ভালো থাকতে চাইলে এই ৫ ধরনের মানুষ এড়িয়ে চলুন
শেয়ার করুন
ফলো করুন

আপনার আশপাশেই এমন অনেক মানুষ আছেন, যাঁদের কারণে আপনি ভালো থাকতে পারছেন না। আর আশপাশের মানুষের কথা ভাবলে আমাদের প্রথমেই মাথায় আসে পরিবার ও বন্ধুবান্ধবের কথা। সে অর্থে পরিবার বদলানো বা বাছাই করার সুযোগ না থাকলেও বন্ধু বা সঙ্গী নির্বাচনের ব্যাপারে সচেতন আমরা হতেই পারি। আপনার জীবনের প্রতিটি স্তরে যেসব মানুষ প্রতিনিয়ত নানাভাবে প্রভাব ফেলছে, তাদের বাছাই করতে সতর্ক না হলে শেষটায় আপনাকেই ভোগান্তি পোহাতে হবে। তাই বন্ধু নির্বাচনের ক্ষেত্রে এই পাঁচ ধরনের মানুষকে একেবারে এড়িয়ে চলুন।

১. পরচর্চার অভ্যাস আছে যাদের

আমরা কমবেশি সবাই এমন কাউকে চিনি, যাঁর কাছে সবার হাঁড়ির খবর পাওয়া যায়। এবার ভাবুন যে এই ব্যক্তি আপনার বন্ধু। আপনি বন্ধু হিসেবে তাঁকে একান্ত গোপনীয় কোনো বিষয়ে জানালেন। আপনার সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য তিনি জেনে গেলেন। আর কিছুদিনের মধ্যেই দেখলেন যে আপনার একান্ত গোপনীয় বিষয়টি ইতিমধ্যে সবার চায়ের কাপে ঝড় তুলছে। এরা এর কথা তাকে আর তার কথা ওকে বলতে থাকে কাউকে না বলার দোহাই দিয়ে। তাই পরচর্চাকারী ব্যক্তি আপনার যতই কাছের কেউ হোক না কেন, এ ধরনের মানুষদের বন্ধুর মর্যাদা না দেওয়াটাই শ্রেয়।

বিজ্ঞাপন

২. ঈর্ষাপরায়ণ ব্যক্তি

কারও সঙ্গে বন্ধুত্ব করার অন্যতম একটি বিশেষ দিক হলো দুঃখ-বেদনা ছাড়াও নিজের আনন্দ আর সাফল্যগুলো তাঁদের সঙ্গে ভাগ করে নেওয়া। স্বাভাবিকভাবেই আমরা আশা করি যে আমাদের বন্ধু আমাদের সাফল্যে আনন্দিত হবে। তবে এমন কিছু বন্ধুও থাকেন, যাঁরা আপনার সাফল্যে আনন্দিত হওয়া দূরে থাক, উল্টো আপনার বিরুদ্ধে কটু কথা বলতে দ্বিধা করে না। এমন চলতে থাকলে আপনি হয়তো বন্ধুত্ব রক্ষার্থে নিজের সাফল্যগুলোকে লুকিয়ে রাখার চেষ্টা করবেন। হাতেগোনা কিছু মানুষের জন্য নিজের কষ্টার্জিত সাফল্য লুকিয়ে রাখার চেয়ে বরং এ ধরনের বন্ধুদের এড়িয়ে চলুন।

এমন কিছু বন্ধুও থাকেন, যাঁরা আপনার সাফল্যে আনন্দিত হয়না
এমন কিছু বন্ধুও থাকেন, যাঁরা আপনার সাফল্যে আনন্দিত হয়না
নেতিবাচক মনোভাব সংক্রামক রোগের মতো
নেতিবাচক মনোভাব সংক্রামক রোগের মতো

৩. নেতিবাচক মনোভাবসম্পন্ন ব্যক্তি

বলা হয়ে থাকে, যদি একটি মিথ্যা বা নেতিবাচক কথা বারবার বলা হয়, তবে একটা পর্যায়ে আপনি তা বিশ্বাস করতে শুরু করবেন। ভাবুন, আপনি আপনার কর্মক্ষেত্রকে বেশ পছন্দ করেন। কিন্তু আপনার কোনো এক সহকর্মী অফিসে পা রাখা মাত্রই আপনার কাছে আপনার কর্মক্ষেত্র বিষয়ে অভিযোগ করতে শুরু করেন; প্রিন্টারটা কেন নষ্ট, অফিসের এসিগুলো ঠিকমতো কাজ করছে না, ডেস্কগুলো ছোট ইত্যাদি। একটি পর্যায়ে লক্ষ করবেন যে আপনার মনেও এই বিষয়গুলো গেঁথে যাচ্ছে এবং কর্মক্ষেত্র নিয়ে আপনার মনে বিরক্তি সৃষ্টি হচ্ছে। নেতিবাচক মনোভাব সংক্রামক রোগের মতো। তাই নিজের মানসিক শান্তি রক্ষা করতে চাইলে নেতিবাচক মনোভাব পোষণকারী ব্যক্তিদের সঙ্গে যথাসম্ভব দূরত্ব বজায় রেখে চলুন।

বিজ্ঞাপন

৪. নিজেকে সবজান্তা ভাবা মানুষ

সুসম্পর্ক বজায় রাখতে অপরের মতামতের প্রতি সহানুভূতিশীল হওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু জীবনে চলার পথে আমরা এমন কিছু মানুষের সংস্পর্শে আসি, যাঁরা অন্যের মতামতকে গুরুত্ব দিতে চান না। অন্যের মতকে অগ্রাহ্য করে কিংবা নানা ছুতায় ভুল প্রমাণ করে, নিজের মতকেই সঠিক হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে চান। এমন স্বঘোষিত 'সবজান্তা শমসের'দের সঙ্গে কাজ করতে গেলে কিংবা সাধারণ বন্ধুত্ব রক্ষা করতে গেলেও আপনি একপর্যায়ে হাঁপিয়ে উঠবেন। বিশেষ করে কর্মক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা সৃষ্টি হবে। তাই ব্যক্তিগতভাবে তাঁদের কাছ থেকে যতটা দূরত্ব বজায় রাখা সম্ভব, ততই ভালো।

আমরা এমন কিছু মানুষের সংস্পর্শে আসি, যাঁরা অন্যের মতামতকে গুরুত্ব দিতে চান না
আমরা এমন কিছু মানুষের সংস্পর্শে আসি, যাঁরা অন্যের মতামতকে গুরুত্ব দিতে চান না
আপনার বন্ধু দিব্যি মিথ্যা বলে পার পেয়ে যান
আপনার বন্ধু দিব্যি মিথ্যা বলে পার পেয়ে যান

৫. মিথ্যাবাদী মানুষ

প্রতিনিয়ত মিথ্যা কথা বলার অভ্যাস যেকোনো সম্পর্কে ভুল–বোঝাবুঝি ও সন্দেহ সৃষ্টি করে। শুধু তা–ই নয়, আপনার খুব কাছের কোনো বন্ধু যদি নানা বিষয়ে মিথ্যা বলে বিভিন্ন পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পেয়ে যায়, তবে তা আপনাকে প্রভাবিত করতে পারে। হয়তো আপনি মিথ্যা একদমই বলেন না। ফলে না চাইলেও অনেক কাজ আপনাকে করতে হয়। অপরদিকে আপনার বন্ধু দিব্যি মিথ্যা বলে পার পেয়ে যান। এতে আপনার মনে হতেই পারে, সত্যের চেয়ে মিথ্যা বলাটাই আপনার জন্য মঙ্গল। যে আপনি কোনোদিনই মিথ্যা বলতেন না, সেই আপনিই হয়তো একটি–দুটি করে মিথ্যা বলতে শুরু করে দিলেন। আপনার চরিত্রের অবক্ষয় তো হবেই, আপনার প্রতি মানুষের বিশ্বাসের জায়গাটাও নষ্ট হয়ে যাবে৷ আর সেই ব্যক্তির মিথ্যা কথার ফলে আপনিও পড়তে পারেন বড় কোনো বিপদে। তাই সুখী হতে হলে মিথ্যাবাদী ব্যক্তি সব সময়ই পরিত্যাজ্য।

তথ্যসূত্র: থট ক্যাটালগ

ছবি: পেকজেলস ডট কম

প্রকাশ: ২০ নভেম্বর ২০২৪, ০১: ১৭
বিজ্ঞাপন