বিদেশে কোথাও ছুটি কাটাতে প্লেনের টিকিট কাটতে চাচ্ছেন? অথবা হতে পারে না চিকিৎসা, বাইরে পড়তে যাওয়ার মতো অন্য কোনো প্রয়োজন। মনে রাখবেন, রাউন্ড ট্রিপ ফ্লাইট সব সময়ই সাশ্রয়ী। এমন সব টিপস মনে রাখলে বেশ সস্তায়ই আপনি ফ্লাইটের টিকিট কাটতে পারবেন।
বিদেশ যাওয়ার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পূর্বশর্ত হচ্ছে প্লেন বা বিমানের টিকিট কেনা। অধিকাংশ ক্ষেত্রে যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম এবং সবচেয়ে কম সময় লাগে বলে বিদেশগামী মানুষ ভ্রমণের জন্য আকাশপথ বেছে নেন। কিন্তু প্রায়ই বিমান ভাড়ার চড়া মূল্যের কারণে বাজেট সচেতন ভ্রমণকারীদের অভিজ্ঞতাটি খুব একটা সুখকর হয় না। সস্তায় ফ্লাইট টিকিট কেনার কিছু কৌশল বা পরীক্ষিত টিপস জেনে নিন এবারে।
সপ্তাহের মাঝের দিনগুলো সস্তায় টিকিট কেনার জন্য ভালো। বেশির ভাগ এয়ারলাইনস মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাতটায় তাদের টিকিটের মূল্য আপডেট করে। পরিসংখ্যান বলছে, অধিকাংশ মানুষ শুক্র, শনি বা রবিবার টিকিটের দাম অনুসন্ধান করেন। তাই মধ্য সপ্তাহে টিকিট কিনলে দাম তুলনামূলক কম পাওয়া যায়।
ভ্রমণের তারিখের অন্তত ২১ দিন আগে টিকিট কিনুন। এয়ারলাইনসগুলো সাধারণত প্রথম কয়েকজন যাত্রীকে সবচেয়ে সস্তা টিকিট দেয়। তবে খুব আগে বুক করলেও বেশি দাম দিতে হতে পারে। এয়ারলাইনসগুলো সাধারণত ফ্লাইটের সর্বোচ্চ ১১ মাস আগপর্যন্ত টিকিট বের করে। যত আগে টিকিট সংগ্রহ করা যায়, ততই ভালো। তবে এর সর্বনিম্ন সময়সীমা হলো ভ্রমণের তারিখের ন্যূনতম এক থেকে তিন মাস।
পৃথিবীর বড় শহরগুলোতে প্রসিদ্ধ বিমানবন্দরের পাশাপাশি ছোট ছোট বা অপেক্ষাকৃত কম জনাকীর্ণ বিমানবন্দর থাকে। মূল গন্তব্যের আশপাশে ল্যান্ডিংয়ের জন্য এই স্থানগুলোকে বেছে নিলে খানিকটা সাশ্রয় হতে পারে। বড় এয়ারপোর্টের পরিবর্তে কাছাকাছি ছোট এয়ারপোর্টে নামার চেষ্টা করুন। যেমন লন্ডনে যাওয়ার সময় হিথরোর পরিবর্তে অন্য এয়ারপোর্টে নামুন এবং ট্রেনে লন্ডনে যান। এতে খরচ কমে।
ফ্লাইট টিকিট খোঁজার সময় আপনার ব্রাউজারের কুকিজ পরিষ্কার করুন। না হলে এয়ারলাইনসের বুকিং সিস্টেম আপনার আগের অনুসন্ধান ধরে দাম বাড়িয়ে দিতে পারে।
একটি ওয়েবসাইটের ওপর নির্ভর না করে বিভিন্ন সাইটে টিকিটের দাম তুলনা করুন। প্রায়ই দেখা যায়, একই এয়ারলাইনসের টিকিট অন্য ওয়েবসাইটে সস্তা পাওয়া যায়। বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্ম, যেমন বুকিংডটকম, মাইজার্নিডটকম ইত্যাদি সাইট থেকে একই গন্তব্যের বিভিন্ন এয়ারলাইনসের টিকিটের দামের তুলনা করা যায়। বুকিংয়ের আগে এসব সাইট চেক করে নিলে স্বল্প মূল্যে টিকিট ক্রয় করা সম্ভব।
রাউন্ড ট্রিপ ফ্লাইট সব সময়ই সাশ্রয়ী। এ কৌশলটি যাত্রীদের একাধিক এয়ারলাইনস, রুট বা প্ল্যাটফর্ম নিয়ে গবেষণার বিড়ম্বনা থেকে মুক্তি দিতে পারে।
মঙ্গল বা বুধবার ফ্লাইট বুকিং তো বটেই, ভ্রমণের জন্যও আদর্শ। এ দিনগুলোতে ভ্রমণকারী তুলনামূলক কম থাকে। তাই টিকিটের দামও কম থাকে। জরিপ বলে, সপ্তাহের মঙ্গল, বুধ ও বৃহস্পতিবারে টিকিট তুলনামূলক কম থাকে। মঙ্গলবারে ভ্রমণ করলে প্রায়ই অন্তত ১০ শতাংশ খরচ কম হয়।
আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের ক্ষেত্রে ১১-১২ সপ্তাহ আগে টিকিটের সেরা অফার পাওয়া যায়। এই সময়ে নিয়মিত টিকিটের দাম চেক করুন।
এভাবে কিছু টিপস আর নিয়ম মেনে টিকিট বুকিং করে সহজেই নিতে পারেন সাশ্রয়ী ভ্রমণের স্বাদ। সাশ্রয়ী মূল্যে বিমানের টিকিট কাটার এই কৌশলগুলো অর্থসংকটকে পাশ কাটিয়ে বিদেশ গমনের পথকে সুগম করতে পারে। বিভিন্ন এয়ারলাইনসের ভাড়া নিয়ে তুলনামূলক গবেষণার ভিত্তিতে ডিসকাউন্ট নিয়ে অগ্রিম টিকিট বুকিং দেওয়াই উৎকৃষ্ট পন্থা। ইন্টারনেট ব্রাউজারের ইনকগনিটো মোড ব্যবহার এবং এয়ার টিকিট প্ল্যাটফর্মগুলোতে কম মূল্যের অ্যালার্ট সেট করে রাখা যথেষ্ট সহায়ক। এখানে ভ্রমণের সময়টাও একটি মুখ্য বিষয়। কেননা অফ পিক মৌসুমগুলোতে বিমান ভাড়া অনেকটা কমে আসে। তাই তারিখ নির্ধারণের ক্ষেত্রে একটু আপস করার প্রয়োজন পড়ে। সর্বোপরি, টেকঅফ থেকে শুরু করে ট্রানজিট এবং ল্যান্ডিং পর্যন্ত পুরো যাত্রাপথটা যাচাই করলে স্বল্প মূল্যের বিকল্পগুলো খুঁজে পাওয়া সম্ভব হয়।
ছবি: পেকজেলসডটকম