হঠাৎই গরীব হয়ে যাচ্ছেন বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি, চার মাসে খুইয়েছেন ১০০ বিলিয়ন ডলার
শেয়ার করুন
ফলো করুন

গত বছরের শেষে পৃথিবীর ইতিহাসের প্রথম ব্যক্তি হিসেবে ৪০০ বিলিয়ন ডলারের সম্পদের মালিক হন টেক জিনিয়াস ইলন মাস্ক। মাস্কের সম্পদের বড় অংশ তাঁর ইলেকট্রিক ট্রান্সপোর্ট কোম্পানি টেসলার শেয়ার থেকে আসে। কিন্তু এ বছরের  শুরু থেকে পরিস্থিতি পাল্টে যাচ্ছে নাটকীয়ভাবে। হঠাৎই প্রায় ১০০ বিলিয়ন ডলার কমে গিয়ে তাঁর মোট সম্পদের পরিমাণ এখন ৩০০ বিলিয়ন ডলার।

পৃথিবীর ইতিহাসের প্রথম ব্যক্তি হিসেবে ৪০০ বিলিয়ন ডলারের  মালিক হন ইলন মাস্ক
পৃথিবীর ইতিহাসের প্রথম ব্যক্তি হিসেবে ৪০০ বিলিয়ন ডলারের মালিক হন ইলন মাস্ক

এই বিপুল ক্ষতির মূল কারণ টেসলার শেয়ারের ধারাবাহিক দরপতন, রাজনৈতিক বিতর্ক, আন্তর্জাতিক বাজারে টেসলার গাড়ি বিক্রি কমে যাওয়া এবং একের পর এক প্রতিযোগীর উত্থান।

বিজ্ঞাপন

টেসলার শেয়ারের টানা পতনের ফলে এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে ইলন মাস্ক হারিয়েছেন প্রায় ৪.৪ বিলিয়ন ডলার। ব্লুমবার্গ বিলিয়নিয়ার্স ইনডেক্স অনুসারে , তখন তাঁর মোট সম্পদ দাঁড়িয়েছিল ২৯৭.৮ বিলিয়ন ডলারে। ব্লুমবার্গের মতে, পৃথিবীর ৫০০ জন ধনীদের মধ্যে 'লারজেস্ট লুজার' হিসেবে ৬ষ্ঠ অবস্থানে আছে এই টেক জিনিয়াস।
ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর টেসলার শেয়ারমূল্য ছিল আকাশছোঁয়া। মাস্কের সম্পদ তখন ইতিহাস গড়ছিল। কিন্তু এখন সেই রাজনৈতিক সম্পর্কই যেন উল্টো বিপদ ডেকে এনেছে তাঁর।

ধনীদের মধ্যে 'লারজেস্ট লুজার' হিসেবে ৬ষ্ঠ অবস্থানে আছে এই টেক জিনিয়াস
ধনীদের মধ্যে 'লারজেস্ট লুজার' হিসেবে ৬ষ্ঠ অবস্থানে আছে এই টেক জিনিয়াস

মাস্কের ডিপার্টমেন্ট অফ গভর্নমেন্ট ইফিশিয়েন্সি (DOGE)–তে অংশগ্রহণ আর ট্রাম্পের উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করা নিয়ে সন্তুষ্ট নয় লোকজন। এর ফলে টেসলার প্রতিও ক্ষোভ বাড়ছে। শুধু আমেরিকায় না, বিদেশেও একই পরিস্থিতি।
এই নেতিবাচক প্রভাবে বছর শুরুর দিকেই টেসলার গাড়ি বিক্রি ১৩ শতাংশ কমেছে। বিনিয়োগকারীরা এতে বেশ উদ্বিগ্ন । বিনিয়োগ কমার ফলে টেসলার শেয়ারমূল্য প্রায় ৫০ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে যার প্রভাব পড়েছে মাস্কের মোট সম্পদে।  ​

বিজ্ঞাপন

এছাড়াও, বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে মাস্কের দাম্ভিক আচরণ অনেক গ্রাহককে হতাশ করেছে। এদিকে, চীনা ইলেকট্রিক গাড়ি নির্মাতা বিওয়াইডি (BYD) নতুন ও উন্নত প্রযুক্তি দিয়ে চমকে দিচ্ছে সকলকে। তাদের অত্যাধুনিক চার্জিং প্রযুক্তি দিয়ে আকর্ষণ করছে নতুন ক্রেতাদের। মাত্র ৫ মিনিটে ২৫০ মাইল রেঞ্জ দেওয়া ব্যাটারি তাদের সর্বশেষ উদ্ভাবন, যা টেসলার প্রযুক্তিকে পিছনে ফেলেছে বলেই মনে করা হচ্ছে। ফলে বিওয়াইডি বিক্রির হার ও আয় বাড়ছে দ্রুত । ইতিমধ্যে টেসলার চেয়ে বেশি বার্ষিক আয় করতে শুরু করেছে কোম্পানিটি। চীনে ও ইউরোপে বিওয়াইডি-এর এই জনপ্রিয়তা মাস্কের আরও বড় মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

মাস্কের দাম্ভিক আচরণ অনেক গ্রাহককে হতাশ করেছে
মাস্কের দাম্ভিক আচরণ অনেক গ্রাহককে হতাশ করেছে

আবার, টেসলার বিপরীতে বাজারে এসেছে এক নতুন প্রতিদ্বন্দ্বী। এদের পরিচিতি অ্যান্টি-টেসলা হিসেবে। প্রযুক্তির সঙ্গে মূল্যবোধও যাদের কাজের জায়গা।  রিবেশ, সামাজিক দায়বদ্ধতা ও স্বচ্ছ ব্যবসার উপর গুরুত্ব দিয়ে তারা কাজ করছে। ফলে এই নতুন ব্র্যান্ডটি সহজেই তরুণ প্রজন্ম ও সচেতন গ্রাহকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছে।
চারদিকের এসব চাপের মুখে মাস্ক ঘোষণা করেছেন তিনি ডিওজিই ( DOGE) –তে নিজের ভূমিকা কমিয়ে টেসলার উপর আরও মনোযোগ দেবেন।

ছবি: ইন্সটাগ্রাম

প্রকাশ: ২৪ মে ২০২৫, ০৭: ১৯
বিজ্ঞাপন