মাটি তৈরির ক্ষেত্রে ৫০ ভাগ নারকেলের ছোবড়ার সঙ্গে ২৫ ভাগ মাটি এবং ২০ ভাগ শুকনা গোবরের মিশ্রণের সঙ্গে ১ ভাগ রুট হরমোন, ২ ভাগ ছত্রাকনাশক, নিমপাতার গুঁড়া ও ২ ভাগ মিশ্র সার ভালো করে মেশাতে হবে। এতে করে মাটি ও গাছের রোগবালাই কম হয় এবং ফলন বেশি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
নতুন ছাদবাগানিদের অবশ্যই যেটি করা উচিত, তা হলো প্রতিটি টবে কিছু ডাঁটাশাক, ধনেপাতা, পাটশাক ও শর্ষের বীজ ছিটিয়ে রাখতে হবে। এতে করে ২০–২৫ দিনের মধ্যে এ বীজগুলো থেকে গাছ হয়ে খাওয়ার উপযোগী শাকে পরিণত হবে। ফলে পরিবারের মাসিক শাকসবজির চাহিদার বেশ খানিকটা এখান থেকে পূরণ হবে এবং জায়গারও সঠিক ব্যবহার হবে।
সবজি–ফুল সব একই ড্রামে রাখলে জায়গা কম লাগে। সে ক্ষেত্রে একটি বড় ড্রামে ১৫টির মতো গাছ লাগানো সম্ভব। একই সঙ্গে আরেকটি সুবিধা আছে, ফুলে মৌমাছি বেশি আসে। যখন সবজির গাছের সঙ্গে ফুলগাছ থাকে, তখন সবজির পরাগায়নও হয়ে যায়। যার ফলে ফলন হয় বেশি। অনেক ক্ষেত্রে মধু স্প্রে করলেও মৌমাছি আসে। তবে একসঙ্গে অনেক গাছ থাকলে পানির পরিমাণ বাড়াতে হবে।
যেকোনো গাছে ফুল ধরলে পানি বেশি লাগে। তখন গাছের ক্ষুধা বেড়ে যায়। তাই চার-পাঁচবার নিয়ম করে পানি দেওয়া উচিত। বিশেষ করে বড় গাছগুলোতে।
আরেকটা বিষয় না বললেই নয়, নতুন ছাদবাগানিদের অনেকেরই একটি কমন প্রশ্ন থাকে—ছাদে বাগান করলে এর ক্ষতি হয় কি না। নারকেলের ছোবড়ার কারণে মাটির তুলনায় পানি অনেক কম লাগে এবং ওজনও মাটি থেকে অনেক কম হয়, তাই ছাদের কোনো ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা থাকে না।
ছাদবাগান করতে গেলে অনেকেরই একটি চিন্তা থাকে, পানি জমে মশা ও কীটপতঙ্গের উপদ্রব বাড়বে কি না। অনেকের জলজ গাছের শখ থাকে। ড্রামে শাপলা–পদ্ম লাগায়। সে ক্ষেত্রে ১০-১২ দিন অন্তর অন্তর তুঁতে বিষ দিতে হবে। ২৫০ গ্রাম তুঁতে ১ লিটার পানিতে মিশিয়ে রেখে হাফ ড্রামে ২ মিলি করে দিলেই কোনো পোকা বা মশা জন্মাবে না সেখানে।
ছাদ নিয়মিত পরিষ্কার করতে হবে। সপ্তাহে একবার ব্লিচিং পাউডার ছাদের কোনায় কোনায় ব্যবহার করলে কোনো কীটপতঙ্গ আসবে না। যদি কোনো কারণে অনেক দিন ছাদ পরিচর্যার সময় না থাকে, তখন ছাদে শ্যাওলা জমে যায়। সে ক্ষেত্রে এক বালতি পানিতে গুলিয়ে রাখা তুঁতে বিষ এক কাপ মিশিয়ে শ্যাওলার ওপর ঢেলে দিতে হবে। তিন-চার ঘণ্টা পরই সব পরিষ্কার হয়ে যাবে।
কারও পছন্দ ফুলের বাগান, কারও ফল। আবার কেউ শুধু সবজি লাগাতেই ভালোবাসেন। পছন্দ যা–ই হোক না কেন, উদ্দেশ্য একটাই—পরিবারের সবাইকে নিয়ে শারীরিক ও মানসিকভাবে একটু ভালো থাকা। অনেকে ছাদে বা ব্যালকনিতে বাগান করার কথাও ভাবেন।
ছবি: লেখক