আমরা সবাই এখন মাইক্রোপ্লাস্টিক ও এর বিভিন্ন মারাত্মক ক্ষতির কথা জানি। পানিতে ভেসে বা মিশে থাকা ক্ষুদ্র প্লাস্টিক কণাকে বলা হয় মাইক্রোপ্লাস্টিক। এই কণাগুলো আমাদের খাওয়ার পানিতে, মাছের শরীরে, এমনকি সমুদ্রের গভীরেও পাওয়া যাচ্ছে। ইকোসিস্টেম ধ্বংস করা ছাড়াও এই উপাদান মানবদেহের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। ক্যানসার থেকে শুরু করে বিভিন্ন দুরারোগ্য ব্যধির কারণ এই মাইক্রোপ্লাস্টিক।
বিজ্ঞানী ও গবেষকরা এখন প্রতিনিয়ত খুঁজে চলেছেন তাই পানিকে মাইক্রোপ্লাস্টিক থেকে মুক্ত করার টেকসই ও সহজ পদ্ধতি। এরই মাঝে সাম্প্রতিক এক গবেষণা দিয়েছে এই সমস্যার এক যুগান্তকারী সমাধান।
আমাদের অতি পরিচিত সবজি ঢ্যাঁড়স আর রান্নাঘরের সাধারণ মসলা মেথির সমন্বয়ে পাওয়া পলিস্যাকারাইড বেশ কার্যকরভাবে দূর করতে পারে পানির এই ক্ষতিকারক মাইক্রোপ্লাস্টিক।
নতুন এই গবেষণায় দেখা গেছে, ঢ্যাঁড়স আর মেথি থেকে পাওয়া প্রাকৃতিক পলিস্যাকারাইড পানিতে থাকা মাইক্রোপ্লাস্টিকের সঙ্গে মিশে দলা বাঁধে। এরপর সেই দলা পানির নিচে ডুবে যায়। ফলে কোনো বিষাক্ত রাসায়নিক ব্যবহার না করেই পানি প্রায় ৯০ শতাংশ পর্যন্ত পরিষ্কার করা যায়। এই গবেষণাটি প্রকাশিত হয়েছে আন্তর্জাতিক জার্নাল এসিএস ওমেগা (ACS Omega) তে। গবেষকরা বলছেন, এই প্রাকৃতিক পদ্ধতি শুধু সমুদ্রের নয়, মিঠা পানি ও ভূগর্ভস্থ পানির ক্ষেত্রেও বেশ ফলপ্রসূ।
গবেষণালব্ধ ফলাফলে বলা হয়, এটি সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক ও বায়োডিগ্রেডেবল। সহজে পরিবেশে মিশে যায়।এতে কোনো বিষাক্ত অবশিষ্টাংশ থাকে না। অথচ এটি যেকোনো পানি পরিশোধনকারী কৃত্রিম রাসায়নিকের চেয়েও বেশি কার্যকর।
ঢ্যাঁড়স ও মেথির মতো সহজলভ্য উপাদান দিয়ে যদি পানি থেকে ক্ষতিকর মাইক্রোপ্লাস্টিক দূর করা যায়, তবে ভবিষ্যতের জন্য তা হতে পারে এক অসাধারণ পরিবেশবান্ধব সমাধান। বিপন্ন এই পৃথিবীতে এমন সমাধানগুলো বাঁচিয়ে রাখে নতুন প্রজন্মের কাছে সুন্দর আগামী তুলে ধরার প্রয়াস। এখন শুধু এই পদ্ধতির বাস্তব ও বাণিজ্যিক প্রয়োগের বিষয়ে অপেক্ষা।
তথ্যসূত্র: এসিএস
ছবি: পেকজেলস ও ইন্সটাগ্রাম