সবাই সারাক্ষণ বিয়ের কথা জিজ্ঞেস করলেও যে ৫ কারণে পাত্তা দেবেন না
শেয়ার করুন
ফলো করুন

বিয়ে মানব জীবনের এক গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে যুগ যুগ ধরে। পারিবারিক কাঠামোর ভিত্তি এই দাম্পত্য সম্পর্কের হাত ধরেই গড়ে উঠছে আদিকাল থেকে। কিন্তু একজন ব্যক্তির অর্জন, সাফল্য আর জীবনের পূর্ণতার মাপকাঠি কি কখনো তার ম্যারিটাল স্ট্যাটাস বা বৈবাহিক সম্পর্ক হতে পারে! বিশেষ করে আমাদের মতো দেশে কোন মেয়ে ত্রিশের কোঠায় পা দিলেই নিজের বাবা মা, ভাই বোন থেকে শুরু করে পরিবার ও সমাজের সকলে উঠেপড়ে লাগেন তার বিয়ে দিতে। যেন বিয়ে করাই জীবনের একমাত্র উদ্দেশ্য। প্রতিটি মানুষের স্বাধীনতা আছে নিজের পছন্দের মানুষকে বিয়ে করার আর যখন সঠিক সময় মনে হবে নিজের কাছে, শুধুমাত্র তখনই এই বন্ধনে আবদ্ধ হওয়া। কিন্তু একজন মানুষ শিক্ষাগত যোগ্যতা, পেশাগত যোগ্যতা, মানবীয় ও সামাজিক গুণাবলি এই সবকিছুর অধিকারী হলেও তাকে যেন হেরে যাওয়া মানুষ বা লুজারের তকমা দেয় সকলে, যদি তিনি অবিবাহিত থাকেন।

ঈদুল আজহার নাটক তিথিডোর-এ আমরা এরকম একটা পরিস্থিতি দেখি
ঈদুল আজহার নাটক তিথিডোর-এ আমরা এরকম একটা পরিস্থিতি দেখি

সম্প্রতি ভিকি জাহেদ নির্মিত ঈদুল আজহার নাটক তিথিডোর-এ আমরা এরকম একটা পরিস্থিতি দেখি। এখানে নিশাত নামের মূল চরিত্রে রয়েছেন দেশের জনপ্রিয় অভিনেত্রী মেহজাবীন চৌধুরী। প্রেমের সম্পর্কে তিক্ত অভিজ্ঞতার পরে বিয়ে নিয়ে বীতশ্রদ্ধ হয়ে ওঠা এই ত্রিশোর্ধ্ব নিশাতের মতো আমাদের সমাজের অনেককেই এভাবে সারাক্ষণ বিয়ের কথা জিজ্ঞেস করেন সকলে। তাঁর বয়স হয়ে যাওয়া আর শারীরিক সৌন্দর্য নিয়ে কথা তুলে আত্মবিশ্বাস তলানিতে পৌঁছে দেয় সবাই, যেখানে তাদের জীবনে এই বিয়ের কোনো প্রয়োজনীয়তা বা প্রভাব নেই। এ আসলে এক সামাজিক কুপ্রথা, যা মানুষকে হতাশায় ডুবিয়ে দেয় এমনকি দিতে পারে আত্মহত্যার প্ররোচনাও। তাই নিজের কথা ভাবুন। আপনি কী চান, কখন চান সে অনুযায়ী জীবনকে সাজান। বিয়ে হচ্ছে না, বিয়ে করছ না কেন বলে কান ঝালাপালা করলেও এতে পাত্তা দেওয়ার কোনোই দরকার নেই। আর তার পেছনে যুক্তিসংগত কারণও আছে কিছু।

বিজ্ঞাপন

১. আপনার জীবনটা শুধুই আপনার

আপনার জন্য কী ভালো তা আপনাকেই বুঝতে হবে। সেটা তাড়াতাড়ি বিয়ে করাও হতে পারে। আবার বুঝেশুনে বা ক্যারিয়ার গুছিয়ে নিয়ে তারপর বিয়ের কথা ভাবলে যদি আপনার জন্য তা ভালো হয়, তাহলে সেটাই করুন। আপনার জীবন শুধুই আপনার। আর আপনার সুখ-দুঃখ, চাওয়া-পাওয়াও।

আপনি একাকী থাকলে আপনার কিছু কষ্ট হবে
আপনি একাকী থাকলে আপনার কিছু কষ্ট হবে

২. দুষ্ট গরুর চেয়ে শূন্য গোয়াল ভালো

আপনি একাকী থাকলে আপনার কিছু কষ্ট হবে। কারও সঙ্গে সুখ বা দুঃখ ভাগ করে নিতে না পারার কষ্ট। খুব ক্লান্ত হয়ে গেলে একটা কাঁধ না থাকার কষ্ট। কিন্তু এই কষ্টগুলো যদি বিয়ের পরেও রয়ে যায়? আপনার সঙ্গী যে এই শূন্যতা পূরণ করতে পারবেন, তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। তাই শুধু এ কারণে বিয়ে করা বোকামি।

৩. বিবাহিতরা যে সবাই সুখী তা নয়

যারা সারাক্ষণ আপনাকে বিয়ে নিয়ে অতিষ্ঠ করে তুলছেন, তাদের মধ্যে যারা বিবাহিত, তাঁরা কি সবাই সুখী? লেজকাটা শেয়ালেরা সব শেয়ালের লেজ কাটতে তৎপর হয়। আর তা অকারণে তাই শুধু সমাজের চাপে যেনতেন প্রকারে একটা বিয়ে করে নিলেই সব সমস্যার সমাধান হবে না।

বিজ্ঞাপন

৪.  সঠিক সময় ও সঠিক সঙ্গীর জন্য অপেক্ষা করাই যায়

কে যে কার জন্য সঠিক, তা কেউ জানি না আমরা। আবার বিয়ে আগে বা পরে করলে কী হবে সেটিও কপালের লিখন। তারপরেও বুদ্ধি বিবেচনা খাঁটিয়েই জীবনের এত বড় সিদ্ধান্তটি নিতে হবে। এক সময় কারও ব্যাপারে হয়তো মনে হবে যে এই মানুষটির জন্যই এত দিন অপেক্ষা করেছেন আপনি। পারস্পরিক সমঝোতা তখন সম্পর্কটিকে দেবে স্থিরতা ও স্থায়ীত্ব।

৫. বিয়ে করলেই থেমে যাবে না সবার কথা

বিয়ে করলে বলবে বাচ্চা কবে হবে। বাচ্চা হলে বলবে আরেকটা বাচ্চা কবে হবে। সমাজের মানুষের মুখের কথা চলতেই থাকবে এভাবে। আপনি যদি মনে করেন যে বিয়ে করে নিলেই সবাই আর এভাবে জ্বালাবে না, আপনি ভুল করছেন। তাই দিন শেষে নিজের কথা ভাবুন। যদি কারও সঙ্গে ভালো লাগা বা ভালোবাসার সম্পর্ক থাকে তবে তাঁর সঙ্গে খোলামেলা আলোচনা করে ঠিক করুন কবে বিয়ে করলে ভালো হয়। আর তা না হলে নিজের মনকে জিজ্ঞেস করুন। এটুকুই যথেষ্ট।

এখনো বিয়ে না করে আপনি এক অপরাধ করে ফেলেছেন, এই ধারণা থেকে বের হয়ে নিজেকে আত্মবিশ্বাসী করে তুলুন
এখনো বিয়ে না করে আপনি এক অপরাধ করে ফেলেছেন, এই ধারণা থেকে বের হয়ে নিজেকে আত্মবিশ্বাসী করে তুলুন

যারা এখন কবে বিয়ে করবে বলে আপনার কান ঝালাপালা করে দিচ্ছে, তাদের আপনি আর খুঁজে পাবেন না কোনো সমস্যায় পড়লে। এখনো বিয়ে না করে আপনি এক অপরাধ করে ফেলেছেন, এই ধারণা থেকে বের হয়ে নিজেকে আত্মবিশ্বাসী করে তুলুন। আর নিজের জীবনের এই গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিজে ও আপনার আপনজনদের সঙ্গে কথা বলে নিন। সমাজের চাপে নয়।

ছবি: মেহজাবীন চৌধুরীর ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রাম

প্রকাশ: ২৫ জুন ২০২৪, ১১: ৩৪
বিজ্ঞাপন