হয়তো এই ৭ কারণে আপনি এ বছর ধনী হতে পারলেন না
শেয়ার করুন
ফলো করুন

ধনী হতে কে না চায়! নিজের অর্থনৈতিক অবস্থা পরিবর্তন করে ধনী হয়েও যায় অনেকে। এ বছর অর্থাৎ ২০২৫ সালটা এদিক থেকে অনেকেরই ভালো যায় নি। হয়তো বছরের শুরুতে অনেক পরিকল্পনা করেছেন অনেকে কীভাবে গরীব থেকে ধনী হবেন। কিন্তু নানা কারণে বছর শেষে এসে দেখা যাচ্ছে তা আর হলো না। এসব কারণের অনেকগুলো ব্যক্তিগত। আবার কিছু পারিপার্শ্বিক কারণও দায়ী, যেগুলোর ওপর আপনার হাত নেই। চলুন এসব কারণের দিকে একটু নজর দিয়ে দেখা যাক এ থেকে শিক্ষা নিয়ে বা সাবধান হয়ে সামনের বছর ধনী হওয়া যায় কিনা।

আপনি দামী জিনিস কিনে ফেলেন কিছু না ভেবেই। হতে পারে তা শৌখিন ঘড়ি বা নতুন গাড়ি
আপনি দামী জিনিস কিনে ফেলেন কিছু না ভেবেই। হতে পারে তা শৌখিন ঘড়ি বা নতুন গাড়ি

১️. আপনি এমনভাবে টাকা খরচ করেন, যেন আপনি আগেই ধনী

দামী জিনিস কিনতে ভালোই লাগে। নতুন গাড়ি, ব্র্যান্ডের কাপড়, বড় বাড়ি বা বিদেশ ভ্রমণ। বন্ধুরা এসব কিনলে নিজের বেলায় না বলতে আরও কঠিন হয়। মনে হয়, ওরা যদি পারে, আমিও পারব। কিন্তু এটা ভুল ধারণা। পিয়ার প্রেশার বাদ দিয়ে আপনার কেনাকাটার সিদ্ধান্ত নিন আপনার আয় ও লক্ষ্য অনুযায়ী। বন্ধুরা ফেসবুকে ছবি দিয়েছে বলে নয়। দামী জিনিস না কিনলেও, যদি নিয়মিত অপ্রয়োজনীয় জিনিস কেনেন, সেটাও খুব দ্রুত বড় অঙ্ক হয়ে যায়।

বিজ্ঞাপন

২. ক্রেডিট কার্ডে বাকি রাখা

আমরা অনেকেই সামর্থ্যের চেয়ে বেশি খরচ করি এবং ক্রেডিট কার্ডে বকেয়া রাখি। যতদিন আপনি এভাবে আয়ের চেয়ে বেশি খরচ করবেন, ততদিন সম্পদ গড়া সম্ভব নয়। অতিরিক্ত খরচ আর বেশি সুদের ক্রেডিট কার্ড ঋণ। এগুলোই ধনী হওয়ার সবচেয়ে বড় শত্রু। গরিবের মতো খরচ করুন, ধনী হওয়ার সম্ভাবনাই তখন বেশি।

আমরা অনেকেই ক্রেডিট কার্ডে বকেয়া রাখি
আমরা অনেকেই ক্রেডিট কার্ডে বকেয়া রাখি

৩. আপনার কোনো স্পষ্ট পরিকল্পনা নেই

জীবনের লক্ষ্য আর স্বপ্ন পরিষ্কার না হলে ধনী হওয়া শুধু কল্পনা মনে হবে। আর সেটাই সঞ্চয় না করার অজুহাত হয়ে দাঁড়ায়।
অর্থনীতিতে একটা কথা আছে<bha>;</bha> যারা পরিকল্পনা করে না, তারা ব্যর্থ হওয়ারই পরিকল্পনা করে। আর্থিক পরিকল্পনা কঠিন মনে হলেও আসলে সহজ। নিজের লক্ষ্যগুলো ঠিক করুন, লিখে রাখুন এবং নিয়মিত দেখুন। বছরে অন্তত একবার নিজের খরচের অভ্যাসের সঙ্গে লক্ষ্যগুলো মিলিয়ে দেখুন। তাহলেই ধীরে ধীরে সম্পদ বাড়বে।

বিজ্ঞাপন

৪. আপনার জরুরি তহবিল নেই

অন্তত ছয় মাসের খরচের সমান টাকা জরুরি তহবিলে রাখা দরকার। কাজটা কঠিন, তবে বাস্তবতা হলো হঠাৎ গাড়ি বা বাড়ির মেরামত, চিকিৎসা খরচ, চাকরি চলে যাওয়া বা অসুস্থতা—এসব যে কারও জীবনে আসতে পারে। এই সময় যদি আর্থিক সুরক্ষা না থাকে, সমস্যা আরও বড় হয়। তখন ঋণ বাড়তেই থাকে—ধনী হওয়া তো দূরের কথা।

যদি আর্থিক সুরক্ষা না থাকে, সমস্যা আরও বড় হয়
যদি আর্থিক সুরক্ষা না থাকে, সমস্যা আরও বড় হয়

৫. বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত আপনি আবেগ দিয়ে নেন

বন্ধুর কাছ থেকে শোনা কোনো হুজুগে আইডিয়ায় টাকা ঢেলে ধনী হওয়া ভাগ্যের ব্যাপার। অনেকটা লটারি জেতার মতোই। এটা পরিকল্পনা নয়, জুয়া। বিনিয়োগের আগে গবেষণা করুন, কোম্পানির হিসাব দেখুন, বাজার বুঝুন, বা জানেন এমন কারও সঙ্গে কথা বলুন। আবার কেউ কেউ ঝুঁকি নিতে চান না বলে সব টাকা নিরাপদ বিনিয়োগে রাখেন। সমস্যা হলো এগুলোতে লাভ খুব কম হয়, অনেক সময় মূল্যস্ফীতির সঙ্গেও পাল্লা দিতে পারে না। ফলে নিরাপদ থাকতে গিয়ে সম্পদ কমে যায়।

৬. আপনি নিজের পাওনা মেটান না

সঞ্চয়ের আসল কৌশল হলো অটোমেশন। সঞ্চয়কে বিলের মতো ভাবুন, যেন প্রতি মাসে তা করতেই হবে। জরুরি তহবিল ও অবসর সঞ্চয়ে নিয়মিত টাকা রাখুন। মাসে ৫০০ টাকা হলেও শুরু করুন। ছোট অঙ্কই বড় ফল এনে দেয়।

ছোট অঙ্কই বড় ফল এনে দেয়, তাও আমরা শুরু করিনা সঞ্চয়
ছোট অঙ্কই বড় ফল এনে দেয়, তাও আমরা শুরু করিনা সঞ্চয়

৭. আপনি বাবা-মা বা অন্য কারও অপরে ভরসা করছেন

নতুন চাকরি, বেতন বাড়া, ধনী জীবনসঙ্গী, বাবা-মায়ের থেকে পাওয়া উত্তরাধিকার—এগুলোর ওপর ভরসা করে সঞ্চয় পিছিয়ে দিলে চলবে না। জীবনে কিছুই নিশ্চিত নয়। নিজেকে বাঁচানোর দায়িত্ব আপনারই।

এবার ভেবে দেখুন এর মধ্যে কোন কারণটি আপনাকে বেশি বাধাগ্রস্ত করছে। আয় কম হোক, খরচ বেশি হোক বা ঋণ থাকুক—কিছু না কিছু সঞ্চয় সবসময়ই করা যায়। আর এর মাধ্যমেই ধনী হওয়ার পথের শুরু হতে পারে। পরের বছর তা যত আগে শুরু করবেন, তত সহজ হবে।

সূত্র: থিয়ারম্যান ফিন্যানশিয়ালস, ফোর্বস

ছবি: এআই ও পেকজেলস

প্রকাশ: ২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬: ৫৭
বিজ্ঞাপন