দুনিয়াজুড়েই নারীদের বিউটি স্ট্যান্ডার্ডস নিয়ে আছে অনেক অবাস্তব প্রত্যাশা ও ভুল ধারণা। এর ফলে বহু নারীকে নিজের শারীরিক গড়ন, গায়ের রং এমনকি চেহারার ধরন নিয়েও প্রচুর নিগ্রহের শিকার হতে হয়, কটু কথা শুনতে হয়। বডি শেমিং, বুলিইং তো হরহামেশাই হয়।
তবে এর সবচেয়ে খারাপ রূপটি হচ্ছে নিজের প্রিয় মানুষের কাছ থেকে খারাপ কথা শোনা। মাঝেমধ্যে এসব বিষয় পরিণত হয় রীতিমতো নির্যাতনে। এমন একটি ঘটনা নিয়ে এখন তোলপাড় চলছে নেট দুনিয়ায়। ভারতের উত্তর প্রদেশের এক স্বামী নোরা ফাতেহির মতো ফিগার পেতে স্ত্রীকে রোজ তিন ঘন্টা ওয়ার্ক আউট করাতেন, এই মর্মে অভিযোগ করেছেন তাঁর স্ত্রী। রাখতেন না খাইয়েও। বিয়ের মাত্র কয়েক মাসের মাথায়ই এই নির্যাতন শুরু হয়।
উল্লেখ্য, নোরা ফাতেহি বলিউডভিত্তিক এক মরোক্কান-কানাডিয়ান নৃত্যশিল্পী ও অভিনেত্রী। বিশেষ করে বেলি ডান্সিংয়ের জন্য বিখ্যাত তিনি। আর তাঁর আকর্ষণীয় ফিগার অনেকের কাছেই আরাধ্য। কিন্তু তাঁকে স্ট্যান্ডার্ড ধরে স্ত্রীকে তেমন শারীরিক সৌন্দর্য অর্জন করতে হবে বলে জোর করে নির্যাতনের পর্যায়ে ওয়ার্ক আউট করানো আর উপোস করতে বাধ্য করা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।
শানভি নামের এই নারী এ–ও বলেন যে এই নির্যাতনের ফলে তাঁর গর্ভপাতের মতো করুণ পরিণতি হয়েছে। গাজিয়াবাদ অঞ্চলে ঘটে যাওয়া এই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে স্ত্রী শানভির অভিযোগ অনুযায়ী তদন্ত চলছে। দোষী ব্যক্তিকে আইনের আওতায় আনার প্রক্রিয়াও চলছে।
আসলে ঘটনাটিকে অন্য দেশের বা বিচ্ছিন্ন বলে এড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই। বিশ্বজুড়ে যতই বডি পজিটিভিটি আর অন্তর্ভুক্তিমূলক সৌন্দর্যের কথা বলা হোক, বাস্তব চিত্রটি অনেকটা এমনই। একটি নির্দিষ্ট ধরনের শারীরিক বৈশিষ্ট্য বা গাত্রবর্ণ, মুখশ্রী না হলেই নারীকে হেয় প্রতিপন্ন করা হয় আমাদের সমাজে।
এভাবে পরিবারের চাপে বা সামাজিক প্রত্যাশার কাছে হার মেনে নারীরা নিজেদের বিপজ্জনক ওয়েট লস সল্যুশনের দিকে নিয়ে যান। সুস্বাস্থ্যের জন্য ওয়ার্ক আউট আর পরিমিত খাওয়া অবশ্যই ভালো। তবে প্রত্যেক মানুষের শারীরিক গড়ন আলাদা। মেটাবলিজম আর বংশগত ফিচারও। এই ইনক্লুসিভ বিউটি নিয়ে আমাদের আরও বেশি বেশি পজিটিভ জনমত গড়ে তুলতে হবে। উল্লিখিত ঘটনার মতো অপ্রীতিকর ও ক্ষতিকর আচরণের প্রতিবাদ করতে হবে।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া