৫০ বছর ঊর্ধ্ব দম্পতিদের মধ্যে বিচ্ছেদ এখন একটি ট্রেন্ডে পরিণত হয়েছে, বিশেষ করে মার্কিন মুলুকে। তাঁরা দীর্ঘদিন একসঙ্গে থাকার পর বিচ্ছেদের দিকে হাঁটছেন। বেশ কিছু বছর একসঙ্গে কাটানোর পর ৫০ বছর বা তার বেশি বয়সী দম্পতিদের মধ্যে এই বিবাহবিচ্ছেদকে বলা হচ্ছে ‘গ্রে ডিভোর্স’।
বোলিং গ্রিন স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞানের অধ্যাপক সুসান ব্রাউন, এই টার্মটি উদ্ভাবন করেছেন। পরিসংখ্যান বলছে বেবি বুমার প্রজন্ম (১৯৪৬ থেকে ১৯৬৪তে জন্মগ্রহণ করা জেনারেশন) এই বিচ্ছেদের দিকে বেশি ঝুঁকছেন। ২০২২ সালের একটি গবেষণা বলছে, এখন যত বিবাহ বিচ্ছেদ হচ্ছে, তার ৩৬ শতাংশ দম্পতিই ৫০ বা আরও বেশি বয়সী। ৬৫ বছর ও তার ঊর্ধ্ব বয়সীদের মাঝেও এই বিচ্ছেদের হার সবচেয়ে বেশি।
এই বয়সসীমার মানুষেরা ১৯৯০ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত যত বিচ্ছেদ হয়েছে, এখন হচ্ছে তার দ্বিগুণ। এর পেছনে জটিল বেশ কিছু প্রভাবক আছে। এমটি নেস্ট সিনড্রোম, অগ্রাধিকার পরিবর্তন, আর্থিক টানাপোড়েন বিভিন্ন কারণে এই ডিভোর্স বাড়ছে।
নারীরাই এক্ষেত্রে প্রথম পদক্ষেপ নিচ্ছেন। গ্রে ডিভোর্সের প্রধান কারণগুলোর মধ্যে অন্যতম হল দীর্ঘদিন একসঙ্গে থাকার পর একজনের উপর তুলনামূলক বেশি চাপ। সবকিছু মেনে চলা ও বেশির ভাগ দায়িত্ব একজন উপর এসে পড়া। একটানা এসব সামলে এই বয়সে এসে তাঁরা নতুন করে ভাবতে চান। তখনই বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত আসে।
আবার অনেক সময় একে অপরের ব্যক্তিগত আগ্রহ আর প্রয়োজনের মধ্যেও পার্থক্য তৈরি হয়। এই অমিল থেকেও সম্পর্কের অবনতি হতে থাকে। দম্পতিরা একসঙ্গে থাকলেও মানসিকভাবে অনেকটাই আলাদা হয়ে যাওয়াকে বলা হচ্ছে 'নীরব বিচ্ছেদ' । দীর্ঘদিন এমন অবস্থা থেকেই সম্পর্ক এগিয়ে যায় ‘গ্রে ডিভোর্স’-এর দিকে।
এছাড়া, ব্যক্তিগত স্বাধীনতা আর আত্মবিশ্বাসের গুরুত্ব বেড়েছে আমাদের। সঙ্গীর টক্সিক ব্যবহারে অনেকেই সম্পর্কের মধ্যে নিজেদের সুখ-স্বস্তি খুঁজে পান না। তখন অনেকেই মনে করেন আর একসঙ্গে থাকার প্রয়োজন নেই ।
আবার অনেক ক্ষেত্রে মানুষের অগ্রাধিকার পরিবর্তন হয়। এতদিন হয়ত নিজেকে গুরুত্ব না দিয়ে সন্তান পরিবার-পরিজনকে গুরুত্ব দিয়েছেন। একটা বয়স শেষে তাঁরা মনে করেন এবার নিজেকে গুরুত্ব দিতে হবে। তখনো বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত আসে।