বিশ্ব পরিবেশ দিবসে জাতিসংঘ পরিবেশ কর্মসূচি ইউএনএফপি ঘোষিত এ বছরের প্রতিপাদ্য হলো ‘আওয়ার ল্যান্ড, আওয়ার ফিউচার। উই আর #জেনারেশনরেস্টোরেশন। অর্থাৎ, ‘আমাদের ভূমি, আমাদের ভবিষ্যৎ। আমরা #পুনরুদ্ধারেরপ্রজন্ম।
এই বার্তাটি সরাসরি আমাদের জীবনের সঙ্গে জড়িত। মাটি মানেই শুধু কৃষির উৎস নয়, এটি জীববৈচিত্র্য ও মানবসভ্যতার মেরুদণ্ড। বন ধ্বংস, অতিরিক্ত রাসায়নিক ব্যবহার, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে আজ পৃথিবীর শতকরা ৪০ ভাগ ভূমি ক্ষয়প্রাপ্ত। এই ক্ষয় থেকে পৃথিবীকে ফিরিয়ে আনতে দরকার সচেতন প্রজন্ম, কার্যকর পদক্ষেপ ও যৌথ প্রচেষ্টা।
পরিবেশদূষণের কারণে বহু আগে থেকেই শুরু হয়েছে অভ্যন্তরীণ ও বৈশ্বিক সংকট।
বাংলাদেশের মতো ঘনবসতিপূর্ণ দেশে বায়ুদূষণ, শব্দদূষণ, জলদূষণ ও প্লাস্টিক বর্জ্য বর্তমানে ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। ঢাকা বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহরগুলোর একটি। নদীর জল বিষাক্ত হয়ে উঠেছে শিল্পবর্জ্য আর অপরিকল্পিত ড্রেনেজের কারণে।
প্রতিদিনের জীবনে আমরা হয়তো টের পাই না, কিন্তু প্রতিটি প্লাস্টিক বোতল, ব্যবহৃত পলিথিন, ফেলে দেওয়া ইলেকট্রনিক বর্জ্যে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য হয়ে উঠছে বসবাসের অনুপযোগী এক পৃথিবী।
এ সমস্যার সমাধান আমাদের হাতেই আছে। এই পরিস্থিতি থেকে মুক্তি সম্ভব দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার মাধ্যমে; এর জন্য দরকার দায়িত্ববোধ ও কার্যকর পদক্ষেপ। ছোট ছোট কিছু প্রাত্যহিক অভ্যাসেও অনেক কিছু রোধ করা সম্ভব। যেমন—
১. ঘরে ঘরে পচনশীল ও অপচনশীল বর্জ্য আলাদা করা
২. পুনর্ব্যবহারযোগ্য জিনিসের ব্যবহার বাড়ানো
৩. প্লাস্টিকের ব্যবহার কমানো
৪. শহরে সবুজায়নের উদ্যোগ নেওয়া
৫. শিশুকে প্রকৃতির প্রতি ভালোবাসা শেখানো
কেবল সরকার নয়, ব্যক্তিপর্যায়েও প্রতিটি সচেতন পদক্ষেপ করতে পারে পরিবর্তনের সূচনা।
সবুজ আগামী শুধু কল্পনা নয়, এটা আমাদের সবার দায়িত্বও। বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে আমাদের মনে রাখা দরকার, প্রকৃতি আলাদা কিছু নয়, আমরা সবাই প্রকৃতিরই অংশ। পরিবেশ রক্ষার দায়িত্ব এড়ানোর উপায় নেই। কারণ, আমরা এই পৃথিবীর ভাড়াটে নই, বাসিন্দা।
সবাই মিলেই গড়ে তুলতে হবে বাসযোগ্য ভবিষ্যৎ। যেখানে শিশুরা নিশ্বাস নেবে নির্মল বাতাসে, যেখানে নদী বইবে দূষণ ছাড়া, আর সবুজের হাসিতে উজ্জ্বল হবে চারপাশ।