পিকুর ১০ বছর: এই ৭ লক্ষণ মিলিয়ে বলুন তো, আপনি নিজের বা কাছের কারো সঙ্গে মিল খুঁজে পান কিনা
শেয়ার করুন
ফলো করুন

২০১৫ সালে বিখ্যাত নির্মাতা সুজিত সরকারের পরিচালনায় তৈরি হয় বলিউড সিনেমা 'পিকু'। আর দশটা বলিউড সিনেমার মতো চাকচিক্য ছিল না এতে। সাধারণ একটি মেয়ের গল্প। তবে সে যেন সাধারণেই হয়ে উঠেছিল অসাধারণ। মূলচরিত্রে অভিনয় করেন বলিউড কুইন দীপিকা পাড়ুকোন। পিকু চরিত্রটি ঝুলিতে জাতীয় পুরস্কার তো এনে দিয়েছিলই, তারচেয়ে বড় অর্জন ছিল, দর্শকেরা পিকুর সঙ্গে নিজেকে মিলিয়ে ফেলা শুরু করেন এই সিনেমা দেখে। আসলে প্রায় প্রতিটি নারীই যেন এক একজন 'পিকু'। মধ্যবিত্ত বাঙালি পরিবারে জন্ম নেওয়া ভাস্কর ব্যানার্জির মেয়ে পিকু ব্যানার্জি। আর দশটা স্বাধীনচেতা বাঙালি মেয়ের মতোই সে। নিজে রোজগার করে, বুড়ো বাবার যত্ন নেয়। স্বাধীন থাকতে চায়, তবে বিয়েবিমুখও সে নয়। স্বপ্ন দেখে বৌ সাজার। ভাবে একদিন নিজের সংসার হবে তাঁর। চলুন তবে দেখা যাক 'পিকু''র সঙ্গে আপনিও নিজেকে মিলিয়ে ফেলতে পারেন কিনা। হয় তো আপনার কাছের কারো সঙ্গেও আপনি পিকুর মিল খুঁজে পাবেন এই লক্ষণগুলো মিলিয়ে নিয়ে।

স্থপতি পিকু বাবার দেখভালও করে মন দিয়ে
স্থপতি পিকু বাবার দেখভালও করে মন দিয়ে

পেশা ও পরিবার দুটোই সমান গুরুত্বপূর্ণ পিকুর কাছে

পিকু পেশায় একজন স্থপতি। দিল্লির একটি আর্কিটেকচার ফার্মে সে চাকরি করে। নিজে রোজগার করে, তবে থাকে বাবার সঙ্গে। দশটা পাঁচটার চাকরি সামলে অফিসে বুড়ো বাবার দেওয়া মেসেজ তাঁকে বিব্রত করলেও, ৭০ বছর বয়সী বাবার প্রতি দায়িত্ব সে বেশ মনোযোগ দিয়ে পালন করে। করে ঘরের কাজ ও রান্নাবান্নাও।

বিজ্ঞাপন

বাস্তববাদী হলেও কিন্তু পিকু খুব বেশি আবেগী

পিকুর এই বৈশিষ্ট্যের সঙ্গে নিজেকে মিলিয়ে ফেলতে পারবেন আপনিও। পিকুর প্রতিটি সিদ্ধান্ত বেশ বাস্তববাদী৷ বাবার প্রতি দায়িত্ব পালনের কথা ভেবে বিয়ে করছে না সে।

বাস্তবতা বোঝে পিকু
বাস্তবতা বোঝে পিকু
সেই সঙ্গে সে খুব আবেগীও
সেই সঙ্গে সে খুব আবেগীও

এমনকি কলকাতায় পুরনো বাড়ি এভাবেই পড়ে আছে ভেবে বাড়ি বিক্রির সিদ্ধান্তও নেয়। তবে শেষমেষ স্মৃতিকাতর হয়ে তা আর করা হয়ে ওঠে না তার। মায়ের কথা মনে পড়ে, কলকাতায় খুব বেশিদিন থাকা না হলেও নিজের শহর কলকাতা তাকে খুব টানে!

বিজ্ঞাপন

ছোট ছোট জিনিসে আনন্দ খুঁজে পায় পিকু

রোজকার জীবনের হাজারও সমস্যা ও সংঘাত উপেক্ষা করে পিকু আনন্দ খুঁজে নেয় ছোট ছোট জিনিসে।ঠিক আপনার আমার মতোই। দূরের যাত্রায় রাস্তায় গাড়ি থামিয়ে কাঁচের চুড়ি কেনে। কলকাতার রাস্তায় হেঁটে বেড়ায় একটা কাঠি রোল খেতে খেতে।

ছোট ছোট খুশি পিকুকে আপ্লুত করে
ছোট ছোট খুশি পিকুকে আপ্লুত করে
খাওয়াদাওয়াও তাঁর প্রিয় খুব।
খাওয়াদাওয়াও তাঁর প্রিয় খুব।

বাচ্চাদের ভীষণই ভালোবাসে সে। পিকু বোঝে ,জীবনে চলার পথে অনেক কিছুই স্যাক্রিফাইস করে চলতে হলেও , এই ছোট ছোট জিনিসগুলোই জীবনকে করে তোলে অসাধারণ।

সারকাজম আর রসিকতাই পিকুর ভালোবাসার ভাষা

পিকুর চরিত্রটি কিন্তু বেশ রসিক। কাছের মানুষের সঙ্গে মজার রসিকতা সে করেই থাকে। এই সিনেমায় প্রথমত সেই মানুষটি হচ্ছেন ভাস্কর ব্যানার্জি। এই চরিত্রে দুর্দান্ত অভিনয় করেছেন অমিতাভ বচ্চন।

রসিকতা করে, আর বোঝেও পিকু
রসিকতা করে, আর বোঝেও পিকু
রসিকতার রসায়নেই এর স্পেশাল পিকু ও রানার সম্পর্ক
রসিকতার রসায়নেই এর স্পেশাল পিকু ও রানার সম্পর্ক

দ্বিতীয় চরিত্রটি হচ্ছে রানা, এই সিনেমায় পিকুর সম্ভাব্য প্রেমিক, যে চরিত্রে অভিনয়ের জন্য ইরফান খান ভেসেছিলেন প্রশংসায়। আপনার ভালোবাসার ভাষা বা 'লাভ ল্যাংগুয়েজ' যদি হয় কাছের মানুষের সঙ্গে রসিকতা করা,আপনি তাহলে একজন পিকু।

পিকুর মিনিমাল লুক , কী দারুণ!

এই সিনেমায় পিকু পুরোদস্তুর একজন নান্দনিক বাঙালি কর্পোরেট নারী। খুবই সাধারণ লুকে দীপিকা পাড়ুকোন মাত দিয়েছেন অনেক গ্ল্যামারাস সুন্দরীদেরও। একরঙা ও প্রিন্টের সুতি কুর্তি। কখনো তার  সঙ্গে কন্ট্রাস্ট একটি স্কার্ফ। পিকুর এমন আরাম আরাম সাজপোশাক মন কেড়েছে সবার।

সাধারণ লুকেই অসাধারণ পিকু
সাধারণ লুকেই অসাধারণ পিকু

এছাড়াও একদম মিনিমাল মেকআপ ও হালকা লিপস্টিকের সঙ্গে চোখে গাঢ় কাজল আর কালো টিপ পিকুর বরাবরের সঙ্গী। দশবছর আগে এই সিনেমা মুক্তির পর সুতি কুর্তির সঙ্গে কালো টিপ ,কাজল আর কাঠের চুড়ির লুক হয়ে উঠেছিল হালের ক্রেজ। আপনিও যদি ভালোবাসেন এমন সাজ ,বলতে বাঁধা নেই ,আপনার মাঝেই আছে পিকুর বাস।

স্বাধীনচেতা হলেও ,বিয়েবিমুখ নয়

নারীরা স্বাধীনচেতা হলেই হয়ে যান বিয়েবিমুখ; চিরাচরিত এই ভুল ধারণার মুখে সপাটে আঘাত করে পিকু চরিত্রটি। পিকু নিজে আয় করে ,নিজের ও বাবার দেখভাল ভালোই করতে পারে সে। তবে বিয়ের স্বপ্নও দেখে। রাস্তা থেকে লালচুড়ি কেনে।

গাঢ় কাজল আর সোনার দুলে সাজায় পিকু নিজেকে
গাঢ় কাজল আর সোনার দুলে সাজায় পিকু নিজেকে
পিকুও স্বপ্ন দেখে মনের মানুষের সঙ্গে জীবন কাটানোর
পিকুও স্বপ্ন দেখে মনের মানুষের সঙ্গে জীবন কাটানোর

নিজেকে সাজায় সোনার দুলে। এসব ছোট ছোট চমৎকার দৃশ্য পিকুর বিয়ে করার ইচ্ছার বহিঃপ্রকাশ। রানাকে তো সে জানিয়েও দেয় ,বিয়ে সে করবে। তবে কেউ যদি তার সত্তর বছরের শিশু, অর্থাৎ তার বাবাকে দত্তক নিতে হবে। বাবার প্রতি দায়িত্ব অবহেলা করতে পারবে না সে।

ক্লান্তিতে নীরবতা চাই তার

কখনো কখনো জীবন নিয়ে বেশ ক্লান্ত হয়ে পড়ে সে। তখন একা একা শহর ঘুরে বেড়ায়। বসে থাকে বেনারসের এক ঘাটে।

একা একা বসে থাকে পিকু এভাবে
একা একা বসে থাকে পিকু এভাবে
মাঝে মাঝে খুব ক্লান্ত লাগে পিকুর। আবার একাও লাগে নিজেকে
মাঝে মাঝে খুব ক্লান্ত লাগে পিকুর। আবার একাও লাগে নিজেকে

ক্লান্তিতে সকল শব্দ থেকে দূরে যেতে চায় সে। কখনও কখনও জীবনের সকল ব্যস্ততা থেকে এমন পালিয়ে যাওয়ার ইচ্ছা যদি হয় আপনারও ,আপনি নিজেকে মিলিয়ে ফেলবেন পিকুর সঙ্গে।

ছবি: ইন্সটাগ্রাম

প্রকাশ: ১০ মে ২০২৫, ০৬: ০০
বিজ্ঞাপন