জানা যাচ্ছে, মাত্র একজন যাত্রী বেঁচে আছেন আজ ভয়াবহ দুর্ঘটনার কবলে পড়া এয়ার ইন্ডিয়া বোয়িং ৭৮৭ ড্রিমলাইনারটির। ভারতে আজ ঘটে গিয়েছে অত্যন্ত মর্মান্তিক এক প্লেন ক্র্যাশ। ২৪২ জন যাত্রী নিয়ে আহমেদাবাদ বিমানবন্দর থেকে লন্ডনের গ্যাটউইক বিমানবন্দরের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করে প্লেনটি। এরপর তা উড্ডয়নের মাত্র কয়েক মিনিট পরই ভারতের আহমেদাবাদের একটি আবাসিক এলাকায় বিধ্বস্ত হয়।
আর এই প্লেনটি যে ভবনে পতিত হয়েছে সেটি মেডিকেল শিক্ষার্থীদের আবাস। সব মিলিয়ে ভয়াবহ এই দুর্ঘটনায় স্তম্ভিত, শোকার্ত সবাই। জানা যাচ্ছে, দুর্ঘটনার কবলে পড়তে যাওয়ার প্রাক্কালে প্লেনটির ক্যাপ্টেন সুমীত সাবরাওয়াল একটি মে ডে কল (Mayday) ইস্যু করেন যা প্রায়ই বিমান দুর্ঘটনার ভয়াবহ জরুরি নির্দেশক হিসাবে ব্যবহৃত হয়।
আমরা প্রায়ই শুনি প্লেন ক্র্যাশের সম্ভাবনা হলেই ক্যাপ্টেন 'মে ডে' কল করেন। অনেক সিনেমাতেও দেখি। কিন্তু এর অর্থ কী আর তা কীভাবে কাজ করে? জীবনের প্রয়োজনেই আসলে জেনে রাখা উচিত আমাদের এগুলো। কারণ এই যে আজ এতটা ভয়াবহ ইমার্জেন্সি পরিস্থিতিতে পড়বে গুজরাট তথা ভারতবাসী তা কে জানত!
মে ডে কল কী?
১৯২০-এর দশকে ফ্রেডারিক স্ট্যানলি মকফোর্ড, ক্রোয়েডন বিমানবন্দরের রেডিও অফিসার, 'Mayday' শব্দটি তৈরি করেন ফরাসি “m'aider” (আমাকে সাহায্য করুন)-এর এক সর্বজনীন ও ব্যবহারিক রূপ হিসেবে।
১৯২৩ সালে এটি রেডিও যোগাযোগে ব্যাপকভাবে জনপ্রিয় হয়, আর ১৯২৭ সালে বহুলপ্রচলিত জরুরি সংকেত SOS–এর সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে আন্তর্জাতিক জরুরি সংকেত হিসেবে গ্রহণ করা হয়।
পাইলটরা 'Mayday' কল করেন তখনই, যখন তাঁরা বড় বিপদের বা সম্ভাব্য দুর্ঘটনার সম্মুখীন হন যেমন গুরুতর প্রযুক্তিগত ত্রুটি, আগুন, দুর্ঘটনা বা বিমান ও যাত্রীদের জীবনের ঝুঁকি।
মে ডে কল কীভাবে কাজ করেপাইলট যখন মে ডে, মে ডে, মে ডে ঘোষণা করেন, তখন তা একটি অত্যন্ত জরুরি অবস্থার নির্দেশ দেয় এবং বোঝায় যে জীবনের হুমকি আছে। এই সংকেত প্রচারিত হলে, নিয়মিত সব রেডিও যোগাযোগ বন্ধ করে দেওয়া হয় এবং এয়ার ট্র্যাফিক কন্ট্রোল নির্বিশেষে মে ডে কলকেই সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেয়।
এরপর পাইলট দ্রুত কিছু তথ্য দেন। যেমন
বিমানের কল-সাইন
তাদের বর্তমান অবস্থান
জরুরি পরিস্থিতির প্রকৃতি
বিমানে থাকা মানুষের মোট সংখ্যা
বিশেষ কোনো সহায়তা প্রয়োজন কিনা
বিধ্বস্ত এয়ার ইন্ডিয়ার ফ্লাইটের মে ডে কল সম্পর্কে যা জানা গিয়েছে তা হচ্ছে, এয়ার ইন্ডিয়া B787 বিমান VT‑ANB, ফ্লাইট AI‑171 (আহমেদাবাদ থেকে গ্যাটউইক), উড্ডয়নের পরেই বিধ্বস্ত হয়। বিমানে ছিলেন ২৪২ জন। এর মধ্যে ছিলেন ২ জন পাইলট ও ১০ জন কেবিন ক্রু। ক্যাপ্টেন সুমীত সাবরাওয়াল কমান্ডে ছিলেন। বিমান মে ডে কল করলেও এর পর এয়ার ট্র্যাফিক কন্ট্রোলে বা ATC–এর তরফের সব কলের জবাব বন্ধ হয়ে যায়। মুহূর্তেই রানওয়ে 23 থেকে নিচে পড়ে যায় দুর্ভাগ্যে পতিত প্লেনটি আর ঘন কালো ধোঁয়া উঠে যায়। এরপরে সব শেষ। শুধু ধ্বংস আর মৃত্যু।
তথ্য: ইকোনমিক টাইমস
ছবি: ইন্সটাগ্রাম