ফুড বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনালের আয়োজনে বসুন্ধরা কনভেনশন সেন্টারের ৪ নম্বর হলে অনুষ্ঠিত হয়েছে কফি ফেস্টিভ্যালের দ্বিতীয় আসর। কফি ছাড়াও খাবার ও খাবার প্রক্রিয়াজাত প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে এই উৎসবে। এই আয়োজনে মিডিয়া পার্টনার ছিল হাল ফ্যাশন।
হলরুমের এক পাশজুড়ে ছিল কফি ভেন্ডর, রোস্টার, মেশিনারি ও নানা ধরনের কফি। এই অংশে উপস্থিতি ছিল কিভা হান, নেসক্যাফে, স্মিথস, অ্যারাবিকা, দ্য ভিঞ্চি, বারিস্তা টুলস, ব্রুনিক, টিউলিপ কফি ফার্মিং অ্যান্ড রোস্টারি, কফি ল্যাব, ইন্ডালজ, ইস্ট বেঙ্গল কফি রোস্টার্সরা।
বিভিন্ন আউটলেটে দেখা গেছে হোম ও কমার্শিয়াল উভয় ধরনের কফি মেশিনারি—ম্যানুয়াল ব্রুয়িং সেটআপ, অটোমেটেড কফিমেকার থেকে শুরু করে বারিস্তা হবার, প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম সবই ছিল সেখানে।
টিউলিপ কফি ফার্মিংয়ের স্বত্বাধিকারী কৃষিবিদ টিউলিপ জানান, তাঁরা শেরপুরে কফির চাষ করছেন। তাঁদের উৎপাদিত কফি বিন আন্তর্জাতিক মানের; অন্তত ৯০ থেকে ৯৫ শতাংশ। ভবিষ্যতে দেশের বাজারে আমদানিনির্ভরতা কমিয়ে নিজেদের উৎপাদিত বিন দিয়েই চাহিদা মেটাতে চান তাঁরা।
নর্থ বেঙ্গল কফি রোস্টারসে দেখা যায় গ্রিন বিন থেকে প্রসেসড ও গ্রাউন্ড কফি বিনসের ভিন্ন ভিন্ন স্তর। প্রতিটি ধাপে মান বজায় রাখতে চলে নিবিড় পর্যবেক্ষণ।
কিভা হানে পাওয়া গেছে ভারতীয় মনসুন মালাবার, ভিয়েতনামের কাফি ব্লেন্ড, ইন্দোনেশিয়ার অ্যারাবিকা ও ব্রাজিলের প্রিমিয়াম কফি বিন। আর বারিস্তা টুলসে ছিল ফ্রেঞ্চ প্রেস, মোকা পট, গ্রাইন্ডার, হট প্লেটসহ আধুনিক কফি প্রস্তুতের সরঞ্জাম।
কফি শুধু পানীয় নয়, এটি এখন শিল্প। সে প্রসঙ্গেই কথা হয় আয়োজনের প্রধান সামিত বিন সালামের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘এমন একটি উৎসব আয়োজনের চিন্তা করেছি প্রায় এক দশক আগে। গত বছর তা বাস্তব রূপ পায়। কফির স্বাদ বা ঘ্রাণের বাইরে গিয়ে এই উৎসব দিয়ে আমরা ঢাকাবাসীকে কফিশিল্পের সৃজনশীলতা, আতিথেয়তা, বিনিয়োগ ও শিল্পচর্চার নতুন এক অভিজ্ঞতা দিতে চাই।’
বাংলাদেশে দিন দিন বাড়ছে স্পেশালিটি কফির চাহিদা। তাই এই উৎসব শুধু একটি বাণিজ্যিক আয়োজন নয়, বরং এক সাংস্কৃতিক প্ল্যাটফর্মও, যেখানে দেশের সেরা আর্টিজান কফি ব্র্যান্ড, গুমে ফুড প্রস্তুতকারক এবং আন্তর্জাতিক মানের বারিস্তারা এক ছাতার নিচে মিলিত হয়েছে বলেই তাঁর অভিমত।
এই গরমে কফি ফেস্টিভ্যাল আয়োজন প্রসঙ্গে সামিত বলেন, ‘১ অক্টোবর আন্তর্জাতিক কফি দিবস হলেও এটি আমরা সামার এডিশন বা গ্রীষ্মকালীন সংস্করণ হিসেবে আয়োজন করেছি। এ বছর আরও একবার আয়োজনের পরিকল্পনাও আছে।’
ফেস্টিভ্যালের আকর্ষণীয় সব আয়োজনের মধ্যে ছিল লাতে আর্ট শোকেসিং ও বারিস্তা প্রতিযোগিতা, ব্রু স্কুল ও ওয়ার্কশপ, লাইভ মিউজিক ও আর্ট এক্সিবিশন, মকটেইল মাস্টারক্লাস, দ্য রোস্টার্স ভিলেজ (যেখানে কফি প্রস্তুতির নানা ধাপ হাতে-কলমে শেখানো হয়েছে) ইত্যাদি।
দর্শনার্থীরা দেশের নানা অঞ্চল থেকে আসা কফির স্বাদ নিতে পেরেছেন, শিখেছেন ব্রু করার নানা পদ্ধতি। কফি উৎসাহী দর্শক থেকে শুরু করে পেশাদাররাও অংশ নিয়েছেন এসব কর্মসূচিতে।
ছবি: হাল ফ্যাশন