আপনার জীবনে টক্সিক কেউ নেই তো
শেয়ার করুন
ফলো করুন

জীবনে সঠিক ব্যক্তির আশপাশে থাকা খুব প্রয়োজন। এতে যেমন ব্যক্তিত্বের উন্নতি হয়, তেমনি ব্যক্তির মানসিক স্বাস্থ্যও ভালো থাকে। তাই নেতিবাচক আবহ সৃষ্টিকারী তথা টক্সিক ব্যক্তিদের এড়িয়ে চলাই ভালো। এ ধরনের মানুষ জীবনে জড়িয়ে থাকা মানেই মানসিক শান্তির বারোটা। তবে অনেক সময় দেখা যায়, আমরা টক্সিক ব্যক্তিদের সঙ্গেই বাস করছি, কিন্তু তাঁদের উপস্থিতি টের পাই না।

হয়তো আপনার বন্ধুবান্ধব বা নিকটাত্মীয়দের মধ্যেই এই ধরনের ব্যক্তিদের বিচরণ। তাঁরা আপনার জীবনকে প্রতিনিয়ত প্রভাবিত করছেন, কিন্তু আপনি তাঁদের আপন কেউ ভেবে বসে আছেন। তাঁদের টক্সিক আচরণ মজার ছলে উড়িয়ে দিচ্ছেন। এমন সম্পর্ক আপনার জীবনে মোটেও ভালো কিছু বয়ে তো আনবে না। বরং ভবিষ্যতে আপনাকে এর জন্য নানা সমস্যার মুখোমুখি হতে হবে। তাই এই বিষয়ে সতর্ক থাকা বেশ জরুরি। চলুন জেনে নেওয়া যাক, আপনার জীবনে টক্সিক কোনো ব্যক্তির অস্তিত্ব রয়েছে কি না—

নিজেকে অসহায় সাজিয়ে সুবিধা নেওয়া

টক্সিক ব্যক্তিরা সব সময় ভিক্টিম কার্ড খেলার চেষ্টা করেন। অর্থাৎ তাঁরা কোনো ভুল করে থাকলে, কখনোই তা স্বীকার করবেন না। বরং নিজেকে অসহায় কিংবা ভিক্টিম সাজিয়ে সবার সামনে উপস্থাপন করার প্রবণতা তাঁদের মধ্যে প্রবল। ভুল হতেই পারে, তবে ভুল স্বীকার করতে পারাও একটি গুণ। তাই যাঁরা সব সময় ভিক্টিম কার্ড খেলেন বা নিজেকে অসহায় সাজিয়ে সুবিধা নেওয়ার চেষ্টা করেন, তাঁরা আপনার জন্য রেড ফ্ল্যাগ। এই ধরনের মানুষ যত তাড়াতাড়ি সম্ভব জীবন থেকে মুছে ফেলুন।

বিজ্ঞাপন

সবার মনোযোগ আকর্ষণের প্রবণতা

এই ধরনের ব্যক্তিরা সাধারণত নার্সিসিস্ট কিংবা আত্মপ্রেমী হয়ে থাকেন। তাঁরা সব সময় চান, সবাই শুধু তাঁদের দিকেই মনোযোগ দিক। খেয়াল করলে দেখবেন, যদি আপনার জীবনে এই স্বভাবের কেউ জড়িয়ে থাকেন, তাঁরা সব সময় সবার মনোযোগ নিজের দিকেই ধরে রাখার চেষ্টা করছেন। যেকোনো কথোপকথনে নিজেকে এগিয়ে রাখার চেষ্টা তাঁদের মধ্যে স্পষ্ট, যা আপনার মধ্যে একধরনের হীনম্মন্যতা সৃষ্টি করবে। তাই এই ধরনের ব্যক্তিদের এড়িয়ে চলাই ভালো।

বিজ্ঞাপন

অন্যকে অপমান করার চেষ্টা

টক্সিক ব্যক্তিদের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো অন্যদের অপমান করা। তাঁরা যেকোনো সময় যে কারও সামনে আপনাকে অপমানসূচক কথা বলতে দ্বিধাবোধ করবে না। মোট কথা এই ধরনের ব্যক্তিরা অন্যকে সম্মান দিতে জানেন না। সব সময় অন্যদের ছোট করে কথা বলে থাকে। এমনকি তাঁদের কথায় কেউ আঘাত পেলেন কি পেলেন না, তাতেও তাঁদের কোনো কিছুই যায় আসে না, যা আপনাকে করে তুলতে পারে মানসিকভাবে বিধ্বস্ত। যদি কেউ আপনার সঙ্গে প্রায়শই এই ধরনের আচরণ করে থাকেন, সময় থাকতে এমন ব্যক্তি থেকে দূরে সরে যাওয়া উচিত।

সর্বদা সমালোচক

আপনার যেকোনো মতামতকে প্রশ্নবিদ্ধ করা, সঠিক সিদ্ধান্তগুলোকেও ভুল প্রমাণের চেষ্টা। অর্থাৎ সব সময় অন্যের সমালোচনায় মগ্ন থাকা টক্সিক ব্যক্তিদের অন্যতম লক্ষণ। এমনকি, আপনার পোশাক, লুক, আচার-আচরণ সবকিছুতেই তাঁদের একটি রায় থাকবেই, যা আপনার আত্মবিশ্বাসকে ভেঙে দেবে। যদিও গঠনমূলক সমালোচনা খারাপ কিছু নয়, তবে সব সময় সব কিছু নিয়ে সমালোচনাও ভালো কিছু নয়। আপনার আশপাশে অবশ্যই এমন মানুষ থাকা উচিত, যাঁরা গঠনমূলক সমালোচনার পাশাপাশি আপনার ভালো কাজে আপনার প্রশংসাও করবে, যা আপনার জন্য অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করবে।

তাঁরা শুনতে চান না

টক্সিক ব্যক্তিরা অন্যের কথা মনোযোগ দিয়ে শুনতে পছন্দ করেন না। খেয়াল করলে দেখবেন, এই ধরনের ব্যক্তিরা সাধারণত যেকোনো কথোপকথনের সময় অন্যের মনোভাব প্রকাশে বাধা দেন, যা একসময় কথা বলার আগ্রহকেই নষ্ট করে দেন। তাঁরা শুধু নিজের কথাই বলবেন কিন্তু আপনাকে বলার সুযোগ দেবেন না।

এ ছাড়া টক্সিক ব্যক্তিদের মধ্যে সহানুভূতি কিংবা সহমর্মিতার অভাব থাকে। তাঁরা কখনোই কারও প্রতি সহানুভূতিশীল কিংবা সহমর্মী হন না। আপনার খারাপ সময়ে তাঁদের পাশে পাবেন না। তাঁরা কারও প্রতি দায়িত্বপরায়ণ এবং শ্রদ্ধাশীল হন না।

স্বার্থপরতা তাঁদের মধ্যে প্রবল।

তাই জীবনে টক্সিক কোনো ব্যক্তির অস্তিত্ব থাকা মানেই জীবন দুর্বিষহ। তাঁদের থেকে যত দ্রুত সম্ভব দূরত্বের রেখা টেনে নেওয়াই ভালো।

ছবি: হাল ফ্যাশন ও পেজজেলসডটকম

প্রকাশ: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০১: ০০
বিজ্ঞাপন