গবেষকরা প্রায় ৯০,০০০ প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তিকে সাত বছর ধরে পর্যবেক্ষণ করে দেখেছেন, ঘুমের সময়ের চেয়ে ঘুম নিয়মিত হওয়াটাই বেশি গুরুত্বপূর্ণ। ঘুম অনিয়মিত হলে তা বহু গুরুতর দীর্ঘমেয়াদি রোগের কারণ হতে পারে।
বিগত কিছু বছর ধরে ঘুম বিশেষজ্ঞরা অতিরিক্ত ঘুমকে হার্টের সমস্যা, বিষণ্ণতা এবং অকাল মৃত্যুর সঙ্গে যুক্ত বলে সতর্ক করে আসছিলেন। কিন্তু নতুন এক গবেষণা বলছে, সমস্যা আসলে ঘুমের সময়কাল নয় — বরং ঘুমাতে যাওয়ার সময় আর ঘুমের প্যাটার্ন। ঘুম সম্পর্কে আমরা ভুল তথ্য দিই বলেই সমস্যাগুলো সামনে আসে না।
অনিয়মিত ঘুমের কুপ্রভাব
প্রায় ৯০,০০০ মানুষকে ফিটনেস ট্র্যাকার পরিয়ে তাদের ঘুম কতটা নিয়মিত তা মেপে দেখা হয়। গবেষণায় দেখা যায়, অনেকেই মনে করেন তারা ৮ ঘণ্টার বেশি ঘুমান, কিন্তু ট্র্যাকার অনুযায়ী তারা ৬ ঘণ্টাও ঘুমান না। আসলে গভীর ঘুমই হয় না তাঁদের।
এই গবেষণায় যুগ যুগ ধরে চলে আসা ঘুমসম্পর্কিত গবেষণার বড় একটি ভুল ধরা পড়ে। মানুষ প্রায়ই নিজেদের ঘুমের সময় ভুলভাবে অনুমান করে। যাঁরা সত্যি সত্যি দীর্ঘ সময় ঘুমান এবং ঘুম ভালো হয়, তাঁদের স্বাস্থ্যঝুঁকি অনেকটাই কম।
ঘুমের নিয়মে গোলমাল মানেই রোগের ঝুঁকি
চীনের থার্ড মিলিটারি মেডিকেল ইউনিভার্সিটির ড. কুইং চেন-এর নেতৃত্বে এই গবেষণায় ইউকে বায়োব্যাংক-এর তথ্য ব্যবহার করা হয়। গবেষণায় অংশগ্রহণকারীদের হাতে থাকা ট্র্যাকার থেকে শুধু ঘুমের সময় নয়, ঘুম ভাঙে কিনা, কোন সময়ে ঘুমান তাঁরা এবং প্রতিদিন ঘুমের সময় কতটা নিয়মিত থাকে এই সবকিছু বিশ্লেষণ করা হয়।
ফলাফল
অনিয়মিত ঘুমের সঙ্গে ১৭২টি রোগের সরাসরি সম্পর্ক পাওয়া গেছে, যার মধ্যে আছে ডায়াবেটিস, কিডনি ফেইলিয়ার, লিভার সিরোসিস, পারকিনসন্সসহ বহু দীর্ঘমেয়াদি অসুস্থতা।
সূত্র: ওপেন অ্যাক্সেস, নিউরোসায়েন্স নিউজ, দ্য হিন্দুস্তান টাইমস
ছবি: এআই ও পেকজেলস