বিশ্ব পরিবেশ দিবস: ঘরে-বাইরে পরিবেশ ভালো রাখবে এ গাছগুলো
শেয়ার করুন
ফলো করুন

‘গাছ লাগান পরিবেশ বাঁচান’ খুব প্রচলিত স্লোগান। কিন্তু কোন গাছ কোন পরিবেশে আসলে উপকারী, তা আমরা অনেকেই জানি না। আজ বিশ্ব পরিবেশ দিবসে ঘরে-বাইরে কোন কোন গাছ রোপণ করলে তা পরিবেশ ভালো রাখবে, সেসব তথ্য জেনে নেওয়া যাক।

মানিপ্ল্যান্ট

ঘরোয়া উদ্ভিদ হিসেবে মানিপ্ল্যান্ট খুবই প্রচলিত ও জনপ্রিয়। বাসায় বা অফিসের ডেস্কে এই গাছ হরহামেশাই দেখা যায়। এর রক্ষণাবেক্ষণেও খুব বেশি পরিশ্রমও করতে হয় না। সামান্য যত্ন পেলেই লতানো গাছটি তরতর করে বেড়ে ওঠে। ঘরের বাতাস শুদ্ধ রাখতে এই গাছ বিশেষ সহায়ক। গাছটি রাতে অক্সিজেন দেয় ও বায়ুকে পরিশুদ্ধ করে।

স্নেকপ্ল্যান্ট

স্নেকপ্ল্যান্ট লিলি গোত্রের একটি বিশেষ ইনডোর বা ঘরোয়া উদ্ভিদ। একে মাদার-ইন-ল’স টাং বা শাশুড়ির জিব নামেও ডাকা হয়। গাছটি বাড়ির এমন জায়গায় রাখতে হবে, যেখানে হালকা আর্দ্রতা আছে। এই উদ্ভিদ অনেক ক্ষতিকর পদার্থ শোষণ ও বায়ু পরিশোধন করে থাকে। নাসার একটি গবেষণায় দেখা গেছে, এ গাছ চারপাশের বাতাস থেকে ফরমালডিহাইড, নাইট্রোজেন অক্সাইড, জাইলিন, বেনজিনের মতো টক্সিন অপসারণ করে বাতাসকে বিশুদ্ধ করে। অনেক সময় স্নেকপ্ল্যান্ট বাতাসে আর্দ্রতা নিঃসরণ করে অ্যালার্জিবাহী কণার পরিমাণ কমিয়ে দেয়। এই গাছ সিক বিল্ডিং সিনড্রোমের জন্য দায়ী বিষাক্ত উপাদানগুলো ফিল্টার করে বায়ু বিশোধক হিসেবে কাজ করে।

বিজ্ঞাপন

অ্যালোভেরা

অ্যালোভেরার আরেক নাম ঘৃতকুমারী। এই উদ্ভিদে অনেক ঔষধি গুণাগুণ রয়েছে। পাশাপাশি ত্বক ও চুল ভালো রাখতেও এর জুড়ি মেলা ভার। এটি দারুণ একটি ইনডোর প্ল্যান্ট বা ঘরোয়া উদ্ভিদ। অ্যালোভেরা বাতাস পরিশোধন ও ঘর ঠান্ডা করার জন্য আদর্শ গাছ। গাছটি বাড়তে খুব বেশি পানি ও সূর্যের আলোর প্রয়োজন হয় না। এই গাছ বাতাসে থাকা ফরমালডিহাইড, বেনজিন ও কার্বন মনোঅক্সাইড অপসারণ করে।

তুলসী

ঔষধি গাছ হিসেবে তুলসী বেশ জনপ্রিয়। গাছটি সামান্য সূর্যের আলোতেই বেড়ে উঠতে পারে। এটি মশা, পোকামাকড় দূর করে এবং বাতাসে অক্সিজেনের পরিমাণ বাড়িয়ে তোলে। এ ছাড়া এটি বাতাস থেকে অনেক ক্ষতিকারক রাসায়নিক ও ব্যাকটেরিয়া পরিষ্কার করে।

স্পাইডার প্ল্যান্ট

স্পাইডার প্ল্যান্ট এমন একটি উদ্ভিদ, যা বায়ু বিশোধকের মতো কাজ করে। এই উদ্ভিদ বাতাস থেকে জাইলিন, বেনজিন, ফরমালডিহাইড এবং কার্বন মনোঅক্সাইডের মতো ক্ষতিকারক উপাদানগুলো ফিল্টার বা পরিশোধন করে। এই গাছের খুব একটা পরিচর্যার দরকার হয় না।

বিজ্ঞাপন

নিমগাছ

যদি ঘরের আঙিনায় একটি গাছ লাগানোরও সুযোগ থাকে, তবে সেটা অবশ্যই নিমগাছ হলে ভালো। নিমগাছ পরিবেশগতভাবে খুবই উপকারী। এটি খুব বেশি মাত্রার দূষণ সহ্য করতে পারে এবং শুষ্ক মৌসুমে পাতা পড়ে গেলেও তাড়াতাড়ি নতুন পাতা চলে আসে। নিমগাছের পাতা তুলনামূলকভাবে বেশি পরিমাণে সিসা শোষণ করে। ধূলিকণা, কার্বন ডাই-অক্সাইড, সালফার অক্সাইড এবং নাইট্রোজেনের মতো দূষক শোষণ করার ক্ষমতা নিমগাছের রয়েছে। নিমের কার্বন ডাই-অক্সাইড লেভেল ঠিক করার ক্ষমতা অন্যান্য গাছের তুলনায় তুলনামূলকভাবে বেশি।

নিমগাছের পাতার উপরিভাগ কার্বন ডাই-অক্সাইড বিশুদ্ধ করার জন্য একটি ভালো বিকল্প হিসেবে কাজ করে এবং অন্যান্য দূষণ সৃষ্টিকারী উপাদানগুলোর বিরুদ্ধে প্রতিরক্ষা দেওয়ার কাজ করে। বিশেষ করে সালফার ডাই-অক্সাইড। একটি পরিপূর্ণ নিমগাছ প্রায় ১০ টন শীতাতপ নিয়ন্ত্রকের সমপরিমাণ ঠান্ডা রাখে তার চারপাশের বাতাসকে।

তথ্যসূত্র: বোল্ড স্কাই ও উদ্ভিদ বিজ্ঞান ক্লাব ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

ছবি: পেকজেলসডটকম ও ইনস্টাগ্রাম

প্রকাশ: ০৫ জুন ২০২৪, ১১: ৩৮
বিজ্ঞাপন