নারীদের চেয়ে দুই ডেসিবল কানে কম শোনেন পুরুষেরা, দেখুন কী বলছে নতুন গবেষণা
শেয়ার করুন
ফলো করুন

আমরা প্রায়ই শুনি, নারীরা বলেন যে তাঁর পুরুষ সঙ্গীটি তিনি যা বলেন কিছুই ঠিক করে শোনেন না। আসলে পুরুষ সত্যিই কানে কম শোনে। আর নারীরা অন্ত দুই ডেসিবল বেশি শোনেন পুরুষদের চেয়ে। নতুন এক অবাক করা গবেষণায় এসব তথ্য উঠে এসেছে।

কানে কম শোনেন পুরুষেরা
কানে কম শোনেন পুরুষেরা

ফ্রান্সের সুপরচিত গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর বায়োডাইভার্সিটি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টালের তরফ থেকে এই স্টাডিটি করা হয়েছে। ১৩টি দেশের ৪৫০ জন মানুষের ওপর এই গবেষণা করা হয়। এর উদ্দেশ্য ছিল শ্রবণক্ষমতায় লিঙ্গভিত্তিক কোনো পার্থক্য রয়েছে কিনা আর থাকলেও সেটি কোথা থেকে উদ্ভূত তা জানার চেষ্টা করা। ফলাফলে পাওয়া গেছে গড়ে নারীদের শ্রবণশক্তি পুরুষদের চেয়ে প্রায় দুই ডেসিবেল বেশি।

বিজ্ঞাপন

সবচেয়ে মজার বিষয় হলো শহুরে, গ্রামীণ, পাহাড়ি এমনকি বনাঞ্চলের মানুষদের মধ্যেও একই ফলাফল পরিলক্ষিত হয়েছে। অর্থাৎ, পরিবেশভেদে শ্রবণের পার্থক্য থাকলেও সবসময় পুরুষদের তুলনায় নারীদের শ্রবণশক্তিই বেশি।  কিছু কিছু জনগোষ্ঠীতে নারীদের কানের সংবেদনশীলতা পুরুষদের তুলনায় ছয় কিলোহার্টজ পর্যন্ত বেশি দেখা গেছে।  

সব অবস্থাতেই নারীরা কানে বেশি ভালো শোনেন
সব অবস্থাতেই নারীরা কানে বেশি ভালো শোনেন

গবেষণার সহলেখক ব্রিটিশ অধ্যাপক টোরি কিং বলেন, আমরা অনেক অবাক হয়েছি যখন দেখলাম যে, আমরা যে জনসংখ্যার ওপরই গবেষণা করেছি সব ক্ষেত্রেই নারীদের শ্রবণক্ষমতা গড়ে দুই ডেসিবেল বেশি সংবেদনশীল।

বিজ্ঞাপন

কানের একটি বিশেষ অংশ যার নাম কক্লিয়া। এটা দেখতে শাঁখার মতো আর তরলে পূর্ণ থাকে। কক্লিয়া শব্দের কম্পন অনুভব করে আর তা স্নায়ুর মাধ্যমে মস্তিষ্কে পাঠায়, যার ফলে আমরা শব্দ শুনতে পাই।

কানের ভেতরে গোলাপি রঙ দিয়ে ককলিয়া দেখানো হয়েছে
কানের ভেতরে গোলাপি রঙ দিয়ে ককলিয়া দেখানো হয়েছে

গবেষকরা মূলত কক্লিয়ার সংবেদনশীলতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে এই গবেষণা করেছিলেন।  আর তারা ভেবেছিলেন, বয়স এই সংবেদনশীলতার তারতম্যের প্রধান কারণ। কিন্তু ফলাফলে দেখা যায়, আসলে লিঙ্গ বা জেন্ডারই শ্রবণশক্তির কমবেশিতে বেশি প্রভাব ফেলে। আর নারীরা গড়ে পুরুষদের চেয়ে প্রায় দুই ডেসিবেল বেশি সংবেদনশীলভাবে শব্দ শুনতে পান। তবে নারীরা কেন পুরুষদের তুলনায় বেশি শুনতে পান, তা এখনও স্পষ্ট নয়। গবেষকরা ধারণা করছেন এটি গর্ভাবস্থায় হরমোনের পার্থক্য অথবা কানের গঠনের সূক্ষ্ম ভিন্নতার কারণে হতে পারে। তবে এই বেশি শোনার ক্ষমতা সব সময় ভালো এমনটাও নয়। কারণ অতিরিক্ত শব্দের প্রভাব ঘুমের ব্যাঘাত ঘটাতে পারে এবং বিভিন্ন শারীরিক সমস্যার সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেয়।

গবেষক দলের একজন অধ্যাপক বলছেন, সংবেদনশীল শ্রবণশক্তি সবসময় আশীর্বাদ নয়, বরং বিরক্তির কারণও হতে পারে। এই গবেষণার মাধ্যমে বোঝা যায়, নারী-পুরুষের শরীর গঠনের সূক্ষ্ম পার্থক্য এমনকি পরিবেশের বৈচিত্র্যও আমাদের শ্রবণশক্তিকে আলাদা করে তোলে।

সূত্র: আর্থ ডট কম, নিউ ইয়ার পোস্ট

ছবি: পেকজেলস ও ইন্সটাগ্রাম

প্রকাশ: ১৮ এপ্রিল ২০২৫, ০৩: ৩৭
বিজ্ঞাপন