কর্মক্ষেত্রে আত্মবিশ্বাসী হতে হলে
শেয়ার করুন
ফলো করুন

কর্মক্ষেত্রে মানসিক চাপ বর্তমান পৃথিবীতে এক বড় সমস্যা। প্রবল প্রতিযোগিতাপূর্ণ কর্মক্ষেত্রে ‘সারভাইভাল অব দ্য ফিটেস্ট’ বা সবচেয়ে যোগ্য ব্যক্তি হিসেবে নিজেকে তৈরি ও প্রমাণ করে টিকে থাকা আর ওপরে ওঠার লড়াই চলছে প্রতিনিয়ত। কিন্তু এ চাপকে জয় করে আত্মবিশ্বাসী না হয়ে উঠলে কর্মক্ষেত্রে উন্নতি করা কঠিন। তাই তো এ বিষয়ে ক্যারিয়ারবিশেষজ্ঞ ও সফল পেশাজীবীদের মূল্যবান পরামর্শ সবার কাছে আরাধ্য। এমন কিছু ক্যারিয়ার টিপস জেনে নেওয়া যেতে পারে।

প্রশ্ন করার অভ্যাস গড়ে তোলা

চাকরি নতুন হোক বা পুরোনো, সবাই সব সময় সবকিছু না–ও জানতে পারেন। এ জন্য অনেকেই নিরাপত্তাহীনতায় ভোগেন। অথচ অসম্পূর্ণ তথ্য জানার ফলে আত্মবিশ্বাস ধীরে ধীরে তলানিতে এসে ঠেকে। কিন্তু শেখার কোনোই শেষ নেই। শেখার মধ্যে কোনো গ্লানিও নেই। ব্যাপারটি মাথায় রেখে অজানা বিষয় সম্পর্কে প্রশ্ন করার মানসিকতা গড়ে তুলতে হবে।

বিজ্ঞাপন

কৌতূহলী থাকা

ইন্টারেস্ট বা কৌতূহল থাকলে যেকোনো বিষয়ে স্বতঃস্ফূর্ত প্রশ্ন করা সম্ভব। আর তার উত্তর খুঁজতে গিয়ে আপনা–আপনিই বেড়ে যাবে জ্ঞান ও দক্ষতা। এ জন্য গতানুগতিক কাজগুলো না করে নতুন কিছু করার চেষ্টা করতে হবে। প্রথমেই সব কাজ নির্ভুল না হলেও আখেরে তা আত্মবিশ্বাস বাড়াবে।

কৌতূহল থাকলে যেকোনো বিষয়ে জানা যায়
কৌতূহল থাকলে যেকোনো বিষয়ে জানা যায়

নিজের ভুল মেনে নেওয়া

ইংরেজিতে একটি প্রবাদ আছে, ‘নো ওয়ান ইজ পারফেক্ট।’ সবাই কমবেশি ভুল করে। তবে এটাও ঠিক, পরবর্তীকালে একই ভুল এড়ানোর চেষ্টা ও নিজের ভুল শুধরে নেওয়ার মানসিকতা থাকতে হবে। ভুল হলে ভেঙে না পড়ে সেটা স্বীকার করে ঠিক কী ভুল হয়েছে এবং কীভাবে কাজটি সঠিকভাবে করতে হয়, সেটা শিখতে হবে।

বিজ্ঞাপন

সমমনা সহকর্মীদের সঙ্গে মেশা

দিনের বড় একটি সময় আমরা কর্মক্ষেত্রে কাটাই। তাই এমন সহকর্মীদের সঙ্গে মেশা উচিত, যাঁরা আমাদের ভালো কাজে সমর্থন করেন। প্রতিকূল সময়ে পাশে থাকেন। তাঁদের পরামর্শ আমাদের কাজের ক্ষেত্রে আরও দক্ষ ও আত্মবিশ্বাসী করে তোলে। এমন সমমনা ও সহানুভূতিশীল সহকর্মীদের সঙ্গে মেশা উচিত। নেতিবাচক ও ঈর্ষাকাতর সহকর্মীদের সঙ্গে নিরাপদ দূরত্ব রেখে নিজের কাজে ফোকাস করাই বুদ্ধিমানের কাজ হবে।

সমমনা ও সহানুভূতিশীল সহকর্মীদের সঙ্গে মেশা উচিত
সমমনা ও সহানুভূতিশীল সহকর্মীদের সঙ্গে মেশা উচিত

সব অবস্থায় ভালো থাকার চেষ্টা করা

আমরা অনেক সময় ভালো থাকি না কিংবা ইচ্ছা হয় না কাজ করতে। মনে হয়, সবকিছু কেমন নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। নিজেকে জোর করে হলেও ভালো রাখার সব চেষ্টা করতে হবে। পছন্দের পোশাক পরা, কাজ থেকে সামান্য বিরতি নিয়ে গান শুনতে শুনতে এক কাপ কফি পান করা বা পছন্দের মানুষের সঙ্গে কথোপকথন—ভালো থাকার আছে নানা উপায়। না চাইলেও হাসিমুখে থাকতে হবে। মাঝেমধ্যে ইচ্ছা না করলেও নিজের ভালো থাকার জন্য ইতিবাচক কাজের অভ্যাস করতে হবে।

নিজের ওপর বিশ্বাস রাখা

ব্যক্তিগত লক্ষ্য ও প্রত্যাশা সম্পর্কে নিজের কাছে সৎ থাকতে হবে। যদি মনে হয়, এ চাকরিতে নিজের প্রতিভা বা সক্ষমতার প্রতি সুবিচার হচ্ছে না বা চাকরিটি ক্যারিয়ারের জন্য সঠিক পথ দেখাচ্ছে না, তবে কীভাবে পরিস্থিতি পরিবর্তন করা যায়, তা নিয়ে ভাবতে হবে। প্রয়োজনে বসের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে। নয়তো খুঁজতে হবে নতুন চাকরি।

নিজের ওপর বিশ্বাস রাখতে হবে
নিজের ওপর বিশ্বাস রাখতে হবে

নিজের অর্জন উদ্‌যাপন করা

হীনম্মন্যতা খুব ভয়াবহ ব্যাপার। এর ফলে নিজের ক্যারিয়ার তলিয়ে যেতে পারে। তাই নিজের কাজকে ছোট করে দেখা যাবে না। যে কাজই করা হোক, তা মন দিয়ে ও ভালোবেসে করা উচিত। শুধু অপারগতা নিয়ে না ভেবে নিজের অর্জন উদ্‌যাপন করতে হবে। কর্মক্ষেত্রে নিজের সাফল্যকে স্বীকার করলে এবং নিজেকে পুরস্কৃত করলে তা আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে সঙ্গে দেবে সামনে এগোনোর শক্তি।

তথ্যসূত্র: ফোর্বস, দ্য মিউজ এবং টপরিজিউমেডটকম

প্রকাশ: ০১ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০৪: ৫৬
বিজ্ঞাপন