কাঁঠালের ব্যাপারে যে ১০টি চমকপ্রদ তথ্য আপনি নাও জানতে পারেন
শেয়ার করুন
ফলো করুন

৪ জুলাই কাঁঠাল দিবস। আমাদের জাতীয় ফল কাঁঠালের জানা-অজানা আর অবাক করা কিছু তথ্য দেখে নেওয়া যাক একনজরে।

বিজ্ঞাপন

কাঁঠাল আমাদের জাতীয় ফল৷ চিরচেনা এ ফলটিকে আমের মতো দাম না দিলেও তা আমাদের জীবনের সঙ্গে জুড়ে আছে অবিচ্ছেদ্যভাবে। গ্রামবাংলায় এই দিনে যুগে যুগে সাধারণ মানুষের পেট ভরাচ্ছে, পুষ্টি জোগাচ্ছে কাঁঠাল। তবে খুব চেনা হলেও কাঁঠালের ব্যাপারে সবকিছু হয়তো আমাদের জানা নেই। কাঁঠাল নিয়ে এমন ১০টি তথ্য জেনে নেওয়া যাক এবার সবিস্তারে।

বিজ্ঞাপন

কাঁঠাল দেশি, কাঁঠাল বিদেশিও

কাঁঠাল কিন্তু শুধু বাংলাদেশেই জন্মায় না, আমাদের মতো আবহাওয়া ও ভূমিরূপ যেখানে আছে, সেসব দেশেই প্রচুর কাঁঠাল হয়। পর্তুগিজ শব্দ জাকা থেকে এসেছে এর ইংরেজি নাম জ্যাকফ্রুট। সেই ১৫৬৩ সালে গার্সিয়া দে অর্টা নামের একজন প্রকৃতিবিদ এই জ্যাকফ্রুট শব্দটি প্রথম ব্যবহার করেন। তবে জানা যায়, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াতেই প্রথম কাঁঠাল খাওয়ার প্রচলন হয় মানুষের মধ্যে।

পিরীতি কাঁঠালের আঠা

কখনো চাইলেও ভুলতে না পারা প্রেমকে কাঁঠালের আঠার সঙ্গে তুলনা করা হয়। আসলেই কাঁঠালের আঠা খুবই নাছোড়বান্দা। তাইতো হাতে সর্ষের তেল মেখে কাঁঠাল ভাঙতে হয়। আবার অসাবধান হলে গল্পের কাবুলিওয়ালার মতো কাঁঠালের আঠা লেগে যাওয়া দাড়ি–গোঁফ কামিয়ে অস্বস্তিকর অবস্থা হতে পারে। এই আঠা আসলে ল্যাটেক্স ধরনের। শুধু ফলে নয়, গাছের কাণ্ড থেকেও পাওয়া যায় আঠা। এটি প্রাকৃতিক রেজিন বানাতে ব্যবহার করা যায়৷

জলাতঙ্ক আছে কাঁঠাল গাছের

পানি জমলেই গোড়া পচে কাঁঠাল গাছ মরে যায়। এভাবে বন্যায় কত যে কাঁঠাল গাছের অকাল মৃত্যু ঘটে! ১৯৮৮ সালের সেই বন্যায় বাংলাদেশের অসংখ্য কাঁঠাল গাছ মরে গিয়েছিল। পানি দাঁড়ায় না এমন মাটিতে ভালো হয় এই গাছ। কাঁঠাল বাগানের পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা তাই সঠিক হতে হবে। কিন্তু একেবারে খটখটে মাটিতেও ভালো ফলন হয় না।

বসতে দেব কাঁঠাল কাঠের পিঁড়ে


শুধু পিঁড়ে নয়, কাঁঠাল কাঠ দিয়ে সব আসবাবপত্রই ভালো হয়। যুগ যুগ ধরে আমাদের দেশে কাঁঠাল কাঠ ব্যবহার হয়ে আসছে৷ বলা হয়, এই কাঠে সহজে ঘুণে ধরে না। তবে তার জন্য প্রথমেই ভালোভাবে সিজনিং করে নিতে হয়। বিভিন্ন দেশে কাঠের ছাদ ও মেঝে তৈরি, এমনকি বাদ্যযন্ত্র বানাতেও কাঁঠাল কাঠের কদর রয়েছে।

কাঁঠালের বিচিও অনন্য সুখাদ্য

অনেকে কাঁঠাল দেখে নাক সিটকালেও কাঁঠালের বিচিতে কারও মানা নেই। বৃষ্টির দিনে শুকনা খোলায় টেলে খেতে যেমন মজা, তেমনি কাঁঠাল বিচি দিয়ে বানানো যায় ভর্তা, তরকারি থেকে শুরু করে হালুয়া পর্যন্ত। কাঁঠাল বিচিতে আমিষ, বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন ও মিনারেলস আছে প্রচুর।

একের মধ্যে অনেক ফল—কাঁঠাল

কাঁঠাল আসলে গুচ্ছ প্রজাতির ফল। উদ্ভিদবিজ্ঞান বলে, একটি গুচ্ছ আকারে সাজানো প্রতিটি ফুলের থেকে একগুচ্ছ ফল হয় এখানে। আর ঢাকা থাকে তা একই আবরণে। প্রতিটি আলাদা আলাদা ফলকে কোষ বা কোয়া বলি আমরা। বড় কাঁঠালে ১০০–এর বেশি কোয়া থাকতে পারে।

চার ফলের স্বাদ একই ফলে

জৈব রাসায়নিক গবেষণায় কাঁঠাল নিয়ে পাওয়া গেছে এক চমকপ্রদ তথ্য। আপেল, আনারস, আম আর কলার সম্মিলিত স্বাদ আর ফ্লেভার থাকে কাঁঠালে।

দুইটি দেশের জাতীয় ফল কাঁঠাল

বাংলাদেশের জাতীয় ফল কাঁঠাল, সে কথা তো আমরা সবাই জানি। এদিকে শ্রীলঙ্কায়ও এই কাঁঠালই জাতীয় ফল। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াতেই আসলে কাঁঠাল বেশি জনপ্রিয়।

কাঁঠাল গাছ থেকে তৈরি হয় ভেজিটেবল ডাই


কাঁঠালের কাঠ প্রাকৃতিকভাবে কমলা বর্ণের। এ থেকে হলদে ভেজিটেবল ডাই তৈরি হয়। শত শত বছর আগে থেকেই এশিয়ার এ অঞ্চলে এভাবে এই রং বানানো হয়। এই রঙের রয়েছে ধর্মীয় গুরুত্ব। কারণ, কাঁঠাল গাছ থেকে বানানো রং দিয়েই ঐতিহ্যগতভাবে রাঙানো হয় বৌদ্ধ ভিক্ষুদের কমলা-হলদে কাপড়।

সবচেয়ে বড় ফল এই কাঁঠাল

পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ফল এই কাঁঠাল। এ যাবৎ সবচেয়ে বড় কাঁঠাল পাওয়া গেছে শ্রীলঙ্কায়। ওজন ছিল ৫৫ কেজি।

ছবি: সেলিনা শিল্পী, রাদিয়াত রেজা ও সৈয়দা মিলা

প্রকাশ: ০৪ জুলাই ২০২৩, ১৩: ২১
বিজ্ঞাপন