাকলে
৮. ফ্যাটি লিভার হওয়ার ঝুঁকি থাকে খুব বেশি
৯. কিডনিতে সমস্যা দেখা দেয়
১০. শরীরে ক্লান্তির অনুভূতি বেড়ে যায়
আরো অনেক সমস্যার কারন এই চিনি। এক গবেষণায় জানা যায়, সাদা চিনি সিগারেটের চেয়েও ৩ গুণ বেশি ক্ষতিকর।
অনেকেই সাদা চিনি ত্যাগ করে ভালো আছেন। তাই চলুন জেনে নিই এমন কিছু উপায় যাতে সহজেই আপনি চিনি ছাড়তে পারেন।

১. প্রাকৃতিকভাবে কম চিনিযুক্ত খাবার খাওয়া
যেসব খাবারে চিনির পরিমান খুবই কম বা নেই, সেসব খাবার ডায়েটে রাখতে পারেন। প্রোটিন, পুষ্টিগুণসমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। শাকসবজি বেশি পরিমাণে খাওয়া উচিত।
২. সবসময় লেবেল দেখে খাবার খাওয়া
বাইরে প্যাকেট করা খাবার কিংবা যেকোনো প্রসেসড খাবারের প্যাকেটের গায়ে ফুড লেবেল থাকে। সেখানে কি পরিমান পুষ্টিগুণ আছে, তা দেখে খাবার খেতে পারেন। চিনি বেশি থাকলে ঐ খাবারে ক্যালরিও বেশি থাকবে। এই অতিরিক্ত ক্যালরি আমাদের শরীরের জন্য ক্ষতিকর।

৩. চিনির বিকল্প খাদ্য খাওয়া
সাদা চিনির বিকল্প হিসেবে খেজুরের চিনি, স্টেভিয়া, আগাভে নির্যাস ইত্যাদি ব্যবহার করতে পারেন। কমার্শিয়াল সুগার ফ্রি খাবার আর কৃত্রিম চিনি এড়িয়ে চলুন।
৪. বাড়িতে চিনি না রাখা
চিনি ছাড়ার বা কমানোর সহজ একটা উপায়, বাড়িতে সাদা চিনি না রাখা।
এসব উপায় অবলম্বন করে দেখতে পারেন। তবে চিনি হঠাৎ করে না ছেড়ে আস্তে আস্তে কমানো বেশি কার্যকর। আর যাঁরা একবারে ছাড়তে চাচ্ছেন, তাঁরা ছাড়ার পর কিছুদিন শারীরিক কিছু সমস্যা অনুভব করতে পারেন। যেমন শরীরে দুর্বলতা অনুভব করা। তাছাড়া এসময় মুড সুইং হওয়াটা স্বাভাবিক।

চিনি ছাড়ার সময় কিছুদিন এসব সহ্য করে থাকতে পারলেই, পরবর্তীতে এই সমস্যা থাকেনা। অনেকেই হয়তো নিজের জীবন নিয়ে উদাসীন। ধৈর্য্য ধরে রাখতে পারছেন না। তবে এটা মনে রাখা উচিত, শরীর সুস্থ না থাকলে তা মনের ওপর প্রভাব ফেলে। তাই ভালো থাকার জন্য রসনা সামলে চিনি ছেড়ে দিলেই ভালো।
তথ্যসূত্র : হেলথলাইন, টাইমস এন্টারটেইনমেন্ট
ছবি: পেকজেলস ডট কম