এখনকার পৃথিবী দ্রুতগতির ও প্রতিযোগিতামূলক। দীর্ঘসময় ধরে স্ট্রেসফুল কাজ করছে সবাই। আর উন্নত প্রযুক্তির বদলৌতে শারীরিক পরিশ্রমও কম হচ্ছে। ফলে আরাম ও ঘুমের পরিমাণ কমছে প্রতিনিয়ত। এ দিকে সারা রাত ওয়েব সিরিজ দেখা, গেইমিং, সোশ্যাল মিডিয়া স্ক্রলিং ঘুমের স্বাভাবিক চক্রকে ব্যাহত করেছে। ফার্নিচার প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান 'ওয়েকফিট' নিয়মিত স্লিপ ইন্টার্নশিপের আয়োজন করে থাকে। ২২ বছরের ঊর্ধ্বে যাঁদের বয়স, তাঁরা সবাই আবেদন করতে পারবেন এই প্রোগ্রামের জন্য।
স্লিপ ইন্টার্নশিপের এবার ছিল তৃতীয় আয়োজন। এ বছরের ইন্টার্নশিপ প্রোগ্রামের জন্য নির্বাচিত করা হয় ১২ জনকে। সবাইকে পেছনে ফেলে ২০২৪–এর চ্যাম্পিয়ন হন সায়েশ্বরী পাতিল। তিনি পেশায় একজন ব্যাংকার।
আয়োজনটিতে অংশগ্রহণকারীদের উৎসাহিত করা হয় প্রতিরাতে আট থেকে ৯ ঘণ্টা ঘুমাতে। এমন ব্যক্তিদের এই প্রোগ্রামে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়, যারা ঘুমাতে চাইলেও সারা দিনের নানা কাজের চাপে ঘুমাতে পারেন না। শিক্ষানবিশদের ২০ মিনিট পাওয়ার ন্যাপ নিতেও উৎসাহিত করা হয়।
ভালো ঘুমের জন্য 'ওয়েকফিট' স্লিপ ইন্টার্নদের উন্নতমানের ম্যাট্রেসের ব্যবস্থা করে থাকে। আর স্লিপ ট্র্যাকার দিয়ে তাঁদের ঘুমের কোয়ালিটি পর্যবেক্ষণ করা হয় নিয়মিত। এ ছাড়াও এ বিষয়ে দক্ষ ব্যক্তিদের দিয়ে অংশগ্রহণকারীদের ওয়ার্কশপ করানো হয়। এ পর্যন্ত তিন সিজনে ওয়েকফিট স্লিপ ইন্টার্নশিপ প্রোগ্রাম এক মিলিয়নের বেশি আবেদনকারী পেয়েছে। যাঁদের মধ্যে ৫১ জন শিক্ষানবিশ হিসেবে সুযোগ পেয়েছেন। আর নির্বাচিত ব্যক্তিদেরকে পুরস্কার হিসেবে দেওয়া হবে প্রায় ৯০ লাখ টাকা।
ওয়েকফিটের প্রধান মার্কেটিং অফিসার কুনাল দুবে জানান, ৫০ শতাংশ ভারতীয় দীর্ঘ সময় কাজের পর ঘুমাতে যান। শারীরিক কসরতের কোন জায়গা নেই এখানে। ফলে ঘুমানোর পরও ক্লান্ত লাগে। তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের স্লিপ ইন্টার্নশিপ প্রোগ্রাম আনন্দের মাধ্যমে ভারতীয়দের পর্যাপ্ত ঘুমানোর অভ্যাস তৈরি করে দিতে চায়। প্রেরণা জোগাতে তাঁদের আর্থিক প্রণোদনাও দেয়া হয়। আমরা চাই, মানুষ অন্তত রাতের বেলা ডিভাইস থেকে দূরে থাকুক এবং দ্রুত ঘুমানোর অভ্যাস করুক'।
সায়েশ্বরী জানান, ‘করোনার পর থেকে আমার ঘুমের রুটিন পরিবর্তন হতে থাকে এবং অডিটর হিসেবে সারা দিনের কাজ আমার নিদ্রা-চক্রকে ব্যাহত করে'।
ইন্সটাগ্রামে নিজের বিজয়ী হওয়ার ছবি শেয়ার করে সায়েশ্বরী লেখেন, ‘অফিসিয়ালি আমি একজন স্লিপ চ্যাম্পিয়ন। এমন চমৎকার সুযোগ পেয়ে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি'।
অভিনব এই উদ্যোগ দেখে এক বন্ধুকে নিয়ে মজার ছলেই আবেদন করেছিলেন সায়েশ্বরী। সেই বন্ধু নির্বাচিত না হলেও তিনি সুযোগ পান প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের। আর শেষে জিতেও নেন স্লিপ চ্যাম্পিয়ন খেতাব। সঙ্গে পুরস্কার হিসেবে পান প্রায় ১৩ লাখ টাকা।
স্লিপ ইন্টার্নশিপ প্রোগ্রাম নিয়ে তিনি বলেন, ‘এই অভিজ্ঞতা আমাকে শিখিয়েছে কীভাবে নিয়ম মেনে ঘুমাতে হয়। স্লিপ স্কোরে ভালো করার একটা চাপ যদিও ছিল। কিন্তু বলতে হয়, আমার ঘুম ভালো হয়েছে। পুরোটা সময় আমি শুধু শান্ত থাকার চেষ্টা করেছি'।
ছবি:সায়েশ্বরীর ইনস্টাগ্রাম প্রোফাইল