পয়লা বৈশাখের আমেজে মেতেছে চারিদিক। চলছে বর্ষবরণের জোর প্রস্তুতি। একসময় নববর্ষের বৈশাখী মেলার প্রধান আকর্ষণ ছিল মাটির তৈরির বিভিন্ন প্রয়োজনীয় সামগ্রী, খেলনা আর তৈজসপত্র। এখন সারাবছর ততটা ব্যবহার না হলেও বৈশাখী আয়োজনে মাটির তৈজসপত্র ও হোমডেকোর আইটেম আর উপহার খুবই সমাদৃত। মাটির জিনিস তৈরিতে পুরো চৈত্রমাস জুড়ে পালপাড়ায় বেড়ে যায় ব্যস্ততা ।
মাটি দিয়ে তৈরি নানা সামগ্রীর মধ্যে আছে হাড়িপাতিল, চাড়ি, কলস, খানদা, ফুলের টব, ফুলদানি, জীবজন্তু, পাখির অবয়ব, ঘটি-বাটি, ডাবর-মটকি, পুতুল, মাটির ব্যাংক, শোপিস,সানকি, পিঠা তৈরির ছাঁচ,সরা,কলস আর নানা রকম খেলনা। ঘর সাজাতে এখন বেশ জনপ্রিয় মাটির সামগ্রী। বৈশাখের আপ্যায়নে ঘরের ডেকোরেশনে মৃৎশিল্পের ছোঁয়ার সঙ্গে খাবারের টেবিলের তৈজস মাটির হলে খুব মানিয়ে যায়।
নিত্যদিনের প্রয়োজনীয় অনেক তৈজসপত্র পাওয়া যায় ঢাকার বিভিন্ন ক্র্যাফট শপ ও পথের ধারের পসরায়। মাটির জগ, কলস, মগ, থালা, মাটির পাত্র, ঢাকনা খুব সহজেই পাবেন এসব দোকানে। রান্নাঘর বা অন্দরের শোভাবর্ধনের ক্ষেত্রে মাটির তৈরি শোপিস কিনতে পারেন। পয়লা বৈশাখের দিন পরিবারের সবাই মিলে কিংবা কাউকে আমন্ত্রণ জানালে খাবার টেবিলে মাটির জগ ও মগ রাখতে পারেন। মালসা, সানকি আর মাটির প্লেটবাটিতে খাবার পরিবেশন করতে পারেন।
ঘর সাজানোর জন্য কারুকার্য করা শখের হাড়ি বা সরা নিতে পারেন। মাটির ফুলদানিতে ফুল রাখলে আকর্ষণীয় দেখায়। চকচকে আয়নার টুকরো বসানো হাড়ি, কলস কিংবা টবও কিনতে পাওয়া যায়। এসব দিয়ে ঘর সাজাতে পারেন। বাড়ির ছোট শিশুদের জন্য কিংবা আমন্ত্রিত অতিথিদের মধ্যে যদি কোন শিশু থাকে;তার জন্য রঙিন কাগজে মুড়িয়ে উপহার হিসেবে দিতে পারেন ছোট মাটির খেলনা। হাতি,ঘোড়া, পুতুল ঘর সাজাতে যেমন দারুণ, নতুন বছরের উপহার হিসেবেও উপহার দিতে পারেন
কিনবেন কোথা থেকে
ঢাকার বিভিন্ন জায়গায় পথের ধারে পাওয়া যায় মাটির তৈজসপত্র ও পণ্য। ঢাকার শাহবাগ, শিশু একাডেমি, ঢাকা কলেজের সামনে, নিউমার্কেট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালিয় দোয়েল চত্বর, কারওয়ান বাজারে ডিআইটি মার্কেটের নিচতলা, ধানমন্ডি ২৭, গুলশান ২, মিরপুর ২,সায়েন্স ল্যাবরেটরি,আগারগাঁও সহ বিভিন্ন স্থানে পাবেন এসব পণ্য। দাম তুলনামূলক কম হবে এসব জায়গায়। আড়ং, কে ক্র্যাফটস, অঞ্জনসেও পাবেন মাটির তৈজসপত্র ও ঘর সাজানোর নান্দনিক সব পণ্য। অনলাইনেও পাওয়া যাচ্ছে মাটির তৈজস।
আমিনুত্রা, ভূমি আর্টিসান, সাজশিল্পসহ বিভিন্ন ফেসবুক পেজে পাওয়া যায় বৈচিত্র্যময় মাটির জিনিস। আমিনুত্রার স্বত্বাধিকারী আমিনুল ইসলাম বলেন, তাদের মাটির তৈজস আনা হয় পটুয়াখালী থেকে। ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী সানকি, মালসা,মাটির টবে তারা নকশা করে থাকেন দাম ৭০০টাকা। মাটির ডিনার সেট ৫২০০ ,৪২০০ ও ৩২০০ টাকায় পাওয়া যায় তবে বৈশাখ উপলক্ষে ৭০০-৮০০ টাকা ছাড় দিচ্ছেন তাঁরা।
সায়েন্সল্যাব ও দোয়েল চত্বরের সামনে খোঁজ নিয়ে জানা গেলো সাশ্রয়ী মূল্যে মাটির তৈজস পত্রের দাম দস্তুর। মাটির সানকি ৪০-৫০ টাকায় পাওয়া যায়। মাটির মগ ৫০-৮০ টাকা । বাটি বা মালসা পাবেন ২০-৫০ টাকার মধ্যে।
নকশা আঁকা রঙিন হাড়ির আকৃতি ভেদে দাম ১০০-২০০ নকশা ছাড়া হাড়ি বা কলসের দাম ৫০-৭০ টাকা। আয়নার টুকরো বসানো টবের দাম ২৫০-৭০০ হয়ে থাকে। বিখ্যাত মনীষীদের প্রতিকৃতি ও টেরাকোটার ফলকের দাম পড়বে ২০০-১০০০ টাকা। মাটির ল্যাম্পশেডের দাম ৩০০-৭০০ । বিভিন্ন রকম মাটির খেলনার দাম ২০-৫০ টাকার মধ্যে।