এক ঘরেই যখন সবকিছু
শেয়ার করুন
ফলো করুন

একটি বড় ঘর। সঙ্গে লাগোয়া একটি বারান্দা। সে ঘরেই আপনার শোবার ও কাজের জায়গা। অতিথি এলে সে ঘরেই ‘বসতে দেব পিঁড়ে’। আর খাবার জায়গাটা আঁটসাঁট রান্নাঘরেই যেখানে কিনা আধুনিক সব সুযোগ–সুবিধাই আছে। ফ্ল্যাটে একটিই টয়লেট। ঠিক ধরেছেন। হাল আমলের স্টুডিও অ্যাপার্টমেন্টের কথাই বলছি। এই অ্যাপার্টমেন্ট ২৫০ বর্গফুট থেকে ১০০০ বর্গফুট পর্যন্ত হতে পারে। নগরজীবনের দ্রুত প্রসারের সঙ্গে সঙ্গে আমাদের দেশেও স্টুডিও অ্যাপার্টমেন্টের চাহিদাও বেড়েই চলেছে দিন দিন।

ষাট থেকে আশির দশক পর্যন্ত এ দেশে স্বতন্ত্র বাড়ির বাইরে কেউ ভাবতেই পারত না। দিন বদলের সঙ্গে সঙ্গে সে জায়গা দখল করে নিল মাল্টি ফ্যামিলি হাউজিংগুলো। চার কি পাঁচতলা এক ইউনিটের বাড়ি। এদিকে ২০১০–এর পর থেকে খুব দ্রুতই আমাদের আর্থসামাজিক অবস্থার পরিবর্তন হতে থাকে।

বিজ্ঞাপন

আজকাল এ দেশে অনেকেই চাকরি বা পড়াশোনার সুবাদে একা থাকছেন। থাকার জন্য তাঁদের দরকার আরামদায়ক ও সুবিধাজনক ফ্ল্যাট, যা হবে তাঁদের আয়ত্তের মধ্যে। এসব দিক বিবেচনায় স্টুডিও অ্যাপার্টমেন্টের চাহিদা দিন দিন বেড়েই চলেছে আমাদের দেশে। স্টুডিও অ্যাপার্টমেন্ট বলতে বলতে বোঝায় একই ঘরের মধ্যে একটি বাসস্থানের সব প্রয়োজনীয় সুবিধা থাকা।

এখন এ দেশে স্টুডিও অ্যাপার্টমেন্টের ভোক্তা নেহাত কম নয়। ঢাকা বা অন্যান্য বিভাগীয় শহরে যাঁরা চাকরি, ব্যবসা বা পড়াশোনা করছেন, তাঁদের যেমন পছন্দের তালিকার শীর্ষে আছে আবাসনের এ বিশেষ ধরনটি, তেমনিই স্বামী-স্ত্রীর ছোট পরিবারেরও প্রথম পছন্দ থাকে এমন একটি ফ্ল্যাট। আবার এ দেশে অনেক বিদেশি নাগরিক কাজের উদ্দেশ্যে আসেন। পাঁচতারকা হোটেলের রুমে উচ্চমূল্যের ভাড়া দিয়ে দিনের পর দিন থাকার চাইতে তাঁরা স্টুডিও অ্যাপার্টমেন্টই বেছে নেন।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা শহরের অভিজাত এলাকায় বিলাসবহুল ফ্ল্যাটের পাশাপাশি গড়ে উঠছে আকারে ছোট এমন ফ্ল্যাটগুলোও। যেগুলোর আয়তন ২৫০ বর্গফুট থেকে শুরু করে ৬৫০ বর্গফুট পর্যন্ত হতে পারে। একটি ২৫০ বর্গফুটের অ্যাপার্টমেন্ট কিনতে খরচ পড়বে ৩০ লাখ টাকা, আয়তন বাড়াবার সঙ্গে সঙ্গে খরচটাও বাড়বে।

ঢাকা ও সারা দেশের বিভিন্ন অঞ্চল, বিশেষ করে পর্যটন অঞ্চলগুলোতে এ ধরনের অ্যাপার্টমেন্ট বেশ উপযোগী। কক্সবাজার, সিলেট ইত্যাদি অঞ্চলে পর্যটক ও আন্তর্জাতিক সংস্থার চাকুরেদের জন্য স্টুডিও অ্যাপার্টমেন্ট এক প্রয়োজনের নাম। ঢাকা শহরে বর্তমানে ধানমন্ডি, গুলশান, বনানী, বসুন্ধরা ও উত্তরায় কিছু সংখ্যক স্টুডিও অ্যাপার্টমেন্ট তৈরি হয়েছে। আসবাবপত্রসহ অর্থাৎ ফার্নিশড ফ্ল্যাটই এ ক্ষেত্রে পছন্দের শীর্ষে।

এখন দেখার বিষয়, বাংলাদেশের জন্য সম্পূর্ণ নতুন এ আবাসন কতটা সফল হইয়ে উঠতে পারে। তবে আমাদের চাকরি ক্ষেত্র, আর্থসামাজিক অবস্থা ও অন্যান্য আনুষঙ্গিক বিষয় বিবেচনায় রেখে আশা করা যাচ্ছে, খুব শিগগির এ ধরনের আবাসনে নাগরিকরা অভ্যস্ত হয়ে উঠবে।

প্রকাশ: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১৩: ৫৩
বিজ্ঞাপন