প্লাস্টিকের অতি ক্ষুদ্র অংশগুলোকেই বলা হয় মাইক্রোপ্লাস্টিক। প্লাস্টিকের ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে অজানা কেউ নয়। তা সত্ত্বেও আধুনিকায়নের ফলে বর্তমানে পুরো বিশ্বেই প্লাস্টিকের ব্যবহার বেড়ে চলেছে, যা পরিবেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। এমনকি এগুলো আমাদের খাবার, স্কিনকেয়ার সামগ্রীসহ নানা প্রসাধনীতেও মিশে যাচ্ছে। এই মাইক্রোপ্লাস্টিক স্বাস্থ্যহানির কারণ হচ্ছে। আমরা আক্রান্ত হচ্ছি নিত্যনতুন অসুখে। এ বিষয়ে সচেতন হয়েই প্লাস্টিক ব্যবহার করতে হবে বা এর ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। একটু সচেতন হলেই মাইক্রোপ্লাস্টিকের হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যেতে পারে।
অনেকেই ট্যাপ কিংবা টিউবওয়েলের পানি সরাসরি পান করেন। এটা মোটেও ঠিক নয়। কারণ, প্রায় সময়ই ট্যাপ ও টিউবওয়েলের পানিতে মাইক্রোপ্লাস্টিক পাওয়া যায়। তাই পানি পান করার আগে অবশ্যই ফিল্টার করে নিতে হবে। তাহলে পানিতে মাইক্রোপ্লাস্টিক থাকার সম্ভাবনা কমে আসবে।
বর্তমানে এই জিনিসটি মেনে চলা অত্যন্ত জরুরি। অনেকেই সহজলভ্য এবং সস্তা হওয়ার কারণে প্লাস্টিকের পাত্রে খাবার রাখেন। প্লাস্টিকের এসব পাত্রে দীর্ঘদিন খাবার রাখা হলে প্লাস্টিকের কিছু অংশ খাবারে চলে আসে, যা মারাত্মক ক্ষতিকর। কিন্তু ধাতব, কাচ বা চীনামিটর পাত্রে খাবার সংরক্ষণ করলে এই আশঙ্কা থাকে না। এগুলো দামে একটু বেশি হলেও বেশ দীর্ঘস্থায়ী।
বর্তমানে ওয়ান টাইম প্লাস্টিকের পণ্য ব্যবহার অনেক বেড়ে গেছে। ওয়ান টাইম ব্যাগ, প্লেট, চামচ, সিপার, স্ট্র, পানির বোতল ব্যবহার এখন স্বাভাবিক ঘটনায় পরিণত হলেও ভয়াবহ ক্ষতির কারণ হচ্ছে। তাই এগুলো এড়িয়ে চলা আবশ্যক। এসবের বদলে ব্যবহার করা যেতে পারে পাট কিংবা কাপড়ের ব্যাগ। খাবারের পাত্র হিসেবে ব্যবহার করা যায় কাঠ, মাটি কিংবা বাঁশের তৈরি তৈজসপত্র।
অনেকেই সামুদ্রিক মাছ অনেক পছন্দ করেন। এমনকি এগুলো বেশ স্বাস্থ্যকরও। কিন্তু বর্তমানে সমুদ্রে প্লাস্টিকের পরিমাণ ভয়াবহভাবে বেড়ে চলেছে। ফলে সামুদ্রিক মাছ এগুলোকে খাবার হিসেবে গ্রহণ করতে শুরু করায় তাদের শরীরের মিশে যাচ্ছে। আমরা এসব মাছ খাবার হিসেবে গ্রহণ করায়, অজান্তেই মাইক্রোপ্লাস্টিক আমাদের শরীরে প্রবেশ করছে। ফলে সৃষ্টি হচ্ছে ভয়াবহ সব রোগের।
বর্তমানে খুব কম মানুষকেই পাওয়া যাবে, যাঁরা স্কিনকেয়ার কিংবা কোনো প্রসাধনী ব্যবহার করেন না। এগুলো ব্যবহার করা যে খারাপ, তা কিন্তু নয়। তবে এসব প্রোডাক্ট কোন কোন উপাদানে তৈরি, তা দেখে ব্যবহার করা অত্যন্ত জরুরি। অনেক স্কিনকেয়ার কিংবা প্রসাধনীতে ব্যবহার করা হয় মাইক্রোবিডস, যা প্লাস্টিকের ক্ষুদ্র অংশ। এগুলো মানবশরীরের জন্য ভয়াবহ। তাই স্কিনকেয়ারের উপাদান সম্পর্কে সতর্ক থাকা উচিত। সবচেয়ে নিরাপদ হলো বায়োডিগ্রেডেবল প্যাকেজিংয়ের প্রোডাক্ট ব্যবহার করা।
ছবি: পেকজেলসডটকম