ভালোবাসা মানেই কি সবকিছু মেনে নেওয়া? যা বলছেন বিশেষজ্ঞরা
শেয়ার করুন
ফলো করুন

একসঙ্গে সময় কাটানো, একসঙ্গে ছবি তোলা, একই মিউজিক প্লেলিস্ট শোনা বা এমনকি এক গ্লাস থেকে একসঙ্গে পান করা- সম্পর্কের এই মিষ্টি মুহূর্তগুলো নিঃসন্দেহে অতুলনীয়। কিন্তু একসময় এই অতিরিক্ত কাছাকাছি থাকা যদি দমবন্ধ অনুভূতির জন্ম দেয়, তাহলে সম্পর্ক বাঁচাতে নতুন ভাবে ভাবতে হবে আপনাকে।

মনোবিজ্ঞানীরা বলছেন, ভালোবাসা মানে আত্মত্যাগ নয়। নিজের জায়গা না রাখলে সম্পর্কই হয়ে ওঠে ভারী। এবং একসঙ্গে থাকার নামে যদি নিজের অস্তিত্ব হারিয়ে যায়। সেই পরিস্থিতিকে বিশেষজ্ঞরা বলছেন সেটা ভালোবাসা নয়, সেটা বন্দিত্ব। আর এই পরিস্থিতি তৈরি হয় সম্পর্কে সীমারেখার অভাবে।  

কেন দরকার সম্পর্কের সীমারেখা

প্রেমের সম্পর্কে আমরা প্রায়ই ভাবি, ভালোবাসা মানেই সবকিছু ভাগ করে নেওয়া। কিন্তু মনোবিজ্ঞানীরা বলছেন, অতিরিক্ত ‘একসঙ্গে থাকা’র মধ্যে দিয়ে অনেক সময় হারিয়ে যায় ব্যক্তিগত সত্তা। নিজের পছন্দ, স্বস্তি আর সীমার জায়গাগুলো যদি একসময় মুছে যায়, তখন সম্পর্কটিও হয়ে ওঠে ক্লান্তিকর।

মনোবিজ্ঞানী ড. অ্যাডাম হেক বলেন, “আমাদের অনেকেরই মনে হয়, কাউকে ভালোবাসা মানে নিজের সবকিছু ত্যাগ করা। কিন্তু আসল ভালোবাসা কখনোই নিজেকে হারানো নয়। বরং পারস্পরিক সম্মান, ভারসাম্য আর সততার ওপরেই গড়ে ওঠে সুস্থ সম্পর্ক।”

তাঁর মতে, সীমারেখা মানে দূরত্ব নয়—   বরং ভালোবাসার মধ্যে নিজের স্বাস্থ্য, মানসিক শান্তি এবং আত্মসম্মান রক্ষা করা।

বিজ্ঞাপন

সম্পর্কের সীমারেখা টানার ৫টি সহজ উপায়

১. নিজেকে যত্নের অধিকার দিন

ভালোবাসার মধ্যেও নিজের মানসিক শান্তি আর বিশ্রামের জায়গা জরুরি। প্রতিদিনের ব্যস্ততা, মানসিক চাপ বা সম্পর্কের ক্লান্তি থেকে মুক্তির সুযোগ দিন নিজেকে।

২. “আমি’’ দিয়ে কথা বলুন

অভিযোগ নয়, অনুভূতি প্রকাশ করুন। যেমন—   “তুমি সব সময় এমন করো’’ না বলে বলুন “আমি অস্বস্তি বোধ করি যখন এমনটা হয়।’’ এতে কথোপকথন হয় শান্ত ও সহানুভূতিশীল।

৩. ছোট থেকে শুরু করুন

একদিনের মধ্যে সম্পর্কের সীমা নির্ধারণ করা যায় না। শুরু করুন ছোট ছোট পদক্ষেপে—   যেমন, ক্লান্ত লাগলে ফোন না ধরা বা কিছু সময় একা কাটানো।

৪. ধারাবাহিক থাকুন

কখনো ‘না’ বলা, আবার কখনো নিজের ইচ্ছা উপেক্ষা করা—   এতে বিভ্রান্তি বাড়ে। আপনি যা সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন, তা কোমলভাবে হলেও ধারাবাহিকভাবে বজায় রাখুন।

৫. অপরাধবোধ ছাড়ুন

‘না’ বলার পর অপরাধবোধে ভুগবেন না। মনে রাখুন, নিজের মানসিক সীমা নির্ধারণ করা স্বার্থপরতা নয়—   এটি আত্মসম্মানের অংশ। আপনি আপনার অনুভূতির দায়িত্বে আছেন, অন্যের নয়।

সম্পর্ক মানে একে অপরের পাশে থাকা, কিন্তু তাতে নিজেকে হারিয়ে ফেলা নয়। ভালোবাসা তখনই সুন্দর, যখন তাতে থাকে দুজন মানুষের নিজস্বতা, পারস্পরিক সম্মান আর স্বস্তি। তাই প্রয়োজন হলে নির্দ্বিধায় বলুন ‘‘আজ একটু নিজের জন্য সময় চাই।’’

সূত্র: হেলথলাইন

ছবি: এআই দিয়ে তৈরি

বিজ্ঞাপন
প্রকাশ: ২৪ অক্টোবর ২০২৫, ০১: ০০
বিজ্ঞাপন