পুরান ঢাকার ২০ রোজার ইফতার: চাপড়ি আর কচুশাকের ঘন্ট
শেয়ার করুন
ফলো করুন

পুরান ঢাকার খানাখাদ্য বলতে সবাই শুধু বিরিয়ানি আর কাবাবই বোঝেন। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে ব্যাপারটি মোটেও সে রকম নয়। যুগ যুগ ধরে বুড়িগঙ্গার ধারে গড়ে ওঠা এই সুপ্রাচীন শহরের আদি বাসিন্দাদের খাদ্যসংস্কৃতির রয়েছে নিজস্বতা।  ঠিক তেমনই একটি রীতি হচ্ছে ২০ রোজার ইফতারে কচুশাকের ঘন্ট দিয়ে চাপটি পিঠা বা চাপড়ি খাওয়া। এর শুরুটা ঠিক কীভাবে হলো, তা এলাকার বর্ষীয়ান সদস্যরাও সঠিকভাবে বলতে পারেন না। তবে  প্রতিবছর ২০ রোজার সকালেই ঠাটারীবাজার, কাপ্তানবাজারসহ ঢাকার অলিগলিতে কচুর বেশ চড়া দাম হাঁকা হয়, বিক্রিও হয় প্রচুর। এই ঐতিহ্যকে ধরার সামান্য প্রয়াসমাত্র।

উপকরণ

চাপটির জন্য

চালের গুঁড়া দেড় কাপ
মুগডাল বা মটরডাল বাটা আধা কাপ
হলুদগুঁড়া সিকি চা-চামচ
আদাবাটা সিকি চা-চামচ
পেঁয়াজ মিহি কুচি আধা কাপ
কাঁচা মরিচকুচি ২ টেবিল চামচ
ধনেপাতাকুচিৎ
লবণ স্বাদমতো
তেল (প্যানে ব্রাশ করার জন্য)

ঘন্টর জন্য

কচুশাক ১ আঁটি
কচুর ডগা ১টি
লবণ স্বাদমতো
হলুদ আধা চা-চামচ
জিরাবাটা আধা চা-চামচ
আদাবাটা ১ চা-চামচ
পেঁয়াজকুচি ১ কাপ
রসুনকুচি আধা কাপ
তেজপাতা ২টি
চেরা কাঁচা মরিচ ৩টি
তেল ২ টেবিল চামচ

বিজ্ঞাপন

প্রণালি

চাপড়ি

চালের গুঁড়া পানিতে আধা ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখতে হবে। এবারে দুটি আলাদা বোলে চালের গুঁড়া নিতে হবে। সাদা চাপড়ির জন্য একটি বোলে ১ কাপ ময়দায় সামান্য আদাবাটা, অর্ধেক পেঁয়াজ, কাঁচা মরিচ, ধনেপাতাকুচি, লবণ আর পরিমাণমতো পানি দিতে হবে, যাতে ঘন আঠালো গোলা হয়। আরেকটি বোলে ডালবাটা, চালের গুঁড়া, হলুদগুঁড়া, আদাবাটা, বাকি পেঁয়াজ, কাঁচা মরিচ, ধনেপাতা কুচি ও লবণ দিয়ে মেখে নিতে হবে। তাওয়া বা ননস্টিক ফ্রাইপ্যান গরম করে তেল ব্রাশ করে চামচে গোলা নিয়ে তাওয়ায় চ্যাপ্টা চামচের সাহায্যে রুটির মতো গোল করে ছড়িয়ে দিতে হবে। আগে এই কাজে ঝিনুকের খোল ব্যবহার করা হতো।
ঢেকে দুই তিন মিনিট রাখলেই নিচটা মচমচে হয়ে উঠে আসবে খুন্তি বা সিলিকন স্প্যাচুলা (ননস্টিক প্যানের ক্ষেত্রে) দিয়ে তুললেই। এভাবে দুই ধরনের চাপড়ি বানিয়ে নিতে হবে।


কচুশাকের ঘন্ট

কচুর ডগা ও শাক কেটে বেছে ভালো করে ধুয়ে লবণ, হলুদ, আদা ও জিরাবাটা দিয়ে নরম করে সিদ্ধ করে নিতে হবে। পানি টেনে যাবে। এবার কড়াইতে তেল গরম করে রসুন কুচি, চেরা কাঁচা মরিচ, পেঁয়াজ কুচি ও তেজপাতা দিয়ে ভাজতে হবে। লাল হয়ে এলে কচু দিয়ে দিতে হবে। লবণ দিতে হবে প্রয়োজন অনুযায়ী। ভালো করে নেড়ে নেড়ে ভাজতে হবে যাতে একসঙ্গে ঘন্টের মতো মন্ড পাকিয়ে আসে নাড়তে গেলে। এবারে দুই ধরনের চাপড়ি বা চাপটি পিঠার সঙ্গে পরিবেশনের পালা।

বিজ্ঞাপন
প্রকাশ: ৩১ মার্চ ২০২৪, ১৩: ১৫
বিজ্ঞাপন