ঈদুল আজহায় মাংস খাওয়া হবেই। দিন রাত দাওয়াত চলতেই থাকে। থাকে মাংসের নানা পদ। গরু ও খাসির মাংসের মতো লাল মাংস এমনিতেই গুরুপাক। আবার অতিরিক্ত ঝাল-মসলা ও তেলে রান্না করলে তা আরও কষ্টসাধ্য হয় হজম করতে।
তাই বলে কি চুইগোস্ত, মেজবানি মাংস বা নানা রকমের কাবাব খাব না! বরং মাংসের বিভিন্ন মজাদার ডিশের সঙ্গে এমন কিছু খাবার রাখতে হবে, যা রেড মিটের ক্ষতিকর প্রভাব কমাবে বা হজমে সহায়ক হবে। এবারে এ রকমই কিছু খাবারের ব্যাপারে জেনে নেওয়া যাক।
ভিটামিন সির উৎসগুলোর প্রতিনিধিত্বকারী লেবু ছাড়া মাংসের পদগুলো এমনিতেই ভালো লাগে না। ঝাল ঝাল মাংসের ঝোল, মাখা বা ভুনার সঙ্গে লেবু চিপে নিলে স্বাদ বেড়ে যায়। আর লেবু বেশ অম্লধর্মী বলে এটি মাংসের রোয়া নরম করতে পারে। আবার লাল মাংসের আয়রন শরীরে ঠিকঠাকভাবে শোষিত হতে হলেও ভিটামিন সি খুব প্রয়োজন।
পেটের জন্য সামগ্রিকভাবে টক দই খুবই ভালো। তাজা টক দইয়ে থাকে পরিপাকতন্ত্রের জন্য উপকারী ব্যাকটেরিয়া প্রোবায়োটিকস। তাই পুষ্টিবিদেরা বলেন, যেকোনো সময়েই নিয়মিত টক দই খেলে ভালো। হজমে সহায়ক এই টক দই সঙ্গে থাকলে মাংস পরিপাক সহজ হয়। মাংস টক দইয়ে ম্যারিনেট করে রাখলে রোয়া নরম করে তা। এ ছাড়া কোরমা, রেজালা ইত্যাদি পদে তো দই প্রয়োজনীয় উপকরণ। মাংসের পদের সঙ্গে বোরহানি বা রায়তা রাখলে তা রুচিবর্ধক হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে হজম করতে সাহায্য করবে।
অতিরিক্ত লাল মাংস উচ্চ রক্তচাপ, কোলেস্টেরল ও হৃদ্রোগের ঝুঁকি বাড়ায়। তবে কোরবানির সময় চর্বিমুক্ত মাংস গ্রিল করে বা কাবাব বানিয়ে সঙ্গে প্রচুর কাঁচা শাকসবজিসহযোগে সালাদ রাখলে তা কিছুটা ভারসাম্য তৈরি করবে। শসা, লেটুস, কাঁচা পেপে ইত্যাদি সবজি লেবুর রসের ড্রেসিংয়ে মেখে মাংসের সঙ্গে এমনিতেও বেশ লাগে খেতে।
সিরকায় জারানো বা ফার্মেন্ট করা খাবার হজমে সহায়ক। পিকল করা পেঁয়াজ, মরিচ, শসা বা মিক্সড সবজির পিকলস বা সিরকার আচার মাংসের ভারী ভাব কাটায় রসনাতে। আবার কিমচির মতো ফার্মেন্ট করা মুখরোচক খাবারও মাংস হজমে সহায়ক।
যেসব খাবারে আঁশ বেশি, সেগুলো পরিপাকতন্ত্রের জন্য ভালো। কোষ্ঠ পরিষ্কার রাখে খাদ্য আঁশ। বিভিন্ন ধরনের শাকসবজি ও ফলমূল আর হোলগ্রেইন শস্যদানায় আঁশ থাকে। আঁশজাতীয় খাবার না খেয়ে মাংস বেশি খেলে বদহজম, অ্যাসিডিটি, কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে। লাল চাল, লাল আটা রাখা যায় খাদ্যতালিকায়। ওটস বা ছাতুও দারুণ কাজে দেবে।
ছবি: হাল ফ্যাশন ও পেকজেলসডটকম