ইফতারে পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী ঘুগনি
শেয়ার করুন
ফলো করুন

রোজার মাসে পুরান ঢাকার বিভিন্ন গলি ও রাস্তায় হরেক রকমের মজাদার ও ঐতিহ্যবাহী ইফতারির পসরা বসে; ঐতিহ্যের অংশ হিসেবে পুরান ঢাকার প্রায় সব জায়গায় ইফতারের সময় মুড়িমাখার সঙ্গে তেহারি, বিভিন্ন রকমের মাংস ও ডিমের কাবাব, চপ, জিলাপি এবং মসলার সঙ্গে অন্যতম উপকরণ হিসেবে খাওয়া হয় ঘুগনি। আবার এমনিতেও খাওয়া হয় এই অনন্য সুখাদ্য। পুরান ঢাকার বিশেষভাবে আদৃত এই খাবার এখন সারা দেশেই জনপ্রিয়।

ঘুগনি সারা বছর ঝালমুড়িওয়ালাদের কাছে পাওয়া গেলেও রমজানের সময় এটা আলাদা গুরুত্ব দিয়ে বিক্রি করা হয় এবং অনেকেই আগ্রহ করে কিনে ঠোঙায় ভরে বাসায় নিয়ে যান। ডাবলি মটরের ডাল, আলু, লবণ বা বিটলবণ, তেজপাতা, জিরা, হলুদ, মরিচ, ধনিয়া গুঁড়া ও বিভিন্ন মসলা দিয়ে কাঠ বা গ্যাসের চুলায় দীর্ঘক্ষণ জ্বাল দিয়ে নরম ও ঘন করার পর ভাজা শুকনো মরিচের গুঁড়াসহ নানা মজাদার মসলাপাতি,পেঁয়াজ-মরিচ কুচি, শসা-টমেটো আর ধনেপাতা দিয়ে পরিবেশিত মজাদার ঘুগনির সঠিক উৎপত্তিস্থল সম্পর্কে অবশ্য জানা যায়নি। তবে ধারণা পাওয়া যায়, ভারতের বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গ, আসাম, বিহার বা ওডিশায় এর উৎপত্তি। এই অঞ্চলগুলোতে সান্ধ্যকালীন নাশতায় ঘুগনি হরহামেশাই খাওয়া হয়। ওডিশা ও বিহারের অনেকে ঘুগনিকে রাগদা বলেন। কলকাতায় বিভিন্নভাবে ঘুগনি পরিবেশিত হয়। তবে খাসি বা মুরগির মাংসের কিমা অথবা টুকরা দিয়ে পরিবেশিত ঘুগনি কলকাতার ট্রেডমার্ক হিসেবে পরিচিত।

বিজ্ঞাপন

ঘুগনির জনপ্রিয়তা পুরান ঢাকার হাজারীবাগ, লালবাগ, পোস্তা, চকবাজার, বংশাল, সূত্রাপুরসহ অন্যান্য জায়গা ছাড়িয়ে বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পৌঁছে গেছে। বিশেষ করে রোজা এলেই এর কদর যেন অন্য উচ্চতায় পৌঁছায়। তবে পথের পাশের দোকান থেকে না কিনে নিজেও বানিয়ে নেওয়া যায় মজাদার ঘুগনি। তাই সঙ্গে দেওয়া হলো সহজে বানানোর প্রণালি।

উপকরণ

ডাবলি মটরের ডাল ৩ কাপ

খাওয়ার সোডা আধা চা-চামচ

পেঁয়াজ কুচি ১টি

তেল ১ টেবিল চামচ

আলু ১টি

লবণ স্বাদমতো

চাট মশলা  ১ টেবিল চামচ

চিলি ফ্লেক্স ১/২ চা-চামচ

হলুদ গুঁড়া ১/৩ চা-চামচ

ধনেপাতা কুচি ১ টেবিল চামচ

প্রণালি

ডাবলি মটরের ডাল ধুয়ে সারা রাত ভিজিয়ে রাখতে হবে। এবার পানিসহ ডাল খাওয়ার সোডা, লবণ ও হলুদ দিয়ে সেদ্ধ করে নিতে হবে। পাশাপাশি আলু সেদ্ধ করে আধা ভাঙা করে নিতে হবে। ডাল সেদ্ধ হয়ে নরম ও ঘন হয়ে এলে আলু দিয়ে আবারও একটু কষিয়ে ১/২ কাপ পানি দিয়ে দিতে হবে। শুকিয়ে এলে ভাজা জিরার গুঁড়া, চটপটির মসলা ও চিলি ফ্লেক্স দিতে হবে। তারপর নামিয়ে নিতে হবে। পছন্দমতো সালাদ ও পেঁয়াজ-কাঁচামরিচ কুচি দিয়ে সাজিয়ে পরিবেশন করতে হবে। ওপরে ভাজা জিরার গুঁড়া ও চিলি ফ্লেক্স ছড়িয়ে দেওয়া যায়।

ছবি: লেখক

বিজ্ঞাপন
প্রকাশ: ২০ মার্চ ২০২৪, ০৩: ১৭
বিজ্ঞাপন