দৃষ্টিনন্দন থিমে বইমেলার সাজসজ্জা: পর্ব ১
শেয়ার করুন
ফলো করুন

চলছে অমর একুশে বইমেলা ২০২৪-এর দ্বিতীয় সপ্তাহ। মেট্রোরেলের জন্য পাঠকদের সমাগম বেশি হবে, এই ধারণাকে সত্য করে দিয়ে জমে উঠেছে মেলা। কেউ ঘুরে দেখছেন, কেউ বই কিনছেন, কেউবা ছবি তুলছেন। প্রতিদিনই বইমেলার নান্দনিক স্টল-প্যাভিলিয়নগুলোয় তরুণ-তরুণীদের উপচে পড়া ভিড় চোখে পড়ছে। পরনে শাড়ি, হাতে কাচের চুড়ি ও মাথায় ফুল গুঁজে বাঙালি সাজে সেজে ছবি তুলছেন তরুণীরা। পাঞ্জাবি পরা তরুণদের সংখ্যাও কম নয়। বই হাতে নানা ভঙ্গিমায় ছবি তুলছেন তাঁরা। একটু অন্য রকম প্যাভিলিয়নগুলোয় ভিড় আরও বেশি। মুন্সিগঞ্জের বিখ্যাত কাঠের বাড়ি, জুমঘর, শীতলপাটি, জামদানি ও রিকশা পেইন্টের থিমে সাজানো হয়েছে বিভিন্ন প্যাভিলিয়ন। দৃষ্টিনন্দন এই প্যাভিলিয়নগুলো প্রশংসা কুড়াচ্ছে সবার।

অন্যপ্রকাশ

গত বছর ডিসেম্বরে ইউনেসকো কর্তৃক অপরিমেয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের স্বীকৃতি পেয়েছে রিকশাচিত্র। সেই গৌরবকে উদ্‌যাপন করতে কলকাতা বইমেলার বাংলাদেশ প্যাভিলিয়নটি সাজানো হয়েছে রিকশা মোটিফে। দেশের বইমেলায়ও কীভাবে এই শিল্পকে উপস্থাপন করা যায়, সেই ভাবনা থেকেই নিজের প্যাভিলিয়নটি রিকশা মোটিফে করতে চেয়েছেন অন্যপ্রকাশের প্রকাশক মাজহারুল ইসলাম। নকশা করেছেন স্থপতি রসি তাসবির। রিকশাচিত্রের উজ্জ্বল রঙে সজ্জিত হয়েছে অন্যপ্রকাশ প্যাভিলিয়নের দেয়াল।

অন্যপ্রকাশ মূলত হুমায়ূন আহমেদের বইয়ের জন্য বেশি পরিচিত। সাদাকালো শহরে হলুদ হিমু, নীল রূপা ও রঙিন রিকশা, একটু উঁচুতেই হুমায়ূন আহমেদের ছবি—এভাবেই সেই পরিচিতি উঠে এসেছে প্যাভিলিয়নের পিলারগুলোয়। বাইরের দিকে রিকশার হুডের মতো কাঠের ফ্রেম করে তাতে ডিজিটাল প্রিন্টের রিকশাচিত্র দিয়ে ছাউনি করা হয়েছে। হুমায়ূন আহমেদ, হিমু-রূপা ও রিকশাচিত্র সব বয়সীদের কাছেই আবেগের। তাই ছবি তোলার ভিড় কমছেই না অন্যপ্রকাশের সামনে থেকে।

বিজ্ঞাপন

কবি প্রকাশনী

বই ভালোবাসেন কিন্তু সব্যসাচী হাজরাকে চেনেন না, এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। ধ্রুপদি সিরিজের বইগুলো রীতিমতো হইচই ফেলে দিয়েছে। চোখজুড়ানো মিনিমাল সব নকশায় সাজানো প্রচ্ছদ। তাঁর সেই মিনিমাল নকশাতেই ডিজাইন করা হয়েছে কবি প্রকাশনীর প্যাভিলিয়ন। ভেতরের দিকের কালো ছাদে পোলকা ডটের প্যাটার্ন তৈরি করেছে সাদা লাইটগুলো। ভাষার মাস মানেই যে সাদা ও কালো রঙের একটা থিম ভাসে চোখে, সেই থিমে করা এ প্যাভিলিয়নটি দূর থেকে নজর কাড়ছে সবার। এই প্রকাশনীর বইয়ের প্রচ্ছদগুলোও বেশ প্রশংসনীয়। প্রতিটি প্রচ্ছদেই বাংলা একেকটা অক্ষর। কোনটিতে অ বা ক, কোনটিতে দে, কোনটিতে শে। এমন প্রচ্ছদের সারি সারি সাজানো বইগুলো অদ্ভুতভাবে আকর্ষণ করে সাহিত্যপ্রেমীদের। যাঁরা ছবি তুলতে এসেছেন, তাঁদেরও।

বিজ্ঞাপন

নিমফিয়া

নান্দনিক প্যাভিলিয়ন সাজিয়ে প্রশংসা কুড়াচ্ছে নিমফিয়া পাবলিকেশনও। জামদানির জ্যামিতিক প্যাটার্নে সাজানো হয়েছে এই প্যাভিলিয়ন। শুধু নকশা নয়, রং যে কত গুরুত্বপূর্ণ, তা বুঝতে পারা যায় নিমফিয়া প্রকাশনীর এই কাজ দেখলে। কালো ও হলুদ রঙের জামদানি প্যাটার্ন সহজেই নজর কাড়ছে মেলায় আসা বইপ্রেমীদের।

বিকেলের কন্যা-সুন্দর আলোয় এই হলুদ কারুকাজের সামনে লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে ছবি তুলছেন সবাই। নিমফিয়া তাদের সূচনাকাল থেকেই আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বাংলাদেশ, বাংলাদেশের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকে তুলে ধরতে কাজ করে যাচ্ছে। তারই ধারাবাহিকতায় ‘ট্র্যাডিশনাল জামদানি’ শিরোনামে চন্দ্র শেখর সাহা সম্পাদিত একটি বই এই মেলায় আসবে নিমফিয়া থেকে। তাই এই প্রকাশনীর ক্রিয়েটিভ হেড আনিসুজ্জামান জামদানি প্যাটার্নে ডিজাইন করেছেন এই প্যাভিলিয়ন।

ছবি: কানিজ ফাতেমা

প্রকাশ: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৮: ০০
বিজ্ঞাপন