বিশ্ব ইমোজি দিবস: যেভাবে মনের কথা বলে ইমোজি
শেয়ার করুন
ফলো করুন

প্রেমালাপ থেকে শুরু করে অফিসের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কোনো কথোপকথন আজকাল টেক্সট মেসেজেই সেরে ফেলা যায় অনায়াসে। আর সেই মেসেজে কোনো ইমোজি না থাকলে অনেক সময় কেমন এক অসম্পূর্ণতা রয়ে যায়। আবার সঠিক পরিস্থিতি ও সময় উপযোগী ইমোজি ব্যবহার করাও গুরুত্বপূর্ণ। এদিকে ভুল ইমোজি ব্যবহারে হতে পারে ভুল বোঝাবুঝির মতো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা।

এখনকার কিশোর, তরুণেরা অনেকেই মা-বাবার একমাত্র সন্তান। অনেকটা সময় তাদের বন্ধুদের সঙ্গেই কেটে যায়। কখনো একসঙ্গে এক টেবিলে বসে আড্ডা, আবার কখনো অনলাইনে। অনলাইন আড্ডায় সহজে, স্বল্প সময়ে মনের ভাব প্রকাশের এক জনপ্রিয় মাধ্যম ইমোজি। ইমোজির সাহায্যে মনের ভাব খুব সুন্দর করে বোঝানো যায়।

আজকাল সব মানুষই অনেক ব্যস্ত। সময়ের বড় অভাব সবার। সব মিলিয়ে কাছের মানুষের সঙ্গে ভালোবাসা আদান-প্রদানের সুন্দর একটি উপায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম। এর অনেক নেতিবাচক দিকের কথাও আমাদের সবার জানা। কিন্তু প্রতিটি বিষয়েরই ইতিবাচক ও নেতিবাচক দুটি দিক আছে। একে ইতিবাচক দিকে পরিচালিত করে জীবনে, সম্পর্কে ইতিবাচক প্রভাব বজায় রাখার ক্ষমতা আমাদের হাতেই আছে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেক তথ্য থাকে, যা সঠিক নয়। অথবা কিছু মানুষ এর নেতিবাচক ব্যবহারে অভ্যস্ত। কেউ হয়তো নিজের বিষয়ে অসত্য তথ্য দিয়ে অন্যদের বিভ্রান্ত করতে পারে বা অন্যের মনে কষ্ট দিতে পারে। কিন্তু আমরা কতটুকু গ্রহণ করব, তার নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা মানুষের নিজের হাতে।

বিজ্ঞাপন

আজকাল যোগাযোগের অভাবে হারিয়ে যাওয়া অনেক আত্মীয় ও বন্ধুদের আমরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে খুব সহজে খুঁজে পাই। কে কেমন আছে, সবার জীবনের পরিবর্তনের খবর আমরা জানতে পারি। এমনকি কারও মৃত্যুর খবরও আমরা এই মাধ্যমেই সবচেয়ে আগে পাই। আমাদের পরিচিত মানুষগুলোকে জীবনে জড়িয়ে রাখতে এই মাধ্যমের কাছে আমরা ঋণী। তাহলে ভালো দিকের বিবেচনায় এর অবদান আমাদের জীবনে অনেক।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাবের আদান-প্রদানের এক অনন্য উপায় ইমোজি। মানুষ বিভিন্নভাবে তার মনের ভাব প্রকাশ করে। কখনো কথা বলে প্রকাশ করে, কখনো শারীরিক ভঙ্গিমায়। আবার কখনো লেখার মাধ্যমে বা ছবি এঁকে ইত্যাদি। কথা আর লেখার একটা সীমাবদ্ধতা হলো অপর পক্ষকে আমার ভাষা বা বুলি জানতে হবে। কিন্তু শারীরিক ভাষা ও ছবির ভাষার ক্ষেত্রে দেশ-কাল-পাত্র ভেদে আলাদা কোনো রূপ নেই। সেই ছবির ভাষাই ইমোজি। এর ব্যবহারে মনের ভাব নির্দিষ্ট মাত্রা অনুযায়ী যেমন প্রকাশিত হতে পারে, তেমনি এর বিস্তার পৃথিবীময়।

বিজ্ঞাপন

আমার ভাষা বাংলা কিন্তু আমি অন্য ভাষার যে কোন মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ ও মনের ভাব প্রকাশ করতে পারব এই ইমোজি দিয়ে। আজ আমি খুব খুশি কিন্তু কতটা খুশি তার মাত্রা অনুযায়ী ইমোজি আছে। রাগ লাগছে, ঘুম পাচ্ছে, অবাক হলাম এমনকি নির্লিপ্ততার প্রকাশ—সবই আছে ইমোজিতে।

এই আবেগ প্রকাশের ধরনের জন্যই মানুষ অন্য প্রাণী থেকে আলাদা। মানুষ রেগে যায়, দুঃখ পায়, খুশি হয়, অবাক হয়। কত ধরনের যে অনুভূতি আছে! আবার এর মাত্রা একেক সময় একেক রকম। কে কীভাবে নিজেকে উপস্থাপন করবে, তার ওপর আবেগের গভীরতা নির্ভর করে। ইমোজিতে সেই গভীরতার উপাত্তগুলো দেওয়া আছে। মানুষের অনুভূতির বিভিন্ন গল্পগুলোর সাক্ষী হয়ে আছে এই ইমোজি।

আজকাল কিশোর বয়সের ছেলেমেয়েরা খুব বন্ধুবৎসল হয়। সব জায়গায় ইন্টারনেটের সহজলভ্যতার কারণে অনলাইনে সব সময়ই তারা একে অপরের সঙ্গে সংযুক্ত থাকে। পড়ালেখা থেকে শুরু করে যেকোনো পরিকল্পনায় তারা বন্ধুদের যুক্ত করতে পছন্দ করে। হয়তো কোনো একজন বন্ধুর জন্মদিনের সারপ্রাইজ পার্টির পরিকল্পনা চলছে। একেক বন্ধু বিভিন্ন কাজে বিভিন্ন জায়গায় ব্যস্ত। কিন্তু সবার ইচ্ছা বা ভাবনা জানা দরকার। এ রকম অনেক সময় খুব তাড়াহুড়া করে কিছু সিদ্ধান্ত সহজ উপায়ে দিতে সাহায্য করে গ্রুপ মেসেজ। আর তাতে ইমোজির ব্যবহার থাকবেই।

এদিকে হয়তো কেউ জরুরি একটা মিটিংয়ে আছে। এই সময়ে কোনো দরকারি মেসেজ আদান-প্রদানের পুরো প্রক্রিয়াটি ইমোজির মাধ্যমে করা সম্ভব। ব্যস্ত এই জীবনে দ্রুত কার্যকরভাবে মনের ভাবের অর্থপূর্ণ প্রকাশ হতে পারে একমাত্র ইমোজি দ্বারা।ইমোজি যেমন আমাদের জীবনটাকে সহজ করেছে, তেমনি জীবনকে বর্তমান পরিস্থিতির নিরিখে ভারসাম্য বজায় রেখে আরও বৈচিত্র্যময় করে তুলেছে।

ছবি: পেকজেলসডটকম

প্রকাশ: ১৭ জুলাই ২০২৪, ০৫: ০০
বিজ্ঞাপন