‘মান আর আগের মতো নেই, শুধু শুধু ভিড় ঠেলে যাওয়া’—এমন হতাশা সত্ত্বেও ঠিকই জমে উঠেছে চকবাজারের ইফতার। আর এত কিছুর মধ্যেও জিলাপির রয়েছে আলাদা কদর। প্যাঁচের ধরনেই কিন্তু বৈচিত্র্যময় জিলাপি। সরেজমিনের অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছেন বেনজীর আহমেদ সিদ্দিকী
রোজার মাসে বিভিন্ন প্রসিদ্ধ ও ঐতিহ্যবাহী নাম যেমন আলাউদ্দিন, আনন্দ, ডিসেন্টসহ রাস্তার মোড়ের দোকানগুলোতে পাল্লা দিয়ে ভাজা হচ্ছে হরেক পদের জিলাপি।
জিলাপির প্যাঁচ উন্মোচিত হোক বা না হোক, এর ভেতরের রস আস্বাদনে ভোজনরসিকেরা কিন্তু খুবই আগ্রহী। ইফতারে জিলাপি না হলে কী যেন অপূর্ণ থেকে যায়।
প্যাঁচ যতই থাক, জিলাপিরও আছে নানা বাহার—আকৃতিতে কোনোটা সরু, কোনোটা মাঝারি, কোনোটা গোলগাল মোটা, আবার কোনোটা একেবারেই ছোট, কোনোটা ঢাউস আকৃতির, কোনোটাতে শুধু চিনি আবার কোনোটাতে গুড়, কোনোটা ঘি, কোনোটা ডালডা বা তেল দিয়ে ভাজা।
ছোট্ট রেশমি জিলাপি আর বিশাল শাহি জিলাপি যেন গ্যালিভার ট্রাভেলসের সেই লিলিপুট আর দৈত্যের কথাই মনে করিয়ে দেয়।
জিলাপি বানানো! দেখে তো মনে হচ্ছে ছুমন্তর ছু বললেই জিলাপি তৈরি হয়ে যাবে, কিন্তু ব্যাপারটি আসলে এত সোজা নয়।
গোলা কাপড়ে বেঁধে গরম তেলে হাত দিয়ে ঘোরাও, ভেজে ফেলো, চিনি বা গুড়ের শিরায় চুবাও, ছেঁকে নাও—আরেব্বাস! এই তো হয়ে গেল ঝটপট জিলাপি। আসল জটিলতা কিন্তু এর প্যাঁচেই। সবাই কিন্তু প্যাঁচ কষতে পারে না। প্যাঁচের সৌন্দর্য ফুটিয়ে তুলতে একজন কারিগরের বহু সাধনায় করা নিয়মিত চর্চা ও অধ্যবসায়ের প্রয়োজন পড়ে।
একটু আলাপ জমিয়ে জিলাপির কারিগরদের থেকে জানা গেল, ময়দা আর ডালের গুঁড়া বা বেসন দিয়ে গোলা তৈরি করে কিছুটা ফার্মেন্ট হওয়ার জন্য রেখে দিতে হয়। এরপর এই গোলা বেশ করে ফেটিয়ে এতে পরিমাণমতো লবণ ও বেকিং সোডা দিয়ে আবার ফেটিয়ে তবেই সেই গোলা গরম তেলে ছাড়া হয় বিশেষ কৌশলে। তারপর ভেজে তুলে চিনির শিরায় দেওয়া হয়।