ভারতের আহমেদাবাদের ভয়ংকর বিমান দুর্ঘটনায় সবচেয়ে অবিশ্বাস্য ও আলোচিত ঘটনার নাম বিশ্বাস কুমার রমেশ। ২৪২জন যাত্রী ও ক্রুয়ের মধ্যে রমেশ একমাত্র সৌভাগ্যবান। এই দুর্ঘটনায় বেঁচে ফেরা একমাত্র ব্যক্তি তিনি। এখন তাঁর আসনটি 'মিরাকল ১১এ' আর 'লাকি ১১এ' হিসেবে আলোচিত হচ্ছে। এদিকে রমেশের ঘটনার বিস্ময় না কাটতেই এই সিট নিয়ে নতুন এক রহস্য তৈরি হয়েছে।
একই সিট আরও একজনের জীবন বাঁচিয়ে ছিল ১৯৯৮ সালে। ঠিক ২৭ বছর আগেও একই সিটে বসে ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনায় বেঁচে ফিরিছিলেন একজন থাই শিল্পী। দুটি ঘটনা, ২৭ বছর ব্যবধান, ভিন্ন দুটি দেশ, কিন্তু এক অদ্ভুত মিল—একটি আসন, ১১এ।
থাইল্যান্ডের পপস্টার রুয়াংসাক জেমস লইচুসাক তাঁর এই অদ্ভুত অভিজ্ঞতার কথা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করার পর ১১এ আসনটি নিয়ে তৈরি হয়েছেএকরকম রহস্য ও কৌতূহল।
৪৭ বয়সী এই শিল্পী জানান, ১৯৯৮ সালে থাই এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে তিনি বসেছিলেন সিট ১১এ-তে। নামার সময় প্লেনটিতে আগুন ধরে যায়। সেই দুর্ঘটনায় বহু প্রাণহানি হয়। তিনিও রমেশের মতো বেঁচে যান অলৌকিকভাবে, ১১এ-তে বসেই।
লইচুসাক টিজি২৬১ ফ্লাইটে ব্যাংকক থেকে সুরাত থানি যাচ্ছিলেন। অবতরণের সময় বিমানটি দুর্ঘটনায় পড়ে। ডেইলি মেইল-এর প্রতিবেদনে বলা হয়, দুর্ঘটনায় ১৩২ জন যাত্রী ও ১৪ জন ক্রুর মধ্যে ১০১ জন প্রাণ হারান, এবং আরও ৪৫ জন আহত হন।
লইচুসাকের কাছে এটি তাঁর 'দ্বিতীয় জীবন'। তাঁর সেই ট্রমা শেয়ার করে পোস্ট করেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। তিনি লেখেন, 'বিমান দুর্ঘটনার পরবর্তী ১০ বছর উড়োজাহাজে চড়া আমার জন্য ভীষণ কঠিন ছিল। বাতাসের চলাচল স্বাভাবিক থাকলেও আমার শ্বাস নিতে কষ্ট হতো।'
এদিকে অলৌকিকভাবে বেঁচে যাওয়া রমেশ জানান, কীভাবে প্রাণে বেঁচে গেলেন তিনি নিজেও জানেন না। চোখ মেলেই দৌঁড়াতে থাকেন এবং স্থানীয়রা তাঁকে হাসপাতালে পৌঁছে দেয়।
১১এ সিটটি সাধারণত জানালাবিহীন ও মাঝের দিকের হওয়ায় অস্বস্তিকর বলে বিবেচিত। বেশিরভাগ যাত্রী এটি নিতে চান না। গবেষণাও বলে, বিমানের এই অংশে মৃত্যুঝুঁকি তুলনামূলকভাবে বেশি। ২০১২ সালে এমআইটি ও ডিসকভারি চ্যানেলের পরীক্ষায় দেখা গেছে, দুর্ঘটনায় প্লেনের মাঝের অংশ তুলনামূলকভাবে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় । তবে বাস্তবতা বলছে, কখনো কখনো তথাকথিত 'অপছন্দের সিট'ই হয়ে যায় 'লাকি সিট' । আসন নম্বর ১১এ নিয়ে এই রহস্য হয়ত থেকেই যাবে। আর হয়ত অপছন্দের সিট থেকে ক্রমশ মানুষের পছন্দের সিটে পরিণত হবে।
সূত্র: দ্য ইকোনমিক টাইমস
ছবি: ইন্সটাগ্রাম