এত কিছু ছাপিয়েও পাওয়ার কাপল বিরাট-আনুশকার গভীর ভালোবাসার রহস্য কী
শেয়ার করুন
ফলো করুন

বিরাট কোহলি তাকিয়ে আছেন গ্যালারির দিকে, সেখানে দাঁড়িয়ে স্ত্রী আনুশকা শর্মা। একদৃষ্টে তাকানো, চোখে চোখ ,মুখে হাসি। চুমু খাচ্ছেন গলায় চেইনে ঝোলানো বিয়ের আংটিতে- ক্রিকেটপ্রেমী দর্শকের কাছে এ দৃশ্য পুরোনো হলেও খুবই প্রিয়। কোটি দর্শকের চোখে সে মুহূর্ত হয়ে ওঠে আবেগের প্রতীক। তারকা ক্রিকেটার কোহলি ও বলিউড অভিনেত্রী আনুশকা শর্মা সম্পূর্ণ দুই মেরুর দুজন মানুষ। অথচ তাঁদের দেখলে বোঝা যায়  বিপরীত মেরু পরস্পরকে আকর্ষণ করে কথাটি ঠিক কতটা সত্য।

তাঁদের দেখলে বোঝা যায়  বিপরীত মেরু পরস্পরকে আকর্ষণ করে কথাটি ঠিক কতটা সত্য
তাঁদের দেখলে বোঝা যায় বিপরীত মেরু পরস্পরকে আকর্ষণ করে কথাটি ঠিক কতটা সত্য

চুপচাপ আনুশকা আর ফান লাভিং বিরাট। তাঁদের সম্পর্কের শুরু ২০১৩ সালে, একটি বিজ্ঞাপনের শুটে। পরিচয়, বন্ধুত্ব এ থেকে প্রেম। সহজ ছিল না এই পথচলা। বারবার তাঁরা হয়েছেন ট্রল ও কটাক্ষের শিকার। বিশেষ করে ২০১৫ সালের ঘটনার কথাই বলতে হয়। যখন বিশ্বকাপের সময়ে কোহলির ব্যর্থতার দায়ও এসে পড়েছিল আনুশকার ঘাড়ে। বিরাটের ভক্তরা আক্ষেপ করে বলেছিলেন, আনুশকা বিরাটের জন্য অশুভ। কেউ কেউ হয়ে উঠেছিলেন হিংস্র। মবের শিকার হওয়ার পরেও আনুশকার হাত ছাড়েননি বিরাট। কারণ বিরাটের কাছে তিনি শুধু তাঁর প্রেমিকা নন,বন্ধু ও সহযোগীও বটে। যেকোনো ম্যাচ জিততে গ্যালারিতে আনুশকার উপস্থিতি তাঁর জন্য প্রয়োজনীয়।

বিজ্ঞাপন

আইপিএল জয়ের উদযাপনে পদদলিত হয়ে হতাহতের মতো ঘটনার পরেও জয়ের মুহূর্তে পাওয়ার কাপল বিরাট-আনুশকার আলিঙ্গন আর অশ্রুসজল আবেগী মুহূর্তটি সবাইকে কাপল গোলস দিচ্ছে। কী তাঁদের এই সম্পর্কের গভীরতার রহস্য? ২০১৭ সালে তাঁরা বিয়ে করেন ইতালির টাসকানির এক শান্ত ভেন্যুতে। স্বল্প সংখ্যক অতিথি, একেবারেই পরিবারের এবং কাছের কিছু মানুষের উপস্থিতিতে। ছিল না বিশেষ কোনো আড়ম্বর। আনুশকা যখন বিয়ের পিঁড়িতে বসেন ,তাঁর বয়স ছিল মাত্র উনত্রিশ বছর।

আনুশকা যখন বিয়ের পিঁড়িতে বসেন ,তাঁর বয়স ছিল মাত্র উনত্রিশ বছর
আনুশকা যখন বিয়ের পিঁড়িতে বসেন ,তাঁর বয়স ছিল মাত্র উনত্রিশ বছর
বিরাটের সঙ্গে বন্ধুত্ব আনুশকার আস্থার জায়গা
বিরাটের সঙ্গে বন্ধুত্ব আনুশকার আস্থার জায়গা

একজন বলিউড তারকার জন্য বিয়ের বয়স হিসেবে এটি খুব বেশি নয়। তাছাড়া তিনি তখন ছিলেন ক্যারিয়ারে সাফল্যের চূড়ায়। তবে কেন নিলেন এমন সিদ্ধান্ত? একাধিক সাক্ষাৎকারে আনুশকা এ প্রশ্নের উত্তরে হেসে বলেছেন,নিজের একটা ছোট্ট পরিবার হবে এমনই স্বপ্ন দেখছেন তিনি। এমনও হতে পারে একটা সময়ে নিজেকে সিনেমার জগৎ থেকে সরিয়েও নিতে পারেন। তাছাড়া, বিরাটের সঙ্গে বন্ধুত্ব তাঁর আস্থার জায়গা যা সারাজীবন নিজের কাছে ধরে রাখতে চান তিনি।

বিজ্ঞাপন

কথা রেখেছেন অভিনেত্রী। এই দম্পতির জীবনে নতুন অধ্যায় যোগ হয় ২০২১ সালে।  যখন প্রথম সন্তান, কন্যা ভামিকার জন্ম হয় । ভামিকা তাঁদের জীবনের আশীর্বাদ। ভালোবাসার প্রতীক। এরপর এল পুত্র অকয়। বিরাট আনুশকার পৃথিবীতে নতুন শিশু।

পরিবারই সবার আগে তাঁদের দুজনের কাছেই
পরিবারই সবার আগে তাঁদের দুজনের কাছেই

সেই ভালোবাসার প্রতিচ্ছবি দেখা গেল এবার আইপিএল ফাইনালেও। শেষ ওভারের নাটকীয় জয়ের পর কোহলি যখন জার্সি খুলে উল্লাস করছেন, তখনই ক্যামেরা ঘুরে আসে আনুশকার দিকে। তাঁর চোখে জল এবং মুখে আনন্দের ছায়া। খেলা শেষে আনুশকা নেমে আসেন মাঠে।

চোখে জল এবং মুখে আনন্দের ছায়া। খেলা শেষে আনুশকা নেমে আসেন মাঠে।
চোখে জল এবং মুখে আনন্দের ছায়া। খেলা শেষে আনুশকা নেমে আসেন মাঠে।
এমন একটা মুহূর্তের জন্য এক জীবন পার করে দেওয়া যায়
এমন একটা মুহূর্তের জন্য এক জীবন পার করে দেওয়া যায়

মাঠে ও টিভি পর্দার ওপারে বসে থাকা দর্শক সাক্ষী হয় এক সুন্দর মুহূর্তের। ট্রফি হাতে নিয়ে বিরাট এই জয়কে শুধু দলের নয়,বরং তাঁর পরিবারের বলেও দাবী করেন।

এই দম্পতির এমন সফল সমীকরণের রহস্য কী? আসলে কী করলে এই বিচ্ছেদের যুগে এসেও এমন ভালো থাকা যায়? বিরাট আনুশকা কে দেখে এমন ভাবেন অনেকেই। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই সম্পর্কের বড় শক্তি পারস্পরিক সম্মান। কাজের ক্ষেত্র ভিন্ন হলেও তাঁরা একে অপরের সাফল্যে সমানভাবে অংশ নেন। সম্মান করেন সঙ্গীর কাজকে।

এই দম্পতির এমন সফল সমীকরণের রহস্য কী
এই দম্পতির এমন সফল সমীকরণের রহস্য কী
বিরাট-আনুশকার গভীর ভালোবাসা আমাদের বারবার কাপল গোলস দেয়
বিরাট-আনুশকার গভীর ভালোবাসা আমাদের বারবার কাপল গোলস দেয়

এছাড়াও নিজেদের ব্যক্তিগত জীবনে অন্য কাউকে হস্তক্ষেপ করতে দেন না দুজনই।তাঁদের ব্যক্তিগত জীবন যেন একান্তই ব্যক্তিগত। তা নিয়ে মিডিয়া বা সোশ্যাল মিডিয়াতেও খুব একটা মাতামাতি করতে দেখা যায় না তাঁদের। সব মিলিয়ে তাঁরা এ যুগের সুখী এক দম্পতি।অনেকেই বলেন, এই ভাইরাল হওয়ার যুগে কাপল গোলস হ্যাশটাগ নিয়ে মাতামাতি না করা এই জুটি যেন সত্যিকারের কাপল গোলসের উদাহরণ। যে সম্পর্কে ব্যক্তিস্বাধীনতা, পারস্পরিক সহানুভূতির শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান আছে। তাই তো এত কিছু ছাপিয়েও পাওয়ার কাপল বিরাট-আনুশকার গভীর ভালোবাসা আমাদের বারবার কাপল গোলস দেয়, মুগ্ধ করে।

ছবি: ইন্সটাগ্রাম

প্রকাশ: ০৯ জুন ২০২৫, ১৪: ১৯
বিজ্ঞাপন