মিষ্টিপ্রেমীদের কাছে জিলাপি এক প্রিয় নাম। আরাধ্য স্ন্যাকও বলা চলে। জিলাপি যে একেবারে বাঙালি খাবার, তা কিন্তু বলা যাবে না। আমাদের উপমহাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলেই জিলাপির প্রচলন রয়েছে। ধারণা করা হয়, পারস্য খাদ্যসংস্কৃতির প্রভাবেই সেখানকার জুলবিয়া আমাদের এদিকে এসে জিলিপি, জালেবি, জিলাপি ইত্যাদি নামে মন আর পেট দুই-ই জয় করে আসছে জনসাধারণের।
জিলাপি মনে হয় একমাত্র মিষ্টি, যেটিকে স্ট্রিটফুডের মধ্যে গণ্য করা যায়। কারণ, এই জিবে জল আনা মুখরোচক খাবারটির দেখা মেলে পথ চলতে চলতেই। আর জিলাপি ভাজার দৃশ্য দেখা যেমন মনোমুগ্ধকর, তেমনি এর রূপ আর সুবাসও অগ্রাহ্য করা যায় না পথে চলতে গিয়ে। জিলাপি মূলত চাল ও ডালের মিশ্রণ সারা রাত রেখে গাঁজিয়ে সেই গোলা দিয়েই বানানো হয়।
তবে পথের ধারের দোকানে প্রায়ই ময়দা দিয়ে ইনস্ট্যান্ট জিলাপিই তৈরি হয়। আর ঘিয়ের বদলে তেলেই ভাজা হয়। তারপরও পথের ধারের জিলাপির আবেদনই আলাদা। আবার জিলাপির আছে বিভিন্ন ধরন ও আকার। কিছু জিলাপি বানানো হয় মোটা করে, যা রস শুষে নেওয়ার পর টুপটুপে রসাল হয়ে ওঠে।
আবার কিছু জিলাপি দেখতে হয় চিকন আর খেতে মচমচে। এ ছাড়া পুরান ঢাকায় পাওয়া যায় বিশালাকৃতির শাহি জিলাপি। চলুন আজ জেনে নেই এমন এক মজার জিলাপির কথা, যা স্থানীয়ভাবে খুব জনপ্রিয়।
মুসলিম বাজার। মিরপুর ১২-এর বাসস্ট্যান্ড থেকে রিকশা নিলে পাঁচ মিনিটেই পৌঁছে যাওয়া যায় এ বাজারে। বাজারের মোড়ে ছোট্ট এক দোকানে বিক্রি হয় মজাদার জিলাপি। দোকানটির জিলাপি এ এলাকায় বেশ জনপ্রিয়।
এ দোকানে চিকন ও মোটা—দুই ধরনের জিলাপি পাওয়া গেলেও চিকন জিলাপির চাহিদাই বেশি এখানে। লোভনীয় জিলাপিগুলো ভাজা শুরু হয় বিকেলের দিকে। বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত পাবেন এ জিলাপি। প্রতিদিনই খোলে এ দোকান।
দোকানের সামনে গিয়ে দেখা গেল, উপচে পড়া ভিড়। রীতিমতো লাইন দিয়ে কিনছেন সবাই সদ্য বানানো জিলাপি।
জিলাপি তৈরির প্রক্রিয়া দেখতেও কিন্তু বেশ ভালো লাগে। অসম্ভব দ্রুততায় আড়াই প্যাঁচে এ জিলাপি বানাতে যথেষ্ট দক্ষতা প্রয়োজন, তা দেখেই বোঝা যাচ্ছিল। এখানে আপনার সামনেই ডুবোতেলে ভেজে চিনির সিরায় ডুবিয়ে কাগজের ঠোঙায় পরিবেশন করা হবে গরম-গরম জিলাপি।
সাধারণত চিকন জিলাপি খেতে খুব মচমচে হয়ে থাকে, কিন্তু এখানকার জিলাপির বিশেষত্ব হলো, বাইরে যতটা মচমচে ভেতরে ঠিক ততটাই রসাল।
প্রতি কেজি জিলাপির দাম পড়বে ২৮০ টাকা আর ১০০ গ্রাম জিলাপি নিলে তার দাম ৩০ টাকা।
ছবি: সুরাইয়া সরওয়ার