বর্ষা এল। আকাশের রঙে এল পালাবদলের ডাক। বৃষ্টি তো হবেই বর্ষায়। কিন্তু মেঘলা আকাশের রূপ কি কোনো অংশে কম! আবার লোকে বলে, মানুষের মন নাকি আকাশের রঙের সঙ্গে বদলায়। তাই তো মেঘমেদুর আকাশের ধূসর ছোপছাপে মন খারাপের গল্প আঁকি আমরা।
তবে রোদের চোখরাঙানি নেই বলে মেঘলা দিনগুলো ঘুরে বেড়ানোর জন্য খুবই ভালো। হইহুল্লোড় আর কোলাহল এড়িয়ে বর্ষার শুরুতে মেঘলা দিনে একলা সময় কাটাতেও মন্দ লাগবে না৷
এই মেঘলা দিনে একলা ঘরে থাকে না তো মন।
কাছে যাব কবে পাব ওগো তোমার নিমন্ত্রণ!
জানালার গরাদের ফাঁক দিয়ে আকাশ দেখে সাধ মেটে না এমন সময়। মেঘের ঘনঘটার সাজ অন্তরিক্ষে আনে অন্য মাত্রা। ঈশান কোণে ঝোড়ো হাওয়ার আভাস থাকে কখনো। গাঢ় ধূসর মেঘের গর্জনে ভয়ংকর সুন্দর সেই আকাশের দিকে চেয়ে থেকে কেটে যায় সময়। আবার কখনোবা শুধুই মন কেমন করা মেঘের আয়োজনে পরিপূর্ণ থাকে আকাশ।
জলদ-সাজের দিকে তাকিয়ে মন খারাপ বেড়ে যায় নাকি হালকা হয় মনের মেঘ, সে এক ধাঁধা। একটু একটু রোদের ঝিলিক দেখা যায় কখনো। মেঘের চারদিকে রুপালি রেখায় আশার আলো দেখায় তা। প্রিয়জনকে খুব মনে পড়লে মন ভার হয়। আকাশের মেঘের ভারের সাহচার্যে সে ভার একটু মনে হয় কমে আসে।
আকাশ এত মেঘলা, যেও নাকো একলা
এখুনি নামবে অন্ধকার
ঝড়ের জলতরঙ্গে নাচবে নটি রঙ্গে
ভয় আছে পথ হারাবার।
মেঘলা দিনে একা একা মেঘবিলাসের মাঝে আছে এক আলাদা ভালো লাগা। সঙ্গী হতে পারে প্রিয় বই। অথবা প্রিয় কোনো গান। মেঘলা দিনে একা একা নিজের মতো করে বর্ষা উদ্যাপনে অত সাজের বালাই না থাকলেও হবে। প্রিয় নীল বা সাদা শাড়িটি জড়িয়ে নেওয়া যাক। টিপ আর কাজলই যথেষ্ট সঙ্গে। এলো খোঁপা চলতে পারে৷ নয়তো খোলা চুলে বাতাস খেলতে দেওয়া যায়।
নদী বা লেকের পাড়ে বসে আকাশের নিচে মেঘের সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়। রাস্তায় রিকশায় ঘুরেও মেঘলা দিনের একলা সময়টুকু উপভোগ করা যাবে অনায়াসে। পছন্দের পার্ক বা রাস্তার ধার ঘেঁষে আনমনে পায়ে পায়ে ইচ্ছা করে মিছেমিছি হারিয়ে গেলেও ক্ষতি নেই।
আর না হলে ছাদ বা বারান্দা তো আছেই। শুধু বৃষ্টি নয়, মেঘে মেঘেই বর্ষার শুরুতে মেঘবিলাসী মেঘবালিকার একাকী উদ্যাপন সার্থক হোক।